অলাভজনক খনিকে ঘুরে দাঁড় করাতে হবে। যদি তা না করা যায় তবে সেই খনি বন্ধ করে দিতে হবে— সম্প্রতি ইসিএলের খনি পরিদর্শনে এসে জানিয়ে গিয়েছেন কয়লা মন্ত্রকের সচিব সুশীল কুমার। আর তার পরেই সোদপুর এরিয়ার কয়েকটি খনি নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন ইসিএলের আধিকারিকেরা। লোকসানে চলা এই খনিগুলিকে কী ভাবে লাভজনক করে তোলা যায়, সে নিয়ে পরিকল্পনা চলছে বলে জানান তাঁরা।
সম্প্রতি খনি পরিদর্শনে এসে কয়লা সচিব সুশীল কুমার ঝাঁঝরায় একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে হাজির থাকা ইসিএলের এক কর্তার দাবি, সেদিন কয়লা সচিব পরিষ্কার জানিয়ে দেন, অলাভজনক খনিগুলিকে দ্রুত ঘুরে দাঁড় করাতে হবে। লোকসান বহন করা সম্ভব নয়। এর পরেই নড়েচড়ে বসেছেন আধিকারিকেরা। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, সোদপুর এরিয়ার মোট ১১টি খনির মধ্যে ৯টিই অলাভজনকের তালিকায়।
সোদপুর এরিয়া সূত্রের খবর, ধেমোমেন পিট ও ধেমোমেন ইনক্লাইন খনি দু’টি খানিকটা ভাল পরিস্থিতিতে আছে। বাকি ন’টি খনির মধ্যে পারবেলিয়ায় দৈনিক টন প্রতি ১৭,১২৬ টাকা, দুবেশ্বরীতে ১০,৬৮৯ টাকা, মাউথডিহিতে ১৮,৬৬৮ টাকা, চিনাকুড়ি ৩ নম্বরে ১১,৮৭১ টাকা, বেজডিতে ১৫,৩০৭ টাকা, মিঠানিতে ১৬,১৯০ টাকা, পাটমোহনায় ১০,৯৮০ টাকা ও নরসমুদায় ৭,২০৮ টাকা করে লোকসান হচ্ছে। চিনাকুড়ি ১ নম্বর খনিগর্ভ জলে ভর্তি থাকায় কয়লা তোলা পুরোপুরি বন্ধ।
সদ্য শেষ হওয়া অর্থবর্ষের এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই খনিকর্তাদের মাথায় হাত পড়েছে। লোকসান কাটিয়ে খনিগুলিকে ঘুঁরে দাঁড় করাতে তৎপর হয়েছেন তাঁরা। সোদপুর এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার সুজিত সরকার বলেন, ‘‘লোকসান মাথায় নিয়েই চলতে হচ্ছে। তবে আমরা একগুচ্ছ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আমরা আশাবাদী।’’ পরিস্থিতি বুঝে ইতিমধ্যে খনি বাঁচানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি।
খনি সূত্রে জানা গিয়েছে, ভূগর্ভে জল ঢুকে উৎপাদন ব্যাহত হওয়া কয়েকটি খনিতে উচ্চক্ষমতার পাম্প বসিয়ে জল তুলে ফেলে কয়লা উত্তোলনের উদ্যোগ হয়েছে। কয়েকটি খনিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কয়লা তোলার পরিকল্পনা হয়েছে। আধিকারিকেরা জানান, সব ক’টি খনিতেই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কর্মী রয়েছেন। বাড়তি কর্মীদের অন্যত্র বদলি করা হলে লোকসান কমানো যাবে।
জিএম সুজিতবাবু জানান, সমাধানসূত্র বের করতে সম্ভাব্য সব দিক নিয়েই আলোচনা চলছে। ইসিএলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এর পরেও যদি খনিগুলি লাভের মুখ না দেখে, তবে বন্ধই করে দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy