ব্যারিকেড করা হয়েছে সুভাষপল্লির রাস্তায়। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
‘লকডাউন’ শুরুর পরেও, লোকজনের যাতায়াত ছিল এই রাস্তা ধরে। কারণ, শহরের কিছু এলাকা থেকে এই রাস্তা দিয়ে সহজে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল বা ‘ডাক্তারপাড়া’ হিসাবে পরিচিত খোসবাগানে যাওয়া-আসা করা যায়। মঙ্গলবার সে রাস্তাতেই রাজ কলেজের মুখে ও রসিকপুরের তিন মাথা মোড়ে বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিয়েছে পুলিশ। ঘেরা হয়েছে ওই রাস্তার সংযোগকারী আশপাশের কয়েকটি গলিও। কারণ, সোমবার রাতে এলাকার এক মহিলার করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে ‘পজ়িটিভ’।
সোমবার রাতেই পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতরের দল ওই মহিলা এবং তাঁর স্বামী, দুই ছেলে ও শাশুড়িকে গাংপুরে বেসরকারি ‘কোভিড’ হাসপাতালে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার সকালে মহিলাকে কাঁকসার ‘কোভিড’ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের চার জন ছাড়াও, তাঁর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগে আসা গাড়ির চালককে গাংপুরের ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার গাড়িতে করে হুগলির উত্তরপাড়া থেকে বর্ধমানে আসেন কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালে নার্স হিসাবে কর্মরত ওই মহিলা। দু’দিন ধরে তিনি বাজার-দোকানও করেছিলেন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় মঙ্গলবার বলেন, ‘‘ওই মহিলা, তাঁর স্বামী বা গাড়ির চালকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংস্পর্শে কারা এসেছেন, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। শৃঙ্খলের শেষ বিন্দু পর্যন্ত পৌঁছতে চাইছি আমরা।’’
নিজে স্বাস্থ্যকর্মী হলেও বাইরে থেকে এসে দোকান-বাজারে যাওয়া, লোকজনের সঙ্গে দেখা করার মতো কাজ ওই মহিলা কী ভাবে করলেন, তা নিয়ে পড়শিদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন। এলাকার বাসিন্দা, কলকাতার এক মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রীর অভিযোগ, ‘‘সাধারণ মানুষের চেয়ে করোনার প্রভাব ওঁর বেশি বোঝা উচিত। উপসর্গ থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে তিনি বাইরে বেরোলেন?’’ স্থানীয় এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘ওঁরা পাঁচ-সাত বছর আগে এখানে বাড়ি কিনে বসবাস করছেন। এর আগে মহিলাকে খুব কম দিনই পাড়ায় দেখা গিয়েছে। অথচ, এই দু’দিনের মধ্যে তিনি রাস্তাঘাটে বেরোলেন। গোটা এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়ে গেল!’’
এ দিন দুপুরে এলাকা পরিদর্শনে যান জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, সিএমওএইচ প্রণববাবু, ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুনেত্রা মজুমদারেরা। ‘গণ্ডিবদ্ধ’ এলাকার এক কিলোমিটার জুড়ে বিভিন্ন গলির মুখে যাতায়াত বন্ধ করেছে জেলা প্রশাসন। প্রতিটি গলির মুখে বাঁশের ব্যারিকেড রয়েছে। সেখানে সিভিক ভলান্টিয়ারেরা পাহারায় রয়েছেন। পুলিশ ও স্বাস্থ্য-কর্তারা বাসিন্দাদের জানান, এলাকা ২১ দিন ‘গণ্ডিবদ্ধ’ থাকবে। এর মধ্যে কেউ এলাকায় ঢুকতে বা বাইরে যেতে পারবেন না। কেউ রাস্তায় বেরোচ্ছেন কি না, তা এ দিন ‘ড্রোন’-এর সাহায্যে দেখার চেষ্টা করেন তাঁরা। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, ‘গণ্ডিবদ্ধ’ এলাকার মধ্যে পড়ছে ৩৬২টি বাড়ি।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘নিয়মিত ‘ড্রোন’-এর মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস দরকার হলে আমাদের ফোন করবেন বাসিন্দারা। আমরা তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।’’ জেলার সীমানায় নজরদারি থাকলেও মহিলা উত্তরপাড়া থেকে বর্ধমানে পৌঁছলেন কী ভাবে? প্রশাসনের কর্তারা জানান, স্বাস্থ্যকর্মীর যাতায়াত আটকানো সম্ভব নয়। সে কারণেই মহিলা ঢুকতে পেরেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy