Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Cyclone Amphan

গাছ ভেঙে জখম ৩, বহু জায়গায় জমিতে জল

ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস থাকায় আগে থেকেই নানা পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছিল।

বর্ধমানের গোদায় গাছ ভেঙে ছিঁড়ল বিদ্যুতের তার। —নিজস্ব চিত্র

বর্ধমানের গোদায় গাছ ভেঙে ছিঁড়ল বিদ্যুতের তার। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২০ ০০:০৬
Share: Save:

সকাল থেকেই মেঘলা আবহাওয়া। তার সঙ্গে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। বেলা গড়ানোর সঙ্গে বাড়তে থাকে বৃষ্টির দাপট। ঝড় শুরু হয় তার পরেই। রাত পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’-এর জেরে বেশ কিছু এলাকায় গাছ পড়ে গিয়েছে। আহত হয়েছেন কয়েকজন। জেলা প্রশাসন জানায়, রাত পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির কোনও খতিয়ান মেলেনি।

ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস থাকায় আগে থেকেই নানা পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছিল। জেলা, মহকুমা ও ব্লক স্তরে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়। কাটোয়া মহকুমায় নদীর পাড়ে বসবাসকারী মোট ৪৫টি পরিবারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলগুলিতে। এ দিন সকাল থেকে বন্ধ রাখা হয় বিভিন্ন ফেরিঘাট। ভাগীরথী ও অজয়ের তীরবর্তী এলাকা এবং নানা ঘাটে পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা নজরদারি চালান। জেলাশাসক বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘গোটা পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক থাকা হচ্ছে।’’

ঝোড়ো হাওয়ায় এ দিন নানা জায়গায় গাছ পড়ে যায়। বিকেলে মন্তেশ্বর বাজারে ঢোকার মুখে রাস্তায় একটি অশত্থ গাছ ভেঙে পড়ে। এই ঘটনায় জখম হন দুই মহিলা-সহ তিন জন। তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্ধমানের গোদায় গাছ ভেঙে বিদ্যুতের ছিঁড়ে যায়। পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির কাছেও গাছ ভেঙে পড়ে। গলসিতে দুর্গাপুর এক্সপ্রসওয়ের পাশে বেশ কিছু ছোট গাছ উপড়ে গিয়েছে বলে আশপাশের বাসিন্দারা জানান। ঝড়-বৃষ্টির জেরে এ দিন জেলার নানা এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। রাত পর্যন্ত শুধু বর্ধমান শহরে প্রায় ৭০টি বিদ্যুতের খুঁটি পড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

‘লকডাউন’-এর মধ্যেও বর্ধমানের নানা এলাকায় সকাল থেকে মানুষজনের ভিড় দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু বুধবার ঝড়ের আশঙ্কায় শহরের রাস্তায় সেই ছবি দেখা যায়নি। সকালে পুলিশলাইন, স্টেশনবাজার, উদয়পল্লি, কাঞ্চনগর বা গোলাপবাগ মোড়ে কিছু বাসিন্দা বাজার করতে বেরোন। কিন্তু বেলা বাড়তেই বাজার ফাঁকা হয়ে যায়। বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। কার্জন গেট চত্বরও বেলা থেকে ছিল সুনসান। একই রকম ছবি দেখা যায় মেমারিতেও।

কালনাতেও সকাল ১০টা পর্যন্ত দোকান-বাজারে কিছু লোকজন কেনাকাটা করতে বেরিয়েছিলেন। এর পরেই এলাকা সুনসান হয়ে যায়। দোকান বন্ধ করে ব্যবসায়ীরাও বাড়ি চলে যান। এ দিন সকাল থেকে খেয়া পারাপার বন্ধ রাখা হয় কালনার ঘাটে। টানা বৃষ্টিতে বিকেল থেকে শহরের কিছু এলাকায় জল জমতে শুরু করে।

দাঁইহাটে ভাগীরথীর জলস্তর বাড়তে থাকায় তীরবর্তী এলাকা থেকে ৩৫টি পরিবারকে সরানো হয়। কাটোয়া ২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েতের চরবিষ্ণুপুরেও ভাগীরথীর তীর থেকে দশটি পরিবারকে সরানো হয়। নদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের আগে থেকে সচেতন করা হয়েছে।’’ কন্ট্রোল রুম খুলে পরিস্থিতি তদারক করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কাটোয়া ও দাঁইহাট পুরসভা। দুই এলাকার মোট ন’টি ফেরিঘাট এ দিন বন্ধ রাখা হয়।

বৃষ্টিতে জমিতে জল জমে গিয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেক চাষি। তাঁদের দাবি, এমনিতেই এপ্রিলের শেষ দিক থেকে মাঝে-মধ্যেই ঝড়-শিলাবৃষ্টির জেরে বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার পরেও যেটুকু অবশিষ্ট ছিল, সেই ধান আর ঘরে তোলা যাবে না বলে তাঁদের আশঙ্কা। কৃষি দফতর জানায়, দুর্যোগ কাটার পরে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy