সাজাব যতনে: বর্ধমানের মহতাব রোডে প্রতিমা রং করায় ব্যস্ত শিল্পী। ছবি: উদিত সিংহ
পুজোর বিজ্ঞাপনের বিচারে বড়নীলপুর মোড়, জিটি রোড কিংবা আলমগঞ্জের ‘স্থান মাহাত্ম্য’ কতটা, তা বোঝাতে এখন পুরনো ছবিই ভরসা উদ্যোক্তাদের। তাঁদের দাবি, বিগত সময়ের পুজোর ছবি, কত লোক হয়, করোনা-আবহে কত লোক হতে পারে তার আগাম আভাস দিয়ে বিজ্ঞাপনী এজেন্টদের কাছে একের পরে এক মেসেজ পাঠানো হচ্ছে। তার পরেও খরচ কমিয়ে যে বাজেট, তা উঠছে না।
শুক্রবার বর্ধমান শহরের এক পুজো উদ্যোক্তা বলেই ফেলেন, “সমস্ত আড়ম্বর ছেঁটে কোনও রকমে পুজো করার চিন্তাভাবনা করেছিলাম। কিন্তু পুজোর সময় যত এগিয়ে আসছে, নানা রকম খরচ বাড়ছে। গত বছরের ৩৫ লাখের পুজো নেমে এসেছে ছ’লাখ টাকায়। সে টাকার জন্যও বিজ্ঞাপন মিলছে না, স্টল পাওয়া যাচ্ছে না।’’
বাজেটের চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে শহরের অন্য পুজো উদ্যোক্তাদেরও। বর্ধমান শহরে দুর্গাপুজোর ‘হটস্পট’ হিসেবে পরিচিত বড়নীলপুর, আলমগঞ্জ, পুলিশ লাইন, কালীবাড়ি, কেশবগঞ্জ চটি, ময়ূরমহল সর্বত্রই একই রকম বিজ্ঞাপনের জন্যে হাহাকার। পুজো-কর্তারা জানাচ্ছেন, অন্য বছর এ সময়ে প্রস্তুতি শেষ হয়ে যায়। এ বছর বিজ্ঞাপনদাতারা কোনও পাকা কথা দিতে চাইছেন না।
জিটি রোডের একটি পুজো কমিটির কর্তা বলেন, “ভিড় হবে কি না, বিজ্ঞাপনদাতা বুঝতে পারছেন না। যাঁরা বিজ্ঞাপন দিতে চাইছেন, তাঁরাও গত বারের চেয়ে দশ ভাগের এক ভাগ টাকা দিচ্ছেন। অথচ, মানুষের কাছে পৌঁছনোর এটাই অন্যতম বড় সুযোগ।’’ এ বছর এখনও পর্যন্ত বর্ধমান শহরে পুজোর হোর্ডিং বা ‘টিজ়ার’ দেখা যায়নি। উদ্যোক্তাদের একটা বড় অংশের দাবি, শেষ পর্যন্ত কী হবে, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। ফলে পুজোর বিজ্ঞাপন দেওয়ার পরিস্থিতি নেই। ময়ূরমহলের একটি পুজোর কর্তা রাজেন্দ্রপ্রসাদ সেনের দাবি, “গত বছর ২৪টি বিজ্ঞাপনের গেট ছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত বিজ্ঞাপনের গেট মেলেনি। পুজোর বাজেট ক্রমাগত ছেঁটে ছোট করতে হচ্ছে।’’ শহরের অন্যতম বড় বাজেটের পুজো হয় আলমগঞ্জে। সেখানকার কর্তা মণীশ সিংহেরও দাবি, “শেষ মুহূর্তে বিজ্ঞাপনের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ ভরসা হয়ে উঠেছে। গত বছরগুলোর ছবি, কত মানুষ আসেন, এ বার কেমন প্রস্তুতি জানিয়েও বিজ্ঞাপনের গেট মিলছে না।’’ জিটি রোডের ধারে সবুজ সঙ্ঘ, পদ্মশ্রীর কর্তারাও জানান, বিজ্ঞাপনদাতাদের সাহায্য এ বছর সে ভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছর সবুজ সঙ্ঘের ২৫-৩০টি বিজ্ঞাপনের গেট ছিল। এখন সেটা নেমে এসেছে আট-দশটিতে। ওই ক্লাবের এক কর্তার দাবি, “আকারে পুজো ছোট করতে হচ্ছে। মার্চ মাস থেকে ব্যবসার হাল খারাপ। বিজ্ঞাপনদাতাদের জোর দেওয়া যাচ্ছে না।’’
অনেক পুজো কমিটির কাছে রাজ্য সরকারের অনুদানের ৫০ হাজার টাকাটাই ‘অক্সিজেন’। বর্ধমান শহরের ক্লাব সমন্বয় কমিটির সভাপতি খোকন দাসের কথায়, “এ বছর মানুষের পাশে থাকুক ক্লাবগুলি। পরের বছর আবার না হয় চোখধাঁধানো পুজো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy