আলুর খেতে কীটনাশক ছড়াচ্ছেন চাষি, কালনায়। নিজস্ব চিত্র
আবহাওয়ার জন্য চাষ শুরু হয়েছে দেরিতে। এখন আবার সেই আবহাওয়াই চিন্তার ভাঁজ ফেলছে কপালে। মাঠ থেকে কেমন আলু পাওয়া যাবে, সে নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা। তাঁদের দাবি, নানা এলাকায় আলু খেতে নাবিধসা রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। যদি তা বড় আকার নেয়, সেক্ষেত্রে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। যদিও কৃষি দফতরের কর্তাদের আশ্বাস, এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি রয়েছে, তাতে খুব বেশি আশঙ্কার কারণ নেই।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়। শীতকালীন অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভরশীল এই চাষের উপরে। বেশির ভাগ চাষি জ্যোতি আলু চাষ করেন। চাষিরা জানান, আলু চাষের সময়ে নিয়মিত ঘন কুয়াশা, মেঘলা আবহাওয়া এবং মাঝেমধ্যে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হলে নাবিধসা রোগ হয় গাছে। দ্রুত জমিতে তা ছড়িয়ে পড়ে। এ বার খারাপ আবহাওয়ার জন্য অনেক জমিতে দেরিতে আলু চাষ শুরু হয়েছে। তার পরে সরস্বতী পুজোর সময়ে ফের আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় নাবিধসার আতঙ্ক তৈরি হয়েছে চাষিদের মধ্যে।
কালনার ধাত্রীগ্রামের আলু চাষি রমেন ঘোষ দাবি করেন, ‘‘আলু গাছের বয়স মাস দেড়েক হয়েছে। ভাল ফলন পেতে এখনও মাসখানেক ঠান্ডা আবহাওয়া দরকার। তবে এখনই শীতের দাপট উধাও হয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে মেঘলা আকাশ, কখনও অল্প বৃষ্টিও হচ্ছে। রয়েছে কুয়াশার দাপটও। তাই আলু নিয়ে এ বার বেশ চিন্তায় রয়েছি।’’ মেমারির চাষি হরেন মণ্ডল, প্রণব মাফদারেরাও দাবি করেন, এ বার চাষ মাসখানেক দেরিতে শুরু করতে হয়েছে। আবহাওয়া মাঝেমধ্যেই খামখেয়ালি আচরণ করছে। শীত কমে গেলে আলু গাছ সতেজ রাখা মুশকিল হয়ে পড়বে।
বহু চাষি বিপর্যয়ের কথা আশঙ্কা করে জমিতে আগাম প্রতিষেধক ‘স্প্রে’ করতে শুরু করেছেন। সম্প্রতি আলু গাছে ক্ষতিকারক রোগের হামলা ঠেকাতে বর্ধমানে কৃষি-কর্তাদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার। তিনি জানিয়েছেন, আলু গাছে রোগ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য চাষিদের আগাম সর্তক করা হয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার করে নাবিধসার আক্রমন শুরু হলে কী কী ছত্রাকনাশক ওষুধ ‘স্প্রে’ করতে হবে, তা-ও জানানো হয়েছে।
জেলার সহ-কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘দু’-একটি জায়গা ছাড়া নাবিধসা নিয়ে এখনও তেমন খবর মেলেনি। তবে আমরা চাষিদের সতর্ক করে প্রচার চালাচ্ছি। আগাম প্রতিষেধক হিসাবে কী ওষুধ দিতে হবে, জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ছত্রাকের হামলা হলে কোন ওষুধ কত মাত্রায় দিতে হবে, তা-ও বলে দেওয়া হচ্ছে।’’ চাষিদের ঘনঘন আলুর জমি পরিদর্শন করার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। (চলবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy