—প্রতীকী চিত্র।
রক্ত কম থাকায় মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়তেন। তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করে রক্ত দিতে হত। মাসখানেক আগেও কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন দাঁইহাটের ডাকাত কালীতলার বাসিন্দা অঞ্জলি সর্দার (৬২)। রক্ত দেওয়া হলে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। কিন্তু, এ বার আর বাড়ি ফেরা হল না তাঁর। পরিবারের অভিযোগ, জরুরি বিভাগে চিকিৎসা না করে বহির্বিভাগে পাঠানো হয়। চিকিৎসকদের বার বার হিমগ্লোবিনের ঘাটতির কথা জানানোর পরেও চিকিৎসায় গাফিলতি করা হয়, অভিযোগ তাঁদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে
দেখা হচ্ছে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সকালে বাড়িতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই বৃদ্ধা। মহকুমা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয় তাঁকে। অভিযোগ, সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীর অবস্থা খারাপ দেখা সত্বেও বহির্বিভাগে টিকিট কেটে চিকিৎসা করানো কথা বলে পাঠিয়ে দেন। তীব্র রোদ, গরমে টিকিট করতেই প্রায় দু’ঘণ্টা চলে যায়। ততক্ষণে রোগীর অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে পড়ে। মৃতার ছেলে ভগীরথ সর্দারের দাবি, টিকিট কেটে আসতে আসতেই বহির্বিভাগের করিডরে ঢলে পড়েন বৃদ্ধা। হাসপাতালের গাফিলতিতেই এই ঘটনা, অভিযোগ করেছেন তাঁরা। ক্ষোভ ছড়ায় অন্য রোগীর পরিজনেদের মধ্যেও।
ভগীরথ জানান, ওই বৃদ্ধা আগেও বেশ কয়েক বার কলকাতা ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে হিমগ্লোবিনের ঘাটতি নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়েছিলেন, অসুস্থ বোধ করলেই কাছাকাছি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে যেতে। সেই মতো এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ ওই বৃদ্ধাকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে আনেন তাঁরা। ভগীরথ বলেন, ‘‘জরুরি বিভাগের চিকিৎসক দুর্ব্যবহার করে আউটডোরে পাঠিয়ে দেন। মায়ের হিমগ্লোবিন ৩.৫ বলার পরেও কান দেননি। গরমে দু’ঘণ্টা দাঁড়িয়ে টিকিট করাই। মা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালের গাফিলতিতেই মায়ের মৃত্যু হল। বিহিত চেয়ে সুপারকে লিখিত অভিযোগ করেছি।’’ মৃতার বৌমা প্রভাতী সর্দারের ক্ষোভ, ‘‘নামেই সরকারি হাসপাতাল। কিন্তু গরিবদের চিকিৎসকদের একাংশ মানুষ হিসেবে গণ্য করেন না। জরুরি বিভাগে থাকা চিকিৎসক রোগীকে দেখলেনই না! একটু মানবিক হলেই প্রাণটা বেঁচে যেত।’’
কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে সুপার সুশান্তবরণ দত্ত বলেন, “ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। হাসপাতালে এসে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে, মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। রোগীর অবস্থা খারাপ থাকা সত্ত্বেও কেন ভর্তি নেওয়া হল না, তা নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy