Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

জাতীয় সড়কে চরছে গরু, বিপাকে চালকেরা

দুর্গাপুর শহরে খাটালের গরু, মোষ সার্ভিস রোড ছাড়িয়ে মাঝেমাঝেই জাতীয় সড়কে উঠে পড়ে।

 দুর্গাপুরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ডিভাইডারে। ছবি: বিকাশ মশান

দুর্গাপুরে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ডিভাইডারে। ছবি: বিকাশ মশান

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৫৭
Share: Save:

জাতীয় সড়কে গবাদি পশুর আসা-যাওয়া রুখতে খাটাল মালিকদের সতর্ক করা হয়েছিল বছর দেড়েক আগে। কিন্তু তার পরেও সমস্যা মিটছে না বলে অভিযোগ। এর জেরে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে, দাবি গাড়ি চালকদের। ট্র্যাফিক পুলিশের অবশ্য দাবি, আগের থেকে জাতীয় সড়কে গবাগি পশু চলাচল কমেছে।

দুর্গাপুর শহরে খাটালের গরু, মোষ সার্ভিস রোড ছাড়িয়ে মাঝেমাঝেই জাতীয় সড়কে উঠে পড়ে। তাতে দ্রুত গতির যানবাহন নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে দুর্ঘটনায় পড়ে। ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই রাতে কাদা রোড উড়ালপুলে গরুর সঙ্গে ধাক্কা লেগে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উপর থেকে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলতে থাকে। ক্রেন এনে পুলিশ কোনও রকমে সেটিকে সরায়। গরুটি মারা যায়। এর পরেই খাটাল মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, জাতীয় সড়কে গবাদি পশু দেখলে বাজেয়াপ্ত করা হবে। মালিকের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে আইনানুগ ব্যবস্থা। খাটাল মালিকের কাছে দুর্ঘটনাগ্রস্তের জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় করা হতে পারে বলেও জানিয়েছিল পুলিশ। খাটাল মালিকেরা দাবি করেন, দিন-রাত গবাদি পশুকে গোয়ালে বেঁধে রাখলে তাদের শারীরিক সমস্যা হয়। তাই এক বার করে ছেড়ে দেওয়া হয়। জাতীয় সড়কে যাতে তারা না ওঠে, তা নজর রাখার আশ্বাস দেন তাঁরা। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি বলে অভিযোগ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের হিসাবে, দুর্গাপুরে ২০১৯ সালে গবাদি পশুর জন্য অন্তত ৫টি দুর্ঘটনা ঘটে। জখম হন মোট ৮ জন। মারা যায় একটি গরু ও একটি মোষ।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বাড়ানোর উপরেই জোর দিতে চায় ট্র্যাফিক পুলিশ। এসিপি (ট্র্যাফিক) শাশ্বতী শ্বেতা সামন্ত জানান, জানুয়ারিতে জাতীয় ট্র্যাফিক সপ্তাহে দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘সেভ স্ট্রিট অ্যানিম্যাল’ নামে একটি সচেতনতা কর্মসূচি নেওয়া হয়। মূলত রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো কুকুরদের বাঁচাতেই এই প্রয়াস। তবে একই সঙ্গে ট্র্যাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে জাতীয় সড়কে গরু-মোষ না ছেড়ে রাখার বার্তাও দেওয়া হয়। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে অবন্তিকা রায় বলেন, ‘‘যে কোনও পশু যাতে বিপদে না পড়ে তা আমাদের দেখা উচিত। পশুরা ট্র্যাফিক আইন জানে না, তা মাথায় রেখে গাড়ি চালাতে হবে।’’

ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্র্যাফিক সচেতনতার পাশাপাশি রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো পশুদের রক্ষা করতে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চলছে। জাতীয় সড়কের ধারে রাঁচি কলোনি, ডিভিসি মোড়-সহ নানা এলাকায় যে সমস্ত খাটাল রয়েছে, সেখানে গিয়ে কথা বলা হচ্ছে খাটাল মালিকদের সঙ্গে। মাসে গড়ে দু’বার করে ট্র্যাফিক বিভাগের কর্মীরা অভিযানে যাচ্ছেন। খাটালের গরু-মোষ থেকে কী ভাবে সাধারণ মানুষের বিপদ হচ্ছে সে ব্যাপারে সচেতন করা হচ্ছে। গরু বা মোষ দুর্ঘটনায় মারা গেলে ক্ষতি যে খাটাল মালিকদেরই, সে কথাও বোঝাচ্ছেন ট্র্যাফিক বিভাগের কর্মীরা। ট্র্যাফিক পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘লাগাতার চেষ্টার পরে জাতীয় সড়কে আগের থেকে কম গরু, মোষ নজরে আসছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cows National Highway Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy