Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

বাজার বন্ধ, তবু অজুহাত খুঁজে রাস্তায়

সকাল থেকে টানা বৃষ্টিও সহায়ক হয় ‘লকডাউন’ পালনে। তবে তার মধ্যেও কিছু কিছু জায়গায় দেখা গেল অন্য ছবি। নানা অছিলায় পথে বেরোলেন কিছু বাসিন্দা।

বর্ধমানের কার্জন গেট চত্বরে নজরদারি পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের। ছবি: উদিত সিংহ।

বর্ধমানের কার্জন গেট চত্বরে নজরদারি পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ারদের। ছবি: উদিত সিংহ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কালনা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০৪:২৮
Share: Save:

রাস্তাঘাট ফাঁকা। দোকানপাটও খোলেনি। বৃহস্পতিবার ‘লকডাউন’-এ বাসিন্দারা অন্য দিনের মতো না বেরনোয় মোড়ে-মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকর্মীদের বিশেষ ব্যস্ত হতে হয়নি। সকাল থেকে টানা বৃষ্টিও সহায়ক হয় ‘লকডাউন’ পালনে। তবে তার মধ্যেও কিছু কিছু জায়গায় দেখা গেল অন্য ছবি। নানা অছিলায় পথে বেরোলেন কিছু বাসিন্দা।

কালনা

সকাল ৭টা নাগাদ বৈদ্যপুর মোড়ে এক সাইকেল আরোহীকে আটকেছিলেন পুলিশকর্মীরা। যুবক এক ডাক্তারের ‘প্রেসক্রিপশন’ বার করে জানান, ওষুধ কিনতে যাচ্ছেন। কিন্তু পুলিশকর্মীদের নজরে পড়ে, ‘প্রেসক্রিপশন’টি অনেক দিনের পুরনো। চেপে ধরতেই যুবক বলেন, ‘‘ভুল হয়ে গিয়েছে বেরিয়ে। বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’’
সকাল ৯টা নাগাদ সোনাপট্টি এলাকায় এক মহিলাকে নিয়ে মোটরবাইকে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। পুলিশ আটকাতেই দাবি করেন, আদালত চত্বরে কাজ রয়েছে, তাই যাচ্ছেন। ‘লকডাউন’-এ আদালত বন্ধ, এ কথা জানাতেই ওই ব্যক্তির জবাব, ‘‘ভুলে গিয়েছিলাম।’’ মৃদু ধমক দিয়ে ফেরত পাঠায় পুলিশ। এর প্রায় আধ ঘণ্টা পরে, চকবাজারে ঢোকার মুখে কয়েকজন ব্যবসায়ী বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। আচমকা পুলিশ আসতে দেখেই দৌড়তে শুরু করেন। এক জনকে ধরে ফেলেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। ক্ষমা চেয়ে নিয়ে ব্যবসায়ীর দাবি, ‘‘বাড়িতে একঘেয়ে লাগায় একটু বেরিয়েছিলাম।’’
সকাল ১০টা নাগাদ কালনার ট্র্যাফিক পুলিশের আধিকারিক আবিদুর রহমান টহলে বেরিয়ে দাঁতনকাঠিতলা এলাকায় কয়েকজনকে আড্ডা দিতে দেখেন। বাকিরা পালাতে পারলেও ধরা পড়ে যাওয়া এক যুবক দাবি করলেন, ধূমপান করতে বেরিয়েছিলেন। পুলিশের ধমক খেয়ে দ্রুত বাড়ির দিকে দৌড় দেন তিনি। খানিকপরেই আরএমসি বাজারে গিয়ে পুলিশ দেখে, এক ব্যবসায়ী চায়ের দোকান খুলেছেন। পুলিশের ধমক খেয়ে ঝাঁপ ফেলে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ভুল করে ফেলেছি। আর এমন হবে না।’’
তবে এ দিন সকাল থেকে সার্বিক ভাবে কালনার চকবাজার, জিউধারার পাইকারি বাজার, খেয়াঘাট-সহ সবই বন্ধ ছিল। এক পুলিশি আধিকারিক বলেন, ‘‘কেউ-কেউ নানা অজুহাতে বাইরে ঘুরে বেড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। তাঁদের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

কাটোয়া

একে ‘লকডাউন’, তার উপরে এ দিনই এক সঙ্গে এলাকার ১৯ জনের করোনা-রিপোর্ট ‘পজ়িটিভ’ আসার খবর— দুইয়ের প্রভাবে দিনভরই রাস্তাঘাট শুনসান রইল কাটোয়ায়। বাজার-দোকান ফাঁকা। চিকিৎসার প্রয়োজনে হাসপাতালে যাতায়াত করা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা ছাড়া, বিশেষ কাউকে দেখা যায়নি পথে। কয়েকজন সকালে সাইকেল, মোটরবাইকে রাস্তায় নেমেছিলেন, বিভিন্ন মোড়ে তাঁদের আটকে প্রয়োজন জানার পরে যাওয়ার অনুমতি দেয় পুলিশ। কাছারি রোড, লেনিন সরণি, স্টেশনবাজার, বাসস্ট্যান্ড, মাধবীতলা, সার্কাস ময়দানের মতো জনবহুল রাস্তা সুনসান ছিল। কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোটেও একই ছবি দেখা গিয়েছে।

বর্ধমান

বর্ধমান শহরে বুধবার থেকে সাত দিন ‘লকডাউন’ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। প্রথম দিন সকালেই বাজার-দোকানে ভিড় দেখা গিয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার দিনভর রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকল। বিশেষ কাউকে বেরোতে দেখা যায়নি। এ দিন রাজ্য জুড়ে ‘লকডাউন’ থাকায় বাজার-দোকানও খোলেনি। জিটি রোড, বিসি রোড, স্টেশনবাজার, কাঞ্চননগর বাজার বন্ধ ছিল। ভোর থেকে সকাল প্রায় ১০টা পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হওয়ার ফলেও রাস্তায় লোকজন নামার সম্ভাবনা কমে যায়। কার্জন গেট, স্টেশন রোড, গোলাপবাগ মোড়, নবাবহাট, তেলিপুকুর, ঘোড়দৌড়চটি-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় লোক যাতায়াত ঠেকাতে যে ব্যারিকেড করা হয়েছিল, সেখানে বুধবার রীতিমতো ব্যস্ত থাকতে হয়েছিল পুলিশকে। এ দিন সে ব্যস্ততা দেখা যায়নি।
জেলা পুলিশের দাবি, এ দিন ‘লকডাউন’ কঠোর ভাবে পালিত হয়েছে। কিছু জায়গায় কয়েকজন অযথা বাইরে বেরনোয় বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত ধরপাকড়ের কোনও খবর নেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus lockdown covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy