ফাইল চিত্র।
করোনা-আবহে দাঁড়ি পড়ল কাটোয়ার ঐতিহ্যবাহী কার্তিক লড়াইয়ের শোভাযাত্রায়। সোমবার সন্ধ্যায় পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকের পরে, এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয় মহকুমা প্রশাসন। উদ্যোক্তা ও শহরের বাসিন্দাদের বেশির ভাগেরই সায় রয়েছে এই সিদ্ধান্তে। যদিও শোভাযাত্রা না হলেও মণ্ডপে স্বাস্থ্য-বিধি মানা হবে কি না, ‘থাকা’ বা মণ্ডপ গড়ার সময়ে শিল্পীদের সচেতন থাকা, প্রতিমা দর্শনের ভিড় কতখানি আটকানো যাবে, সে সব প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। প্রশাসনের যদিও দাবি, দুর্গাপুজোর মতোই মণ্ডপের থেকে দর্শকদের নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়াতে হবে। রাস্তাঘাটে ভিড় এড়াতেও যথা সম্ভব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।মহকুমাশাসক (কাটোয়া) প্রশান্তরাজ শুক্ল বলেন, “করোনা- অতিমারি রুখতে এ বার কার্তিক লড়াইয়ের শোভাযাত্রা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও রকম আড়ম্বর করা যাবে না। নির্দেশ না মানলে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ দিন বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ কাটোয়ার শহরের সংহতিমঞ্চে ওই সভা হয়। সেখানে ছিলেন কাটোয়ার বিধায়ক তথা পুরসভার প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ধ্রুব দাস, এসডিপিও ত্রিদীপ সরকার প্রমুখ। সভায় অনুমোদন প্রাপ্ত পুজো কমিটিগুলিকেও ডাকা হয়। সেই মতো ৮৯টি পুজো কমিটির কর্মকর্তারা হাজির ছিলেন। সভার শুরুতেই করোনা-অতিমারি রুখতে কার্তিক পুজো নিয়ে কমিটিগুলির ভাবনা জানতে চাওয়া হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, বেশির ভাগ পুজো কমিটিই শোভাযাত্রা বন্ধের পক্ষে ছিল।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনার জন্য এ বছর শুধু নিয়ম রক্ষার পুজো করতে বলা হয়েছে। ছোট মণ্ডপ করার অনুমতি দেওয়া হবে। দুর্গাপুজোর মতই যাবতীয় স্বাস্থ্য-বিধি মেনে চলতে হবে। নিদিষ্ট দূরত্বে মণ্ডপের সামনে ১৫ থেকে ২০ জনের বেশি দর্শনার্থী দাঁড়াতে পারবেন না। মাস্ক ছাড়া, রাস্তায় বেরোলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া, বারে বারে স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। মণ্ডপ থেকে শুরু করে রাস্তায় কোনও রকম ভিড় করা যাবে না।
কাটোয়ার অক্সিজেন ক্লাবের সম্পাদক বাবুলাল শেখ বলেন, “স্বাস্থ্য-বিধি মেনে কোনও রকমে পুজোটুকু করে শোভাযাত্রায় যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমরা আগেই নিয়েছিলাম। লড়াইয়ের শোভাযাত্রা বন্ধ করার যে সিদ্ধান্ত প্রশাসন নিয়েছে, তাতে আমরা খুশি। আমরা আগামী বছর দেবসেনাপতির আরাধনা আরও জাঁকজমক করে করতে পারব আশা করছি।’’ ঘোষেশ্বরতলা যুবগোষ্ঠীর সম্পাদক প্রশান্ত গড়াইও বলেন, “প্রতি বছর নানা থিম করি। দর্শনার্থীদের ভিড়ও ভাল হয়। কিন্তু এ বার পুজো করলেও কোনও আড়ম্বর থাকবে না।’’ শহরের এক বাসিন্দা মানস ভট্টাচার্যও বলেন, “কার্তিক লড়াই কাটোয়ার ঐতিহ্য। কিন্তু শোভাযাত্রায় যে পরিমাণ ভিড় হয় তাতে রাশ টানা না গেলে, সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা প্রবল। প্রশাসনের সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।’’
কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “পুজো হবে, তবে এ বার লড়াইয়ের শোভাযাত্রা হবে না। সকলকেই পুজোর সময় আরও সচেতন হয়ে চলতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy