বীরভূমের গ্রামে জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। — নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে লাগাতার বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা একাধিক জেলায়। তার উপর দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) পর পর দু’দিন এক লক্ষ কিউসেক করে জল ছেড়েছে। বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমান, ঝাড়গ্রামের গ্রামগুলি এই জলে প্লাবিত হতে পারে। ইতিমধ্যে বাড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন নদীর জলস্তর।
মঙ্গলবার ডিভিসি নতুন করে আরও ১ লক্ষ ১০ হাজার কিউসেক জল ছেড়েছে। মাইথন জলাধার থেকে ছাড়া হয়েছে ৩৫ হাজার কিউসেক জল। পাঞ্চেত জলাধার থেকে ছাড়া হয়েছে ৭৫ হাজার কিউসেক জল। ডিভিসি-র আধিকারিক সঞ্জয় প্রিয়দর্শী বলেন, বরাকর এবং দামোদর উপত্যকায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ঝাড়খণ্ডেও গত কয়েক দিন ধরে অতি ভারী বৃষ্টি চলছে। তাই বাঁধগুলি থেকে জল ছাড়তে হয়েছে।
এর আগে সোমবারেও এক লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছিল ডিভিসি। মাইথন জলাধার থেকে সোমবার ৪৫ হাজার কিউসেক এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৫৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। বৃষ্টি আরও বৃদ্ধি পেলে আরও জল ছাড়তে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন ডিভিসি-র আধিকারিকেরা।
গত দু’দিনে ঝাড়খণ্ড থেকে (পাঞ্চেত এবং মাইথন) দু’লক্ষ কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হয়েছে। মঙ্গলবার দামোদরের সেই জল দুর্গাপুর পৌঁছলে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ডিভিসি ১লক্ষ ৩৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়ে। এতেই পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়াতে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে পুজোর মুখে বন্যা ঠেকাতে আগেভাগেই সতর্ক নবান্ন। বৃষ্টি এবং ডিভিসির জল ছাড়ার কারণে বন্যা হতে পারে পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া এবং হুগলিতে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই সাত জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশনারদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। শীঘ্রই অপেক্ষাকৃত নিচু এবং বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করে সেখানে লাগাতার মাইকে প্রচার চালানো, প্রয়োজনে বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আপাতত রাজ্যে বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা নেই। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, চলতি সপ্তাহে দক্ষিণবঙ্গ জুড়েই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে। ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ইতিমধ্যে একাধিক জেলা প্লাবিত। মালদহের গাজল এবং বামনগোলা ব্লকের বেশ কিছু জায়গায় পুনর্ভবা নদীর জল ঢুকেছে। প্লাবনের আশঙ্কায় রাত জেগে কাটাতে হচ্ছে বামনগোলার কুপাদহ গ্রামের মানুষদের। বৃষ্টিতে পুরুলিয়ার বেশ কয়েকটি জায়গাতেও জনজীবন বিপর্যস্ত হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের কংসাবতী নদীতে জলস্তর বৃদ্ধির ফলে ডুবেছে সাঁকো। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর এবং আমতায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। মুণ্ডেশ্বরীতেও জলের তোড়ে বাঁশের সাঁকো ভেঙে জনজীবন বিপর্যস্ত। বীরভূমে লাভপুর ব্লকের কাঁদরকুলা, জয়চন্দ্রপুর-সহ ১৫টি গ্রামে বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। নদীর জল বাড়তে শুরু করেছে। এর পরে জলস্তর বৃদ্ধি পেলে বাইরের জগতের সঙ্গে সংযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসীরা। কষ্ট করে ঘুরপথে যাতায়াত করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy