প্রতীকী ছবি
বোরো ধান কাটা শুরু হলে জেলার বাইরের শ্রমিকদের আসার জন্য বিশেষ কোনও ছাড় বা ‘পাস’-এর বন্দোবস্ত করা যায় কি না, তা জানতে রাজ্য সরকারকে চিঠি দেবেন জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী। সোমবার জেলা প্রশাসনের এক বৈঠকে কৃষি দফতরের তরফে জানানো হয়, দশ-বারো দিনের মধ্যে বোরো ধান কাটার মরসুম শুরু হয়ে যাবে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার সঙ্গে ঝাড়খণ্ড থেকে প্রতি বছর প্রচুর মানুষ চাষের কাজে আসেন। জেলাশাসক বলেন, “কৃষি শ্রমিকের অভাবে বোরো ধান কাটায় যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখব।’’
কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, সেচ ক্যানালগুলিতে ভাল জল থাকায় এ বছর এক লক্ষ ৭০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। সাম্প্রতিক শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে কিছু জায়গায় ফলনে ক্ষতির আশঙ্কা করেছিলেন চাষিরা। এ দিন কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা (প্রশাসন) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, “বলার মতো কিছু ক্ষতি হয়নি। তাই ব্লক অধিকর্তাদের রিপোর্ট করারও নির্দেশ দেওয়া হয়নি।’’
জেলা কৃষি দফতরের দাবি, ‘কম্বাইন্ড হারভেস্টার’ যন্ত্র দিয়ে ধান কাটার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ওই যন্ত্রের সাহায্য এক ঘণ্টায় চার বিঘা জমির ফসল অনায়াসে ঘরে তুলতে পারবেন চাষিরা। তবে যন্ত্রের মাধ্যমে ধান কাটা হলে, পশুখাদ্যের জন্য খড় না পাওয়ার একটা আশঙ্কা থাকে।
মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার এ দিন বলেন, “পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়া, হুগলি, নদিয়া ও দুই মেদিনীপুরে বোরো ধানের চাষ বেশি হয়। এর মধ্যে পূর্ব বর্ধমানে ভিন্ জেলা এমনকি, ঝাড়খণ্ড থেকেও শ্রমিকেরা আসেন। লকডাউনের মধ্যে তাঁরা কী ভাবে আসবেন, কোথায় থাকবেন, ফসল কাটার পরে পরিবহণ ব্যবস্থা, বিক্রি কী ভাবে হবে, তার সমাধানের জন্য মুখ্যমন্ত্রী একটি কৃষি-গোষ্ঠী তৈরি করে দিয়েছেন। তাঁরাই এ ব্যাপারে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ আজ, মঙ্গলবার নবান্নে বৈঠকেও হওয়ার কথা। প্রদীপবাবুর দাবি, বয়স্ক চাষিদেরও মতামত নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, গোটা রাজ্যে তিন হাজারের উপরে ‘কম্বাইন্ড হারভেস্টার’ যন্ত্র রয়েছে। ১,৩৮০টি কেন্দ্র থেকে ওই যন্ত্র চালনার জন্য অনেককেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তবে যন্ত্রের চালকদের অনেকেই ভিন্ রাজ্যের। দু’তরফের আলোচনায় তাঁদের আসার ব্যাপার নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। জমিতে নামার আগে গামছা দু’ভাঁজ করে নাক, মুখে বেঁধে কাজ শুরু করারও পরামর্শ দেন তিনি। জগন্নাথবাবুও জানান, কৃষি-ভর্তুকি নিয়ে তিনশো চাষি ছোট ‘হারভেস্টার’ যন্ত্র কিনেছেন। আরও ছ’শো জনের চাষির কাছে ওই যন্ত্র রয়েছে। শ্রমিকের অভাবে অসুবিধা হবে না। এ দিন রায়না ২ ব্লকের চাষিদের সঙ্গে কথাও বলেন প্রদীপবাবু।
রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পঞ্জাব থেকে কম্বাইন্ড হারভেস্টর যন্ত্র ঢুকে গিয়েছে। চালক-সহ অন্যেরা কলকাতায় ‘কোয়রান্টিন’-এ রয়েছেন। নিয়ম মেনে ঠিক সময়ে তাঁরা ধান বা গম কাটতে চলে যাবেন।’’ জেলা প্রশাসনের হিসাবে, যন্ত্রের সাহায্যে ৫০ শতাংশ ধান কাটা হবে। বাকি ফসল কৃষি শ্রমিকেরা কেটে ঘরে তোলেন। তাঁদের জন্যই জেলাশাসক চিঠি লিখবেন বলে জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy