Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
State employees General strike

৭০টি স্কুলে বন্ধ পড়া, ব্যাহত আদালতের কাজ

সকাল থেকেই ধর্মঘটের সমর্থনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি হয়। আসানসোল জেলা আদালতে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কোর্ট এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশন’-এর সদস্যেরা কাজে যোগ দেননি।

আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৩ ০৯:৪৬
Share: Save:

বকেয়া মহার্ঘভাতা মেটানো-সহ তিন দাবিতে শুক্রবার যৌথমঞ্চ ও সংগ্রামী যৌথমঞ্চের ডাকা ধর্মঘটে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতর ও স্কুলে প্রভাব পড়ল বলে দাবি। পশ্চিম বর্ধমানের অন্তত ৭০টি প্রাথমিক স্কুলে পঠনপাঠন হয়নি। কাজ হয়নি আসানসোল আদালতে। কাজ ব্যাহত হয় দুর্গাপুর আদালতেও। যদিও, গত কয়েক দিন ধরে ধর্মঘটের ধারাবাহিক বিরোধিতা করলেও, এ দিন পথে দেখা যায়নি তৃণমূল নেতৃত্বকে।

জেলার স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সুনীতি সাঁপুই জানান, হাইস্কুলে ৭৬ শতাংশ শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) দেবব্রত পাল জানান, প্রাথমিক স্কুলের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটি ৮০ শতাংশেরও বেশি। তবে তিনি বলেন, “৭০টি প্রাথমিক স্কুলে পঠনপাঠন হয়নি।”

তবে এ দিন বিভিন্ন হাইস্কুলেও পড়াশোনা হয়নি জানা গিয়েছে। জামুড়িয়ার রাজপুর নন্ডী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (টিচার ইনচার্জ) জীতেন্দ্রনাথ চৌধুরী জানান, মাত্র সাত জন শিক্ষক এলেও, তাঁরা হাজিরা খাতায় সই করেননি। প্রার্থনাসভার পরে স্কুল ছুটি দিতে হয়। জামুড়িয়ার বীজপুর নেতাজি শিক্ষানিকেতনে ২৯ জন শিক্ষকের মধ্যে ১২ জন স্কুলে এলেও তাঁরাও সই করেননি। রানিগঞ্জ যমুনাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সঞ্চিতা গড়াইয়ের কাছে কয়েক জন অভিভাবক বিক্ষোভ দেখান। তবে সঞ্চিতার বক্তব্য, “অভিভাবকেরা বলছিলেন, আমরা পড়ুয়াদের স্কুলে আসতে বারণ করেছি। আমি ওঁদের বলেছি, আমরা ধর্মঘটে যোগ দেব, শুধু এটাই পড়ুয়াদের বলেছিলাম। এ দিন মাত্র সাত জন শিক্ষিকা এসেছিলেন। ফলে, পড়াশোনা চালানো সম্ভব হয়নি।” পাশাপাশি, দুর্গাপুরের নেপালিপাড়া হিন্দি হাইস্কুলেও ৬০ শতাংশ শিক্ষক আসেননি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কলিমুল হক জানান, উঁচু ক্লাসের মেধাবী পড়ুয়ারা নিচু শ্রেণির পড়ুয়াদের এ দিন পড়িয়েছে। স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড বিলিতেও সাহায্য করে কয়েক জন পড়ুয়া।

যদিও, পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “প্রতিটি স্কুলেই স্বাভাবিক পঠনপাঠন হয়েছে। মিড-ডে মিল রান্না হয়েছে।” তবে বাম প্রভাবিত নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক অমিতদ্যুতি ঘোষের দাবি, “কাগজে-কলমে চালু থাকলেও প্রচুর হাইস্কুলে কার্যত পঠনপাঠন হয়নি। আসানসোল মহকুমায় প্রায় ছ’শো শিক্ষক কাজে যোগ দেননি।”

এ দিন সকাল থেকেই ধর্মঘটের সমর্থনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি হয়। আসানসোল জেলা আদালতে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কোর্ট এমপ্লয়িজ় অ্যাসোসিয়েশন’-এর সদস্যেরা কাজে যোগ দেননি। কোনও কাজই হয়নি আদালতে। দুর্গাপুর আদালতেও কাজকর্ম ব্যাহত হয়েছে। রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি আসানসোলের কমার্সিয়াল ট্যাক্স কার্যালয়ের গেটে ‘পিকেটিং’ করে। পাশাপাশি, দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে খাদ্য, জিএসটি ও শ্রম দফতরে গরহাজির ছিলেন বহু কর্মী। খাদ্য দফতরে কাজে এসে ফিরে যান রাজিয়া বিবি নামে এক মহিলা। তিনি বলেন, “কেন এই অবস্থা জানি না। দরকারে এসেছিলাম। সোমবার আসতে বলা হল।” অভিযোগ, সেচ দফতরে কাজে যোগ দিতে এসে বাধার মুখে পড়েন কর্মীদের একাংশ। যদিও সে বাধা না মেনেই তাঁরা অফিসে ঢোকেন। বাধা দেওয়ার অভিযোগ মানেনি কো-অর্ডিনেশন কমিটি। ধর্মঘটের সমর্থনে ডিএসপি-র সামনে সিটু সমর্থকেরা স্লোগান দেন।

আসানসোলে মহকুমাশাসকের কার্যালয়েও অবস্থান চলে। এখানে ও জেলাশাসকের দফতরে হাজিরা অন্য দিনের তুলনায় তুলনামূলক ভাবে কম ছিল। পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে দাবি, সরকারি দফতরগুলিতে ৯০ শতাংশের কাছাকাছি হাজিরা ছিল। পুরো বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) এস অরুণ প্রসাদ। তবে আসানসোল পুরসভা এবং চারটি বরোতে স্বাভাবিক কাজ হয়েছে বলে দাবি মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের।

এ দিকে, তৃণমূলকে কোথাও এ দিন পথে নামতে দেখা যায়নি। যদিও, এ বিষয়ে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনের বক্তব্য, “আমরা বরাবরই কর্মনাশা ধর্মঘটের বিরুদ্ধে। রাজ্য সরকারের কর্মচারীরা তা জানেন। এ দিন ধর্মঘট পুরোপুরি ব্যর্থ। সিপিএম সমর্থিত কিছু সংগঠন এ দিন রাজ্যের উন্নয়নকে ব্যাহত করতে চেয়েছিল।” যদিও অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা শুভাশিস নাগের বক্তব্য, “সবাই নিজে এগিয়ে এসে তাঁদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘটে যোগ দিয়েছেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

State employees General strike Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy