পঙ্কজ রায় সরকার। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী নিরুপম সেনের এক কথায় ইসিএলের চাকরি ছেড়ে সিপিএমের হোলটাইমার হয়েছিলেন। সেই দলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন পঙ্কজ রায় সরকার। তার আগেই পঙ্কজকে বহিষ্কার করে সিপিএম। তবে পঙ্কজের ঘনিষ্ঠদের দাবি, বহিষ্কারের আগে নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর ওই সদস্য।
সিপিএমের আইটি সেলের দেখাশোনা করতেন। সেই সমাজমাধ্যমে ঘণ্টা ১২ আগে দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা করেন পঙ্কজ। সেখানে তিনি লেখেন, ‘‘নিস্তব্ধতা বলে এই ভূদেশে কিছু আছে না কি?’’ পরে অবশ্য সেই পোস্ট-সহ পেজই ‘ডিলিট’ করে দেন। অন্য দিকে, রবিবার দীর্ঘ বৈঠকের পর জেলা সিপিএমের অন্যতম মুখ পঙ্কজকে তাঁর দল বহিষ্কার করে। এ নিয়ে জেলা কমিটির সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সিপিএম নেতা পঙ্কজ রায় সরকারকে বহিষ্কার করা হল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলের যে ‘পলিসি’ তার বিরোধিতা করছেন উনি। অর্থাৎ, দলের কর্মসূচির বিরোধিতা করছেন। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বহিষ্কার করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। সংশোধনের কোনও জায়গা থাকে না।’’ পাশাপাশি, পঙ্কজকে বহিষ্কারের ফলে সিপিএমের কোনও ক্ষতি হবে না বলেও দাবি করেন গৌরাঙ্গ।
যদিও দলের সঙ্গে ঠিক কী কী কারণে পঙ্কজের মতো জেলা সিপিএমের অন্যতম মুখের দূরত্ব রচিত হল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, বিকেলেই তৃণমূলে যোগদান করবেন পঙ্কজ।
মূলত দুর্গাপুরে সিপিএমের সংগঠন দেখাশোনার ভার ছিল পঙ্কজের ওপর। একই সঙ্গে রাজ্য সিপিএমের আইটি সেলের দেখাশোনা করতেন। পঙ্কজের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিলেন। শনিবার নিজের পদত্যাগপত্রও পাঠিয়ে দিয়েছেন। তার পর তাঁকে বহিষ্কার করেছে দল।
রবিবার রানিগঞ্জে জেলা সিপিএম দফতর টানা বৈঠক হয়। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়েছে বহিষ্কারের। পঙ্কজ তখন প্রস্তুত হচ্ছেন নতুন দলে যোগদান করার জন্য। দুর্গাপুরে বিকেল ৪টায় অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে জানাচ্ছেন ঘনিষ্ঠরা।
সিপিএমের হয়ে জেলায় বহু আন্দোলনের মুখ তিনি। চাকরি করতেন ইসিএলে। কিন্তু রাজনীতির টানে সেই চাকরি ছাড়েন। ঘনিষ্ঠেরা বলেন, পঙ্কজের সাংগঠনিক এবং নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা অনেকের নজর কেড়েছিল। প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী (প্রয়াত) নিরুপম সেনের স্নেহভাজন ছিলেন। তাঁর কথাতেই নাকি শুধু দলের কাজ করবেন বলে চাকরি ছেড়ে দেন। জেলার ডাকসাইটের নেতা পঙ্কজের সঙ্গে আবার পুলিশ-প্রশাসনেরও সুসম্পর্ক। আসলে কোনও আন্দোলন দানা বাঁধার আগে যদি আলোচনার মাধ্যমেই মিটে যায়,পঙ্কজ সেটাই করতেন। তৃণমূল মূলত তাঁর সাংগঠনিক দক্ষতাকেই কাজে লাগাতে চাইছে। সামনে দুর্গাপুর পুরসভার ভোট রয়েছে। সেখানে পঙ্কজের অভিজ্ঞতা কাজে আসবে বলে মনে করছেন তৃণমূল নেতারা। তা ছাড়া দুর্গাপুর অঞ্চলে তৃণমূলের ট্রেড ইউনিয়ন বেশ দুর্বল। এত দিন ইউনিয়নের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মন্ত্রী মলয় ঘটকের ভাই অভিজিৎ ঘটক। ওই জায়গায় পঙ্কজকে আনা হতে পারে বলে তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর। পাশাপাশি তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পঙ্কজের সম্পর্ক বেশ পুরনো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy