ছবি: সংগৃহীত।
অণ্ডাল ব্লকের পঞ্চায়েত এলাকাকে পুরসভায় রূপান্তরিত করার বিষয়টি নিয়ে ফের চর্চা শুরু হয়েছে এলাকায়। সিপিএম জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে ভোটের আগে সরব হওয়ার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনাচক্রে, বিজেপি-ও একই দাবি জানাচ্ছে। বিষয়টিকে ‘স্বাগত’ জানাচ্ছে তৃণমূলও। রানিগঞ্জ বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত এই এলাকাটিকে পুরসভা করার দাবি, বিধানসভা ভোটের আগে ফের এলাকার আবেগকে উস্কে দেওয়ার কৌশল কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে এলাকায়।
ঘটনাচক্রে, এই বিধানসভা এলাকায় ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে বামফ্রন্ট, তৃণমূল ও বিজেপির ভোট শতাংশ ছিল যথাক্রমে ৪৪, ৩৬ ও ১৮ শতাংশ। ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে অবশ্য এলাকার আটটি পঞ্চায়েত এলাকাতেই ঘাসফুল ফুটেছিল। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বিজেপি পায় ৫০.৬২ শতাংশ ভোট। বামফ্রন্ট ও তৃণমূলের ভোট ছিল যথাক্রমে ১০.০৪ ও ৩৩.৩৩ শতাংশ।
এই ভোট-অঙ্কের মাঝে দাঁড়িয়ে পুরসভা করার বিষয়টি নিয়ে যে আবেগ রয়েছে, তা বোঝা যায়, এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেও। তাঁরা জানান, অণ্ডাল, রামপ্রসাদপুর ও মদনপুর পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে অণ্ডাল রেল-শহর। বাকি পাঁচটি পঞ্চায়েত এলাকায় রয়েছে বিস্তীর্ণ খনি অঞ্চল। রয়েছে, বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র শিল্প-কারখানা। বিষয়টিকে সামনে রেখে এলাকার একটি কলেজের অধ্যক্ষ সঞ্জীব হাজরা বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের বেশির ভাগই শিল্পের উপরে নির্ভরশীল। তাই এলাকাকে পুরসভা করা হলে নাগরিক পরিকাঠামোর উন্নতি হবে বলেই মনে করি।’’ উখড়া বণিকসভার তরফে সীতারাম বার্নওয়াল বলেন, ‘‘এলাকার শিল্পক্ষেত্রের আর্থ-সামাজিক উন্নতির জন্যই অণ্ডাল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকাকে পুরসভা করা দরকার।’’ জেলা পরিষদের কো-মেন্টর কাঞ্চন মিত্রও জানান, ১৮,৫০০ হেক্টর জমির উপরে রয়েছে এই ব্লক। এর মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশ জমি চাষযোগ্য। তারও বেশির ভাগ একফসলি। ফলে, এলাকার বেশির ভাগ মানুষই শিল্পক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত।
এই ‘আবেগকে’ উস্কে দিয়েই সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘২০০৮-০৯ অর্থবর্ষে রাজ্য সরকারের কাছে আমরা দলীয় ভাবে এলাকাটিকে পুরসভা করার প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। কারণ, পুরসভা হলে এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য টাকা বরাদ্দ হবে। আমরা এই বিষয়টি নিয়ে আবার সরব হচ্ছি।’’ তৃণমূলের অণ্ডাল ব্লক সভাপতি কালোবরণ মণ্ডল বলেন, “আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির নিরিখে এই এলাকার পুরসভা হওয়া উচিত। আমরা আশা করি, আলাদা পুরসভা তৈরি না হলেও অণ্ডাল ব্লককে রাজ্য সরকার দুর্গাপুর পুরসভার অধীনে নিয়ে যেতে পারে। কিন্তু আলাদা পুরসভা হলেও তা স্বাগত।’’ বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই জানান, অণ্ডালে বিমানবন্দর, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, শিল্পক্ষেত্র রয়েছে। তাই তাঁরাও দলীয় ভাবে এলাকাকে পুরসভা করার দাবি জানাচ্ছেন।
এ দিকে, জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সামগ্রিক ভাবে আর্থ-সামাজিক কাঠামো-সহ জীবনযাপনের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে পঞ্চায়েত এলাকাকে পুরসভায় রূপান্তরিত করা হয়। যেমন, এর আগে জামুড়িয়ার ১০টি পঞ্চায়েতকে ১৯৯৪-এ ‘নোটিফায়েড’ এলাকা ঘোষণা করা হয়। এর পরের বছরে তৈরি হয়েছিল সাবেক জামুড়িয়া পুরসভা। ১৯৯৩-এ আসানসোল শহর লাগোয়া ছ’টি পঞ্চায়েত আসানসোল পুরসভায় এবং ১৯৯৫-এ রানিগঞ্জ শহর লাগোয়া তিনটি পঞ্চায়েত এলাকা সাবেক রানিগঞ্জ পুরসভার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল। তবে জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘পুরসভা গঠন বা পুরসভায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy