কর্মসূচির শিবিরে লাইন। পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুরে। নিজস্ব চিত্র
রেশনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, জেলার নানা জায়গায় লকডাউনের সময়ে বারবার এমন অভিযোগ তুলেছিলেন বাসিন্দাদের অনেকে। ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতেও রেশন কার্ড সংক্রান্ত একের পরে এক আবেদন জমা পড়ছে, জানাচ্ছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা মানুষের কাছে পৌঁছতে প্রশাসন শিবির করেছে। সেখানে দশ রকম প্রকল্পের আবেদন জমা, সমস্যা থাকলে সে সংক্রান্ত আবেদন নেওয়া হচ্ছে। সেই রিপোর্টেই দেখা যাচ্ছে, ‘খাদ্যসাথী’ প্রকল্পের জন্য বহু অভিযোগ জমা পড়ছে প্রশাসনের কাছে। আবেদনকারীদের বেশিরভাগেরই দাবি, খাদ্য দফতর থেকে পুরসভা, রেশন দোকান থেকে পঞ্চায়েত পর্যন্ত বারবার গিয়েও ডিজিটাল রেশন কার্ড তাঁরা হাতে পাননি। ফলে, সরকারি সুবিধা থেকে তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন।
লকডাউনের সময়ে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। পরিযায়ী শ্রমিকদেরও সেই সুবিধা দেওয়া হয়। তখনই রেশন কার্ড সংক্রান্ত নানা সমস্যা উঠে আসে। প্রায়ই ডিজিটাল রেশন কার্ডের দাবিতে জেলা খাদ্য নিয়ামকের দফতরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন উপভোক্তাদের একাংশ। অনেকেরই দাবি ছিল, বারবার রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করার পরেও ডিজিটাল কার্ড মিলছে না। ফলে, রেশনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। পরিস্থিতি দেখে দফায়-দফায় ‘ফুড কুপন’ চালু করে খাদ্য দফতর।
ডিসেম্বরের গোড়া থেকে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি চালু হয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শনিবার পর্যন্ত যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তাতে ‘স্বাস্থ্যসাথী’র জন্য সবচেয়ে বেশি মানুষ লাইন দিয়েছেন। প্রায় ৯৫ হাজার জন ‘স্বাস্থ্যসাথী’র জন্য আবেদন করেছেন। ‘খাদ্যসাথী’ প্রকল্প বা রেশন কার্ড বিষয় নিয়ে শনিবার দুপুর পর্যন্ত খোঁজ নেন প্রায় ১০ হাজার জন, অভিযোগ জানান প্রায় সাড়ে তিন হাজার জন।
ভাতারের বড়বেলুন গ্রামের শিবশঙ্কর পালের দাবি, “আমাদের পরিবারে ছ’জন সদস্য। দু’জনের কোনও ডিজিটাল রেশন কার্ড নেই। বারবার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু লাভ হয়নি।’’ ওই গ্রামের রহমত শেখেরও একই দাবি। তাঁর কথায়, “আমার ছেলে-মেয়েদের কার্ড হয়নি। বারবার আবেদন করা হয়েছে। এ বার শিবিরে এসে আবেদন করলাম।’’ একই সুর শোনা যায় বর্ধমানের সুব্রত পাল, মেমারির ইলিয়াস দফাদারের গলায়। তাঁদের অভিযোগ, “দু’বার রেশন কার্ডের জন্য আবেদন করেছি। পুরনো কার্ড জমা দেওয়া হয়ে গিয়েছে। বারকোড-সহ একটি নথি দিয়েছিল। অনলাইনেও তার হদিস পাচ্ছি না।’’ সপ্তম মল্লিক, ইমাম হোসেনদের দাবি, ‘‘আমাদের শুধু বলছে, অনলাইনে দেখতে। সাইবার ক্যাফেতে গেলে বলা হচ্ছে, কার্ড হয়নি। শিবিরে গিয়ে তাই জানতে চেয়েছি, রেশন কার্ড পাব কি?’’
জেলা খাদ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের অনেকেরই হয়তো কার্ড এসে গিয়েছে। লকডাউনের সময়ে পৌঁছনো যায়নি। জেলা খাদ্য নিয়ামক আবির বালি বলেন, “প্রতিটি আবেদন পরীক্ষা করে দেখা হবে।’’ এই কর্মসূচির জেলা পর্যবেক্ষক বরুণ রায়ের আশ্বাস, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট জায়গায় আলোচনা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy