Advertisement
E-Paper

দেবশালার ভোটে আছেন নিহত চঞ্চল

২০২১-এর ওই দিনে আউশগ্রামের গেঁড়াইয়ে একটি নিমন্ত্রণবাড়ি থেকে ফিরছিলেন শ্যামল, তাঁর ছেলে চঞ্চল। দুপুর ৩টেয় ভাতকুণ্ডার জঙ্গলে গুলিবিদ্ধ হন চঞ্চল।

দেবশালার নিহত চঞ্চল বক্সী (বাঁ দিকে), প্রচারে দেবশালার তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল বক্সী (ডান দিকে)।

দেবশালার নিহত চঞ্চল বক্সী (বাঁ দিকে), প্রচারে দেবশালার তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল বক্সী (ডান দিকে)।

বিপ্লব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৩ ০৭:৪৫
Share
Save

৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১। গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হয়ে যান বুদবুদের দেবশালা পঞ্চায়েতের তৎকালীন প্রধান শ্যামল বক্সীর ছেলে চঞ্চল। ওই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় চার তৃণমূল নেতা-সহ আট জনকে। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটেও শ্যামল তৃণমূলের প্রার্থী। বিরোধীর কটাক্ষ আছে, শোক বুকে নিয়ে শ্যামলের লড়াই আছে, এলাকাবাসীর আক্ষেপ আছে— চঞ্চল নেই, কিন্তু দেবশালার ভোটে তাঁর নামটি সব ক্ষেত্রেইঘুরেফিরে আসছে।

২০২১-এর ওই দিনে আউশগ্রামের গেঁড়াইয়ে একটি নিমন্ত্রণবাড়ি থেকে ফিরছিলেন শ্যামল, তাঁর ছেলে চঞ্চল। দুপুর ৩টেয় ভাতকুণ্ডার জঙ্গলে গুলিবিদ্ধ হন চঞ্চল। খবর জানাজানি হতেই ছুটে আসেন ওই এলাকার দলীয় পর্যবেক্ষক তথা বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। ঘটনাটি নিয়ে ‘সক্রিয়’ হয় পুলিশও। বর্তমানে মামলাটি বর্ধমান আদালতে বিচারাধীন। অভিযুক্তেরা সকলেই বর্তমানে জামিনে মুক্ত। তৃণমূল ওই অভিযুক্ত নেতাদের দল থেকে বহিষ্কার করে। এই মুহূর্তে ওই অভিযুক্তেরা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এই ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলকেই সামনে এনেছিল। তৃণমূল যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দেয়।

তবে ঘটনা যা-ই হোক না কেন, চঞ্চলের নাম এখনও রয়েছে সর্বত্রই। শোক কিছুটা সামলে উঠে নিজের মতো করে প্রচার করছেন শ্যামল। তিনি জানাচ্ছেন, চঞ্চল কার্যত তাঁর ‘লাঠি’ ছিলেন। রাজনীতি-সহ সব কাজেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতেন চঞ্চল। শ্যামলের বক্তব্য, “২০১৩ থেকে পঞ্চায়েত ভোটের সব দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে এলাকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে কাজ করত চঞ্চল। ওকে ছাড়া কোনও দিন ভোটে লড়িনি। তবে গ্রামের মানুষ আমারসঙ্গেই আছেন।”

সূত্রের খবর, এ বার আর প্রার্থী হবেন না, এই মর্মে দলকে জানিয়েছিলেন শ্যামল। তাঁর ছোট ছেলে রাহুল জানাচ্ছেন, দল বার বার অনুরোধ করলেও, প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে বাড়ির সকলে মত দেননি। তিনি বলেন, “শেষ পর্যন্ত দাদার জন্যই ভোটে দাঁড়িয়েছেন বাবা। তবে আমাদের আর্জি, কারও কোল যেন খালি না হয়। যে কোনও মূল্যে শান্তি বজায় থাক।”

তবে এই বিষয়টিই প্রচারে টেনে তৃণমূলকে বিঁধছে সিপিএম। শ্যামলের প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিএম নেতা অলোক রানা বলছেন, “একটা তরতাজা ছেলের মৃত্যু আমাদের সবার জন্যই শোকের। কিন্তু এলাকাবাসীর পাশাপাশি, শ্যামলবাবুও নিশ্চই বুঝছেন, তৃণমূল দলটা আসলে মানুষের ভালকরতে পারে না। ওঁরা শুধু খুন, চুরি, লুট— এ সব নিয়েই ব্যস্ত।”

বিজেপির বর্ধমান (সদর) সহ-সভাপতি রমন শর্মা বলেন, “প্রধানের ছেলে খুন হন দলেরই লোকের কাছে। হয়তো প্রধান কোনও চাপে পড়ে এ বারেও প্রার্থী হয়েছেন।” শ্যামল অবশ্য এ সব কথায় আমল দিচ্ছেন না।তাঁর সংযোজন: “দোষীরা যাতে শাস্তি পায়, সে জন্যই ভোটে দাঁড়িয়েছি।”

পাশাপাশি, রাজনীতির বাইরে গিয়েও চঞ্চলের কথা ঘুরেফিরে আসছে আমজনতার মুখেও। স্থানীয় বাসিন্দা বিপ্রপদ বন্দ্যোপাধ্যায়, রামকৃষ্ণ মণ্ডল, মাধব বাগদিরা জানাচ্ছেন, চঞ্চল সদাহাস্য ছেলে ছিল। সবার সঙ্গেই ভাল সম্পর্ক ছিল। তাঁদের কথায়, “ওকে দেখতে না পেয়ে আমাদেরও খুবফাঁকা লাগে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

WB Panchayat Election 2023 Budbud TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}