প্রতীকী ছবি।
ফের নিয়োগে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠল পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল পুরসভায়। এ বার অভিযোগের আঙুল উঠেছে ৯০ নম্বরের ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর শক্তি রুইদাসের বিরুদ্ধে। একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যার দাবি, ‘নির্মল সাথী’ প্রকল্পে কাজ করার জন্য তাঁর নাম পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগ, ক্ষমতাবলে কাউন্সিলর তাঁর মেয়ে ও এক পরিচিতের স্ত্রীকে নিয়োগের ব্যবস্থা করেছেন। ওই সদস্যা এর প্রতিকারের আবেদন জানিয়েছেন রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের কাছে। তাপস জানান, যদি এমনটা হয়ে থাকে, তা হলে ঘোরতর অন্যায় হয়েছে। জন-প্রতিনিধিদের মনে রাখা দরকার, তাঁরা আত্মত্যাগ করতে না পারলে নির্বাচনে জিততে পারবেন না।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘নির্মল সাথী’ প্রকল্পে কাজ করার জন্য (বাড়ি বাড়ি গিয়ে বোঝাতে হবে, কী কারণে বাসিন্দারা পুরসভার তরফ থেকে পাঠানো বালতিতে আবর্জনা রাখবেন। যা বর্জ্য সংগ্রাহকেরা নিয়ে যাবেন) বরো কার্যালয় থেকে পুর-এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের নামের তালিকা আসানসোলে পুর-কার্যালয়ে পাঠানো হয়। তার পর সেখানে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরে নিয়োগ করা হয়। পুরসভা সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, প্রশিক্ষণ পর্ব মিটে গেলে কাউন্সিলরদের পরামর্শে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
৯০ নম্বর ওয়ার্ডের হিলবস্তির বাসিন্দা শ্রাবণী চন্দ্র দাবি করেন, তিনি দীর্ঘদিন একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য। তাঁর অভিযোগ, অথচ, তাঁকে কোনও কাজে নিযুক্ত করা হয়নি। এমনকি, ‘নির্মল সাথী’ প্রকল্পে প্রশিক্ষণের জন্য দু’নম্বর বরো কার্যালয় থেকে তাঁর নাম পুর-কার্যালয়ে পাঠানো হয় এবং গত ৮ জুন তিনি প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাঁর দাবি, গত ১০ নভেম্বর তিনি জানতে পারেন, তাঁকে নিয়োগ করা হয়নি। তার পরিবর্তে স্থানীয় কাউন্সিলর শক্তি রুইদাসের মেয়ে ও শক্তির বন্ধুর স্ত্রীকে এই কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। শ্রাবণী জানান, এই ‘অনিয়মের’ বিরোধিতা করে ও প্রতিকারের দাবিতে তিনি সম্প্রতি রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ও পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি বলেন, “দু’জনেই প্রতিকারের আশ্বাস দিয়েছেন। তাতে আমি আশাবাদী।”
এ দিকে, অভিযুক্ত কাউন্সিলর শক্তির সঙ্গে চেষ্টা করে মঙ্গলবার দুপুরে ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়। তিনি বলেন, “পুরসভা থেকে প্রত্যেক কাউন্সিলরকে বলা হয়েছিল, এই প্রকল্পে কাজ করার জন্য এক হাজার লোক পিছু এক জন করে নাম দিতে। আমি দু’জনের নাম দিয়েছি। মেয়ে ও আমার বন্ধুর স্ত্রীর।” তাঁর দাবি, “এলাকাবাসী জানেন, আমি এবং আমার বন্ধুর পরিবার গরিব।” এর বেশি কিছু বলেননি শক্তি।
এই অভিযোগকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে গত মে মাসে পুরসভার তত্ত্বাবধানে থাকা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির জন্য স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। যা নিয়ে সরব হয়েছিলেন পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী, বিজেপির চৈতালি তিওয়ারি। ফের নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় চৈতালির মন্তব্য করেন, “এটা নতুন বিষয় নয়।খুঁজলেই এমন অনেক পাওয়া যাবে। আমিও ইতিমধ্যে স্বচ্ছ নিয়োগের দাবিতে সরব রয়েছি।” সে বার অবশ্য মেয়র বিধান উপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও দুর্নীতির আশ্রয় নেওয়া হয়নি। নির্মল সাথী প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, “একটি অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy