Advertisement
১৬ জানুয়ারি ২০২৫
Saline Controversy

জমা স্যালাইন কমছে, চিন্তা সরবরাহ নিয়ে

প্রয়োজনের ভিত্তিতে স্থানীয় ভাবে স্যালাইন কিনে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ব্যবহার করা হচ্ছিল বলেও জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যালের ঘটনার পরে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল-এর সমস্ত স্যালাইন ও অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর।

— প্রতীকী চিত্র।

সৌমেন দত্ত
শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:০২
Share: Save:

মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতি-মৃত্যু ঘটনার অন্তত ছ’মাস আগেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল-এর ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ (আরএল) স্যালাইন নেওয়া বন্ধ করেছিল পূর্ব বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতর। প্রয়োজনের ভিত্তিতে স্থানীয় ভাবে স্যালাইন কিনে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ব্যবহার করা হচ্ছিল বলেও জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যালের ঘটনার পরে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল-এর সমস্ত স্যালাইন ও অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, সরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে জেলায় প্রতি মাসে সাধারণ স্যালাইন ও ‘আরএল’ স্যালাইন লাগে দেড় লাখের মতো। এই বিপুল পরিমাণ স্যালাইন কী ভাবে জোগাড় করা হবে, তা নিয়ে চিন্তিত জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও বর্ধমান মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ।

বর্ধমান মেডিক্যাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন অন্তত হাজার খানেক ‘আরএল’ স্যালাইন প্রয়োজন হয়। অন্য স্যালাইন দু’টি করে সংস্থা সরবরাহের দায়িত্বে থাকলেও সরকারি দরপত্র অনুযায়ী ‘আরএল’ স্যালাইন শুধু মাত্র ওই সংস্থাই ব্যবহার করত। নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের সময়ে প্রয়োজন হলে কী ভাবে ‘আরএল’ স্যালাইন মিলবে, তা নিয়ে চর্চা চলছে মেডিক্যালে। মেডিক্যালের সুপার তাপস ঘোষ বলেন, “আপাতত ন্যায্যমূল্যের দোকান থেকে ‘নন-ক্যাটালগ’ আইটেম হিসেবে ‘আরএল’ স্যালাইন কিনে বিভিন্ন ওয়ার্ডে দেওয়া হচ্ছে। চার-পাঁচ দিনের ওই স্যালাইন মজুত রয়েছে। ওই স্যালাইন সরবরাহের জন্য ন্যায্যমূল্যের দোকানকে চাপ দেওয়া হচ্ছে।”

জেলার দু’টি মহকুমা হাসপাতাল ছাড়াও, পাঁচটি গ্রামীণ, একটি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও ২১টি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ‘আরএল’ স্যালাইন ও সাধারণ স্যালাইন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের গুদাম থেকেই সরবরাহ করা হয়। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি মাসে ‘আর এল’ ও সাধারণ স্যালাইন প্রয়োজন হয় প্রায় ৩০ হাজার করে। ‘আরএল’-এর সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রও সমস্যায় পড়েছে। আবার সাধারণ স্যালাইন সরবরাহকারী একটি সংস্থার বরাত বাড়ায় পর্যাপ্ত সরবরাহ করতে পারছে না তারা। ফলে, জেলা জুড়ে স্যালাইনের সমস্যা তৈরি হয়েছে।

চিকিৎসকদের একটি সংগঠনের নেতা তথা জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, “এই জেলায় অন্তত ১০০ জন চিকিৎসক ও বেশ কয়েকটি হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আধিকারিকেরা ওই সংস্থার স্যালাইন নিয়ে প্রশ্ন তুলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে অভিযোগ জানিয়েছিলেন।” জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ছ’মাস আগে ওই সংস্থার স্যালাইন কেনা বন্ধ ছিল। সেই সংস্থার মজুত স্যালাইন কিছু দিন ব্যবহারের পরে মহকুমা হাসপাতাল ও জেলা স্বাস্থ্য দফতর ‘নন ক্যাটাগরি আইটেম’ থেকে অন্য সংস্থার স্যালাইন কিনে ব্যবহার করছিল। পুরো ব্যবস্থাই ছিল ‘অলিখিত’। জেলায় প্রায় ৫০ হাজারের মতো ওই সংস্থার স্যালাইন পড়ে রয়েছে। সেগুলি একত্রিত করে জেলার গুদামে তালাবন্ধ আবস্থায় রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সিএমওএইচ জয়রাম হেমব্রম বলেন, “এ বার জেলার সঙ্গে হাসপাতাল সুপারদের স্যালাইন কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” জেলা থেকে আপাতত দু’সপ্তাহের জন্য ৩০ হাজার বোতল স্যালাইন কেনার বরাত দেওয়া হয়েছে। এ দিকে, স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার বিকেলে ‘আরএল’ স্যালাইন সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অন্য একটি সংস্থাকে। তবে তাদের স্যালাইন পেতে অন্তত ২১ দিন লাগবে। তার আগে ‘স্যালাইন সঙ্কট’ কাটার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Saline Controversy Saline Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy