প্রতীকী ছবি।
করোনা-পরিস্থিতিতে যৌনকর্মী এবং তাঁদের পরিবারগুলিকে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে এগিয়ে এল ‘ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব পেডিয়াট্রিক্স’ নামে একটি চিকিৎসক সংগঠন। বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের নিয়ামতপুরের লছিপুর যৌনপল্লিতে ‘কেভিড ক্লাব’ তৈরি করেছেন সংগঠনের সদস্য আসানসোলের চিকিৎসকদের একাংশ।
এই উদ্যোগ কেন, তা জানান সংগঠনের কোল ফিল্ড শাখার চেয়ারপার্সন তথা আসানসোলের ইএসআই হাসপাতালের সুপার অতনু ভদ্র। তাঁর মতে, করোনা-পরিস্থিতিতে শুধু টিকা কবে আসবে, সে অপেক্ষায় বসে থাকলে হবে না। জরুরি, আক্রান্ত ব্যক্তির সময়মতো চিকিৎসা শুরু করা। অতনুবাবুর কথায়, ‘‘আর্থিক ও সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া এলাকায় সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাই, ঠিক কোন সময়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে, তা অনেক সময়েই এ সব এলাকার মানুষ বুঝতে পারেন না। আবার বুঝতে পারলেও প্রশাসনের কাছে যাওয়ার ক্ষেত্রে জড়তা থাকে। তাই এই ক্লাব।’’ আগামী দিনে, আরও কিছু এলাকায় এমন ক্লাব তৈরি করা হবে বলে জানান ওই ডাক্তারেরা।
কী ভাবে কাজ করবে ক্লাবটি? চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্ত জানান, ক্লাবের সদস্যদের কয়েকটি ‘অক্সিমিটার’ দেওয়া হয়েছে। কী ভাবে ওই যন্ত্রের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাসের পরিমাপ করা হবে, অক্সিজেনের মাত্রা কত থাকলে তা অস্বাভাবিক, প্রাথমিক কী-কী পদক্ষেপ জরুরি— এ সব বিষয়ে চিকিৎসকেরা সদস্যদের প্রশিক্ষণও দিয়েছেন। ওই ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্লাব থেকেই পাওয়া দস্তানা, ‘মাস্ক’ পরে, সদস্যেরা নিয়মিত এলাকার প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের কাছে গিয়ে অক্সিমিটারের সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাসে অক্সিজেনের মাত্রা মেপে খাতায় লিখে রাখবেন। অস্বাভাবিক কিছু নজরে পড়লে চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
অরুণাভবাবু বলেন, ‘‘আমরা নিয়মিত ক্লাবের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে উপযুক্ত পরামর্শ দেব।’’ এ দিনের অনুষ্ঠান থেকে কোভিড-সচেতনতাও প্রচার করা হয়।
চিকিৎসকেরা জানান, এ দিনই কোভিড ক্লাবের সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন স্থানীয় ১২ জন যুবক। ক্লাবের অন্যতম সদস্য ‘দুর্বার সমন্বয় কমিটি’র স্থানীয় শাখা সম্পাদক রবি ঘোষ বলেন, ‘‘এই এলাকায় ৪৬২ জন যৌনকর্মী-সহ ১,২৩০ জন রয়েছেন। ডাক্তারদের এই উদ্যোগে তাঁরা সবাই উপকৃত হবেন।’’
এই এলাকাতেই কেন শুরু হল এমন উদ্যোগ? চিকিৎসকদের ব্যাখ্যা, এই এলাকার বাসিন্দারা সাধারণত বাইরে যান না। স্বাস্থ্য সচেতনতার ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরামর্শ পাওয়ার ক্ষেত্রেও তাঁদের সমস্যা রয়েছে। তাই, এই এলাকাটিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, এই এলাকায় সাম্প্রতিক অতীতে কোভিড আক্রান্তের খবর মিলেছিল বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়। তাই বাড়তি সতর্কতা হিসেবে এই উদ্যোগ।
চিকিৎসকদের এই উদ্যোগ সম্পর্কে জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজির প্রতিক্রিয়া, ‘‘এমন উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। কোভিড মোকাবিলায় এমন আরও উদ্যোগ প্রয়োজন।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy