(বাঁ দিকে) মধুপর্ণা ঠাকুর। শান্তনু ঠাকুর (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বাগদা আসনের উপনির্বাচনে কি তবে ফের ঠাকুরবাড়ির লড়াই দেখা যাবে? প্রশ্ন তৈরি হয়েছে রাজ্য বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম নিয়ে জল্পনায়। তৃণমূল প্রার্থী করেছে ঠাকুরবাড়ির সদস্য তথা রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের মেয়ে মধুপর্ণা ঠাকুরকে। আর বিজেপির প্রাথমিক আলোচনায় উঠে এসেছে ঠাকুরবাড়ির আর এক সদস্যের নাম। তিনি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের স্ত্রী সোমা ঠাকুর। তবে এখনও এ ব্যাপারে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। নাম এসেছে মতুয়া সম্প্রদায়ের বিনয় বিশ্বাস এবং অমৃতলাল বিশ্বাসেরও। এ ছাড়াও আলোচনায় হয় দু’টি নাম নিয়ে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুলাল বর। অতীতে কংগ্রেস এবং তৃণমূল বিধায়ক থাকা দুলাল ২০১৯ সালেই বিজেপিতে যোগ দেন। দলের রাজ্য তফসিলি মোর্চার নেতা ২০২১ সালের ভোটে টিকিট পাননি। এ বারে তাঁর নামও রয়েছে আলোচনায়। এ ছাড়াও রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষস্তরের নেতার আপ্তসহায়কের নামও আলোচনায় রয়েছে।
চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে সবার আগে প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করে দিয়েছে তৃণমূল। তবে বিজেপি এখনও কোনও আসনেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। শনিবার রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির বৈঠকে চারটি আসনের জন্য মোট ১২ জনের নাম কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে পাঠানো হয়েছে। সব কেন্দ্রেই স্থানীয় নেতাদের প্রার্থী করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। প্রসঙ্গত, মানিকতলা বাদ দিলে বাকি তিন আসন বাগদা, রানাঘাট দক্ষিণ এবং রায়গঞ্জে ২০২১ সালে বিজেপি জিতেছিল। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটের নিরিখে রায়গঞ্জ, রানাঘাট দক্ষিণ এবং বাগদা বিধানসভা আসনে এগিয়ে পদ্মশিবির। তাই প্রার্থী হওয়ার দাবিদার অনেকেই। বিশেষ করে মতুয়া অধ্যুষিত বাগদা আসনে জয়ের সম্ভাবনা তুলনায় বেশি হওয়ায় চাহিদাও বেশি।
প্রথম দিকে জানা গিয়েছিল বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক দুলালের পাল্লাই ভারী। ২০১১ সালে তৃণমূলের টিকিটে এই আসনে জিতেছিলেন দুলাল। পরে ২০১৬ সালে জেতেন কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। মনে করা হয়েছিল, ২০২১ সালে বিজেপি তাঁকেই প্রার্থী করবে। কিন্তু তখন বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ নেতা মুকুল রায়ের ইচ্ছায় শেষ বেলায় প্রার্থী করা হয় বিশ্বজিৎ দাসকে। সে বার ভোটে জিতেও বিশ্বজিৎ পরে তৃণমূলে যোগ দেন। এখন শাসকদলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে পরাজিত। তবে তিনি আর উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে চান না।
তবে রায়গঞ্জ এবং রানাঘাট দক্ষিণে প্রার্থী হচ্ছেন বিজেপি থেকে তৃণমূলে যাওয়া এবং লোকসভা নির্বাচনে পরাজিত কৃষ্ণ কল্যাণী এবং মুকুটমণি অধিকারী। এঁদের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ার ক্ষেত্রেও স্থানীয় নেতৃত্বেই ভরসা রাখতে চায় বিজেপি। যা আলোচনা হয়েছে, তাতে রায়গঞ্জের প্রার্থী হিসাবে স্থানীয় শিক্ষক শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে। এ ছাড়াও বিজেপির পুরনো দিনের কর্মী বাবুলাল বালা এবং মানস ঘোষের নাম আছে। এঁদের মধ্যে বাবুলাল মতুয়া সম্প্রদায়ের হওয়ায় তাঁর নামই দৌড়ে এগিয়ে। কারণ, রায়গঞ্জ বিধানসভার অনেক এলাকাতেই মতুয়া সম্প্রদায়ের বসবাস রয়েছে। রানাঘাট দক্ষিণে প্রার্থী হিসাবেও মতুয়া সম্প্রদায়ের মনোজ বিশ্বাসের নাম আলোচনায়। মনোজ বিন নামে স্থানীয় এক বিজেপি নেতার নামও আলোচনায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে কলকাতার মানিকতলা আসনে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক কল্যাণ চৌবে। হারেন তৃণমূলের কাছে। প্রয়াত সাধন পাণ্ডের মৃত্যুতে ওই আসন অনেক দিন আগেই খালি হয়ে গেলেও কল্যাণের করা মামলার কারণে উপনির্বাচন আটকে ছিল। সেই মামলা কল্যাণ প্রত্যাহার করে নেওয়া অবশেষে উপনির্বাচন হচ্ছে। তৃণমূল প্রার্থী করেছে সাধন-জায়া সুপ্তি পাণ্ডেকে। তাঁর বিরুদ্ধে ফের কল্যাণকে প্রার্থী করতে পারে বিজেপি। এখন অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণের নাম নিয়ে আলোচনা হয়েছে রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির বৈঠকে। এ ছাড়াও উত্তর কলকাতার পুরনো দুই বিজেপি কর্মী অমিতাভ রায় এবং শ্যাম জয়সওয়ালের নামও রয়েছে।
তবে রাজ্য বিজেপি নেতারা জানেন, তাঁদের অধিকার শুধু পছন্দ জানানোর। যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তবে সময় নষ্ট না করে খুব তাড়াতাড়ি প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। উপনির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে তিনি কোনও পরামর্শ দেবেন না বলে আগেই জানিয়ে রেখেছেন শুভেন্দু অধিকারী। শনিবারের বৈঠকেও তিনি ছিলেন না। তবে যে হেতু বিষয়টা বিধানসভার উপনির্বাচন, তাই আলাদা করে বিরোধী দলনেতার কাছ থেকেও চার আসনের প্রার্থীদের নাম জানতে চাইতে পারেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy