Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Cyber Crime

‘লকডাউন’-এ বাড়ছে সাইবার-অপরাধ

সতর্কতামূলক ভিডিয়ো তৈরি করে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় প্রচার করা হচ্ছে। কী ভাবে প্রতারকেরা ঠকাচ্ছেন, তা উদাহরণ দিয়ে দেখানো হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২০ ০৫:০৫
Share: Save:

‘লকডাউন’ চলাকালীন চুরি-ডাকাতির মতো দৈনন্দিন অপরাধের সংখ্যা অনেকটাই কমেছে। কিন্তু সাইবার-অপরাধ ঊর্ধ্বমুখী। শুধু ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড নিয়ে প্রতারণা নয়, মোবাইলে ভুয়ো ‘লিঙ্ক’ পাঠিয়েও বিভ্রান্ত করা হচ্ছে, দাবি জেলা পুলিশের। ‘লিঙ্ক’ খুললেই যাবতীয় তথ্য থেকে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত রাখা টাকা দফায় দফায় ‘উধাও’ হয়ে যাচ্ছে।

পরপর এ ধরনের অভিযোগ জমা পড়ায় চিন্তা বেড়েছে পুলিশের। সতর্কতামূলক ভিডিয়ো তৈরি করে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় প্রচার করা হচ্ছে। কী ভাবে প্রতারকেরা ঠকাচ্ছেন, তা উদাহরণ দিয়ে দেখানো হচ্ছে। অচেনা ‘লিঙ্ক’ না খোলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “সাধারণ অপরাধের সংখ্যা লকডাউনে কমে গিয়েছে। তবে বেশ কিছু সাইবার-অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। অনেকগুলি সাইবার-অপরাধের সমস্যা মেটানো গিয়েছে। তার পরেও মানুষকে সতর্ক করার জন্য জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে প্রচার করা হচ্ছে।’’

জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাধারণত প্রতি মাসে চুরি, ডাকাতি, খুন, মহিলা নির্যাতন-সহ অন্যান্য অভিযোগ নিয়ে গড়ে ৭০০-৭৫০টি মামলা রুজু হয় জেলায়। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে জেলায় মামলা সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৭৩০টি ও ৭৫৮টি। মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে ‘লকডাউন’ শুরু হয়। সেই মাসে বিভিন্ন থানা মিলিয়ে জেলায় মামলা রুজু হয় ৬৭৮টি। এপ্রিলে সেই সংখ্যা দাঁড়িয় ৪১৩টিতে। মে মাসেও মামলার সংখ্যা এখনও পর্যন্ত চারশোর ঘরেই। তবে ‘ভার্চুয়াল’ জগতে অপরাধ ক্রমশ বাড়ছে।

পুলিশ জানায়, মার্চে ১২টির মতো প্রতারণার মামলা রুজু হয়েছিল। এপ্রিলে দ্বিগুণের বেশি, ২৫টি প্রতারণার মামলা হয়েছে। মে মাসের চলতি সপ্তাহেই সাতটির মতো প্রতারণার অভিযোগ পেয়েছে বর্ধমানের সাইবার-অপরাধ থানা। বর্ধমান শহরের হাজরামাঠের বাসিন্দা সুনীতা সিংহের অভিযোগ, তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ হাজার টাকা গায়েব। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, এটিএম কার্ড তাঁর কাছেই ছিল। কার্ডের কোনও তথ্যও কাউকে দেননি। শহরের শ্রীপল্লির বাসিন্দা তপনকুমার সাহারও নালিশ, ব্যাঙ্কের অফিসার বলে ফোন করে এটিএম তথ্য না দিলে, অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ফোন আসে তাঁর কাছে। ভয় পেয়ে তিনি সব তথ্য তুলে দেওয়া মাত্র ৫০ হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায়।

শুধু সাধারণ মানুষ নয়, প্রতারিতদের মধ্যে পুলিশ-ব্যাঙ্ক কর্মীও রয়েছেন। জানা গিয়েছে, বর্ধমানের এক পুলিশ কর্মীর কাছে একটি ‘অ্যাপ্লিকেশন’-এর মাধ্যমে ‘অনলাইনে’ টাকা পাঠানোর কথা বলা হয়। ‘অ্যাপ্লিকেশন’ খুলতেই সাড়ে ১২ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়, অভিযোগ। এক ব্যাঙ্ক-কর্মীর কাছেও অনলাইনে ছাড়ে কেনাকাটার প্রস্তাব যায়। মেসেজে ‘লিঙ্ক’ পাঠানো হয়। ‘লিঙ্ক’টি খুলতেই পরপর টাকা কাটতে থাকে বলে অভিযোগ। ভাতারেও এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া, গ্যাসের ভর্তুকি, গাড়ি বিক্রির নাম করেও টাকা হাতানোর অভিযোগ রয়েছে।

জেলা পুলিশের দাবি, সবচেয়ে চিন্তা মেসেজে ‘লিঙ্ক’ পাঠিয়ে অনলাইনে কেনাকাটার জন্য বারবার ফোন করে প্রলোভন দেওয়ার বিষয়টি। অনেকেই ফাঁদে পা দিয়ে ‘লিঙ্ক’ খুলে বিপদ ডেকে আনছেন। পুলিশের দাবি, ‘লিঙ্ক’ খুললেই পরিচিত অনলাইন বিকিকিনির ‘ভুয়ো’ ওয়েবসাইটে ঢুকে পড়ছেন গ্রাহক। জিনিস পছন্দ করে কার্ডে টাকা মেটানো হচ্ছে। কিন্তু জিনিস তো আসছেই না, ওই কার্ড থেকে বারবার টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “মেল অ্যাকাউন্টও হ্যাক করছেন প্রতারকরা। ঝাড়খণ্ডের জামতাড়া, এ রাজ্যের আসানসোল ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্যাং জড়িত আছে এতে। তাদের চিহ্নিতও করার কাজ শেষ। এ বার তল্লাশি চালানোর পালা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cyber Crime Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy