আসানসোলের টিপি মার্কেট। ছবি: পাপন চৌধুরী।
ঠেসাঠেসি ভিড়, মাস্ক কেউই প্রায় পরেননি। এমন অবস্থাতেই কেনাকেটা চলছে নিয়ামতপুর চৌমাথা, আসানসোল বাজার, টিপি মার্কেটে। তবে আসানসোল পুরসভা মোড়, চৌমাথায় চিত্রটা খানিকটা আলাদা। মঙ্গলবার দিনভর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেই এই ছবি দেখা গেল। প্রায় কোথাও প্রশাসনের ‘কড়া নজরদারি’ সে ভাবে চোখে পড়েনি। একই চিত্র বরাকর, বার্নপুর, রূপনারায়ণপুর-সহ নানা এলাকায়। জেলার কোভিড পরিস্থিতি এবং তার মধ্যে এই চিত্র চিন্তায় রাখছে চিকিৎসক থেকে প্রশাসনের
কর্তা, সকলকেই।
গত শনিবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছিল, এই মুহূর্তে জেলায় সংক্রমণের হার ছিল প্রায় ২০ শতাংশের (অর্থাৎ, জেলায় একশো জনের পরীক্ষায় কত জন সংক্রমিত) আশপাশে। তার পরে, ওই দিন নতুন করে জেলায় কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন ৭৪৫ দিন। রবিবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৭০ জন!
এই পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়েই আসানসোল বাজারে এসেছিলেন পেশায় রেলকর্মী কল্যাণশঙ্কর সেনগুপ্ত। থুতনিতে ঝুলছে ‘মাস্ক’। গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে বাজার করছিলেন। মাস্কের এই হাল কেন প্রশ্ন করতেই জবাব, ‘‘দম নিতে অসুবিধে হচ্ছে। আর আমি দূরত্ব-বিধি কী করে মানব? পাশের জনও যে মানছেন না।’’ বাজারের ভিড়ে দূরত্ব-বিধি মানার উপায়ও নেই। কারণ, প্রথম বার করোনা সংক্রমণের সময়ে ‘সার্কেল’ আঁকা হচ্ছিল দোকানগুলির সামনে। এ বার সে সব নেই। কেন নেই? নিয়ামতপুর স্টেশন রোডের ব্যবসায়ী পবন ডোকানিয়ার জবাবু, ‘‘এক সময় এঁকেছিলাম। আঁকব আবার। তবে সার্কেল আঁকলেও ক্রেতারা ঘাড়ে চাপবেন, এমনটাই অভিজ্ঞতা।’’
তবে এমন ‘অভিজ্ঞতা’র বদল হওয়াটা জরুরি, মনে করছেন চিকিৎসকেরা। পাশাপাশি, চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্তের মতে, ‘‘প্রশাসনও কিছু কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ ও সেগুলি কার্যকর করার ব্যবস্থা করুক। না হলে, কিন্তু আরও বিপদ আসন্ন।’’
যদিও ‘নজর নেই’ প্রশাসনের, এমনটা মানতে চাননি কর্তারা। কোভিড-পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝতে সম্প্রতি আসানসোল ও দুর্গাপুরে দু’টি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে নেওয়া কিছু সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হচ্ছে বলে জানান জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) অনুরাগ শ্রীবাস্তব। জেলা প্রশাসন ও আসানসোল পুরসভা স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার, মাস্ক পরা এবং দূরত্ব-বিধি রক্ষা করার অনুরোধ জানিয়ে মাইকে প্রচারও করছে। সেই সঙ্গে পুর-কমিশনার নীতীন সিঙ্ঘানিয়া বলেন, ‘‘পুরসভার ১০৬টি ওয়ার্ডের প্রতিটি জায়গায় বিশেষ নজরদারি চলছে। প্রতিটি বাজার এলাকা ও শহরাঞ্চলের শপিং-মল, বিপণিগুলিতে দিনে তিন বার করে জীবাণুনাশক ছড়ানো হচ্ছে। তা ঠিক মতো হচ্ছে কি না দেখতে মনিটরিং দল গঠন করা হয়েছে।’’
পশ্চিমবঙ্গ কোভিড ম্যানেজমেন্ট টিমের পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার কো-অর্ডিনেটর সমরেন্দ্রকুমার বসু বলেন, ‘‘জেলায় সংক্রমণের হার রীতিমতো উদ্বেগের। জন-সচেতনতা দ্রুত তৈরি না হলে, আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে আমাদের সবার জন্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy