কাটোয়ার একাইহাটে ভোট ও নোট চাওয়া সিপিএমের। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
রাজ্যপাট গিয়েছে এক দশক আগে। ধীরে ধীরে রাজ্য রাজনীতিতে কার্যত প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে সিপিএম। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সর্বত্র প্রার্থীও দিতে পারেনি তারা। তবে যে সব জায়গায় প্রার্থী দেওয়া গিয়েছে, সেখানে জনসংযোগ বাড়াতে অভিনব কৌশল নিয়েছে সিপিএম।
‘ভোট দাও, নোট দাও’— এই আবেদন নিয়ে বাড়িবাড়ি যাচ্ছেন সিপিএম কর্মীরা। ‘‘সিপিএম চলে সাধারণ মানুষের টাকায়— এই বার্তা মনে করিয়ে দিতেই ভোটপ্রার্থনার পাশাপাশি অর্থও চাওয়া হচ্ছে মানুষের থেকে,’’ বলছেন কাটোয়ার এক সিপিএম নেতা। ভোটের আগে পাঁচ বার প্রত্যেক বাড়িতে যাওয়াই লক্ষ্য সিপিএমের। ইতিমধ্যেই দু’দফা কর্মসূচি সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি নেতৃত্বের। সিপিএমের এই কৌশলকে ‘জুলমবাজি’ বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
সিপিএম জানিয়েছে, নির্বাচন ঘোষণা হতেই দলের কর্মীরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে ভোটার তালিকা নিয়ে বাড়িবাড়ি জনসংযোগ শুরু করেছেন। এক সিপিএম নেতার কথায়, ‘‘কেন বাম প্রার্থীদের ভোট দেবেন, কেন-ই বা তৃণমূল-বিজেপিকে ভোট দেবেন না, দ্বিতীয় দফার জনসংযোগ কর্মসূচিতে তার ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। তৃতীয় দফায় ‘ভোট দাও, নোট দাও’ আবেদন জানানো হচ্ছে।’’ সিপিএম সূত্রে খবর, ‘‘পাঁচ টাকা থেকে ৫০ টাকার কুপন ও রশিদ নিয়ে কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। এ ভাবে অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে লাগাতার প্রচারের কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরের দফায় দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে নকল ব্যালট পেপার নিয়ে বাড়িবাড়ি ঘোরা হবে। পঞ্চম পর্বে, প্রচারের শেষ লগ্নে দলের বুথ কর্মীরা ভোটার স্লিপ দিতে বাড়ি বাড়ি যাবেন।’’
এ ছাড়াও, অনেক এলাকায় ‘উঠোন বৈঠক’ করছেন সিপিএম নেতারা। এই কর্মসূচির জন্য দলের কৃষক, ছাত্র, যুব, মহিলা ও শ্রমিক সংগঠনকে ময়দানে নামানো হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাটোয়া ১ ব্লকের খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের একাইহাট গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, “বেশ কয়েক বছর ধরেই শুনছি, টাকা দিয়ে ভোট কেনা হয়। সিপিএম উল্টো কাজ করছে। এ দিন প্রার্থীদের নিয়ে প্রচারে এসে ৫০ টাকা নিয়ে গেলেন সিপিএম কর্মীরা। অভিনব কৌশল দেখে একটুঅবাক হয়েছি।’’
কাটোয়ার প্রবীণ সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “সাধারণ মানুষের টাকায় আমাদের পার্টি চলে। তাই আমাদের কর্মীরা ভোটের পাশাপাশি অর্থও চাইছেন। মানুষ খুশি হয়ে সাধ্যমতো অর্থ দিচ্ছেন। এতে ভাল সাড়া মিলছে। লুটেরাদের সরিয়ে জনগণের পঞ্চায়েত গড়েতুলতে ভোটের আগে পাঁচবার প্রত্যেক বাড়িতে যাব।কর্মসূচির অনেকটাই ইতিমধ্যেসেরে ফেলেছি।’’
সিপিএমের এই উদ্যোগ সম্পর্কে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মানুষের উপরে জুলুমবাজি করে টাকা আদায় সিপিএমের চিরকালের অভ্যাস। আসলে জনগন সিপিএমকে সম্পূর্ণ বর্জন করেছে। পাঁচ কেন, পঞ্চাশবার মানুষের দুয়ারে গেলেও ওরা ভোট পাবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy