শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র
এক কৃষকের অপমৃত্যু হয়েছে বর্ধমান ২ ব্লকের বড়শুলে। পরিবারের দাবি, আলু ও ধান চাষে ক্ষতির কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। ছিল দেনার চাপও। স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, কী কারণ মৃত্যু হয়েছে খতিয়ে দেখা হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত স্বপন মণ্ডল বড়শুলের অন্নদাপল্লির বাসিন্দা। বুধবার বিষ পান করা অবস্থায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি মারা যান। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে। এ দিন হাসপাতালে দাঁড়িয়ে মৃতের ছেলে অয়ন মণ্ডল বলেন, ‘‘বাবা মূক ও বধির ছিলেন। চাষবাস নিয়েই জীবন চলত তাঁর। নিজের ১২ কাঠা এবং তিন বিঘা জমি ভাগে নিয়ে বাবা আলু চাষ করেন এ বার। কিন্তু আলুতে দাগ থাকায় এবং ফলন কম হওয়ায় দাম মেলেনি। তারপরে ধান চাষেও ক্ষতি হওয়ায় তিনি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন।’’
স্থানীয় চাষি জগদীশ বাইন, সমীর মণ্ডলেরা জানান, ওই এলাকায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলেও আলুর ফলন কম হয়। আলুর উপরে ঘায়ের মতো একটা রোগ হয়। আলুতে দাগ হয়ে যায় এর ফলে। স্বপনের ক্ষেত্রেই একই রকম সমস্যা হওয়ায় দাম মেলেনি, দাবি তাঁদের। মৃতের দাদা শিবুপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘আলুতে দাগ থাকায় কার্যত জলের দরে প্রতি বস্তা বিক্রি করতে হয়। ভাইয়ের সারের দোকানে প্রায় ১১ হাজার, ট্রাক্টরে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টাকা দেনা ছিল বলে এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছি।’’ মৃতের স্ত্রী জয়ন্তী মণ্ডলের দাবি, চাষে দেনার কারণে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন স্বামী। পাওনাদারেরা বাড়িতে এসে তাগাদা দিত। টাকা চাইত। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে অশান্তিও হত। এই সব কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন, দাবি তাঁর।
স্বপনের স্ত্রী এবং দুই ছেলে স্থানীয় জুটমিলে কাজ করেন। এ দিন বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকের আবহ। তাঁরা ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন। বিডিও (সদর ২) সুবর্ণা মজুমদার বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনলাম। কেন এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটল, সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy