Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

চলল লাঠি, ফাটল শেল

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ শতাব্দী শিশু উদ্যান থেকে বিজেপির প্রায় হাজার তিনেক যুবকর্মী মিছিল করে পুরসভার দিকে আসতে শুরু করেন।

ধুন্ধুমার: আসানসোলে শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।

ধুন্ধুমার: আসানসোলে শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৯ ০৬:১১
Share: Save:

উন্নয়নে বৈষম্য, ‘কাটমানি’ ও দুর্নীতির অভিযোগে ভারতীয় জনতা যুবমোর্চার আসানসোল পুরসভায় স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শুক্রবার তেতে উঠল আসানসোল। মোর্চার বিরুদ্ধে অনুমতি না নিয়ে কর্মসূচি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, অনুমতি নিয়েই কর্মসূচি চলছিল। তাতে বাধা দিয়ে লাঠি চালায় ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় পুলিশ। হামলা চালায় তৃণমূলও। অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ শতাব্দী শিশু উদ্যান থেকে বিজেপির প্রায় হাজার তিনেক যুবকর্মী মিছিল করে পুরসভার দিকে আসতে শুরু করেন। সুভাষ প্রেক্ষাগৃহের সামনে পুলিশের ব্যারিকেড থাকলেও তা ভেঙে এগিয়ে যান মিছিলকারীরা। ইস্টার্ন রেলওয়ে স্কুল লাগোয়া দ্বিতীয় ব্যারিকেডের সামনে মিছিল পৌঁছলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় যুবকর্মীদের। এক সময়ে দেখা যায়, ওই ব্যারিকেড ভেঙেও এগিয়ে যান যুবকর্মীরা।

পুলিশের দাবি, এই সময়ে তাঁদের তাক করে ইট, পাথর ছোড়েন ওই কর্মীরা। ভাঙচুর চালানো হয় পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়িতেও। সেই সময়ে একটি বোমা ফাটারও আওয়াজ পাওয়া যায়। এর পরে পুলিশকে তাড়া করতেও দেখা যায় ওই কর্মীদের। তবে বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ, সেই সময়ে পুলিশ তাঁদের উপরে লাঠি চালায়। ফাটানো হয় ১২ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল। এর পরে ছত্রভঙ্গ হয়ে যান বিজেপির যুবকর্মীরা। সেই সময়েই পুরসভায় চলা রক্তদান শিবির থেকে বেরিয়ে এসে এক দল তৃণমূলকর্মী হকি স্টিক, লাঠি হাতে তাঁদের উপরে চালায় বলে বিজেপি কর্মীদের অভিযোগ। মুহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এলাকা। বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাট। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, ‘‘আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে তৃণমূল ও পুলিশ যৌথ ভাবে লাঠি চালিয়েছে। আমাদের সতেরো জন কর্মী জখম হন।’’ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

তবে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘কোনও সংঘর্ষ হয়নি। পুলিশ আইনভঙ্গকারীদের সরিয়ে দিয়েছে। মৃদু লাঠি চালানো হয়। এখনও কেউ গ্রেফতার হননি। ঘটনার তদন্ত চলছে। পুরো ঘটনায় সাত জন পুলিশকর্মী জখম হয়েছেন।’’

এই ঘটনার পরেই কর্মসূচির অনুমতি নিয়ে চাপানউতোর তৈরি হয়েছে বিজেপি এবং তৃণমূলে। বিজেপি নেতা লক্ষ্মণবাবুর দাবি, ‘‘দশ দিন আগে স্মারকলিপি দেওয়া হবে জানিয়ে, পুরসভার থেকে অনুমতি নেওয়া হয়।’’ তবে পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির দাবি, ‘‘অনুমতি তো দূরঅস্ত, স্মারকলিপি দেওয়া হবে, সেটাও আগাম জানানো হয়নি।’’ তিনি আরও জানান, শুক্রবার সকালে পুলিশের কাছ থেকে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। মেয়রের দাবি, ওই সংগঠনকে বলা হয়, যে কোনও পাঁচ জন প্রতিনিধি পুরসভায় এসে স্মারকলিপি জমা দিতে পারেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।

তবে এই যাবতীয় গোলমালের জন্য বিজেপি নেতৃত্ব জিতেন্দ্রবাবুকেই দায়ী করেছেন। ট্যুইটারে আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ‘বিজেপি আসানসোল’-এর পোস্ট রিট্যুইট করেন। তাতে লেখা, ‘‘...সমস্ত ঘটনার মূলে যিনি তিনি আর কেউ না আমাদের আসানসোলের মেয়র শ্রী জিতেন্দ্র তিওয়ারি।’’ অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি ও বাবুলের বিরুদ্ধে অশান্তি পাকানোর অভিযোগ করে পরে পাল্টা মিছিল করেন জিতেন্দ্রবাবু।

কর্মসূচি ঘিরে এ দিন সকাল থেকেই শহরে পুলিশি তৎপরতা ছিল নজরে পড়ার মতো। সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই জিটি রোডে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। যানবাহনগুলিকে আশ্রম মোড় দিয়ে ঘুরিয়ে রেলের রাস্তা ধরে লোকো মাঠের পাশ দিয়ে বার করা হয়। এর জেরে সমস্যায় পড়েন শহরবাসী।

অন্য বিষয়গুলি:

Asansole municipality TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy