পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার বনকাটি পঞ্চায়েতের বসুধা এলাকার ভোটকেন্দ্রে সোমবার। — নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল সাতটি, বামেরা ১৬০টি বুথে পুনর্নির্বাচন চেয়েছিল। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে সোমবার জেলার ছ’টি বুথে ফের ভোট হল। সিপিএম কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অভিযোগ করছে, যেখানে-যেখানে তাঁরা তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’ প্রতিরোধ করেছিলেন, মানুষ ভোট দিয়েছিলেন, সেখানেই পুনর্নির্বাচন হল। যদিও প্রশাসন এ বিষয়ে মন্তব্য করেনি। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
পঞ্চায়েত ভোটের দিন, শনিবার জেলার বেশ কিছু জায়গায় বাম-প্রতিরোধ দেখা গিয়েছে। এই প্রতিরোধ চিত্রে এগিয়ে কাঁকসা ব্লক। সোমবার কাঁকসার আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের ১৪৪, ১৪৫ ও ১৫১ নম্বর বুথে, বনকাটি পঞ্চায়েতের ১৯ ও ২০ নম্বর, জামুড়িয়ার চিঁচুড়িয়া পঞ্চায়েতের ৪২ নম্বর বুথে ফের ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এই ছ’টি বুথে শনিবার ভোটের দিন শাসক দলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে মূলত বামেদের নেতৃত্বেই ‘প্রতিরোধ’ হয়।
যদিও, বিরোধীদের অভিযোগ, বহিরাগতদের এনে কাঁকসা ব্লকের ওই বুথগুলিতে ভোট লুটের চেষ্টা করা হয়। তাঁদের দাবি, সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয় শাসক দলকে। ভাঙচুর, মোটরবাইক ও তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি তারক বাউড়ির গাড়িতে আগুন ধরানোর ঘটনা ঘটেছিল। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বুদ্ধদেব রায়, বসুধার তৃণমূল প্রার্থী সঞ্জয় অধিকারী-সহ বেশ কয়েক জন তৃণমূল কর্মী আহতও হন। এ দিকে, চিঁচুড়িয়ায় ওই বুথে ভোটের প্রায় শেষের দিকে কয়েক জন বহিরাগত আসে ভোট লুট করতে। সেখানেও প্রতিরোধ হয়। বিরোধীদের দাবি, স্বাভাবিক ভাবে এই এলাকাগুলিতে ভোট লুট করতে পারেনি তৃণমূল। সাধারণ মানুষ নিজের পছন্দ মতো দলকে ভোট দিয়েছিলেন। অথচ, সে সব বুথেই ফের ভোট করার নির্দেশ দেওয়া হল।
সিপিএমের দাবি, তাঁদের তরফে কাঁকসা ব্লকে ১৯টি বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন মানুষের সঙ্গে প্রহসন করেছে। দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডল বলেন, “নির্বাচন কমিশন কার্যত শাসক দলের হয়ে কাজ করছে। যে ভাবে ভোটের দিন একের পর এক বুথ লুট করেছিল তৃণমূল, তা কমিশন দেখতে পায়নি। আর যেখানে মানুষ প্রতিরোধ গড়ে ভোট দিতে পেরেছিলেন, সেখানে ফের ভোট হল।”
এ দিন আমলাজোড়া পঞ্চায়েতের তিনটি বুথে সিপিএম ও বিজেপির কোনও পোলিং এজেন্ট ছিল না। সিপিএমের অভিযোগ, রবিবার রাত থেকে আমলাজোড়ার বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূলের লোকজন। বহু মানুষ ঘরছাড়া। সে কারণে এ দিন দলের কেউ ভোটকেন্দ্রে যাননি। বিজেপির বর্ধমান (সদর) সহ-সভাপতি রমন শর্মার মন্তব্য, “রাজ্য জুড়ে ভোটের নামে লুট চালিয়েছে শাসক দল। বাদ যায়নি কাঁকসাও। এটা নির্বাচনের নামে প্রহসন চলছে।” যদিও বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে, তৃণমূলের কাঁকসা ব্লক সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্যের দাবি, “কাঁকসা-সহ জেলার নানা প্রান্তে সিপিএম ও বিজেপি মিলে সন্ত্রাস চালিয়েছে। আর এ দিন হার নিশ্চিত জেনেই নাটক করছেন বিরোধীরা। প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়েও কোনও প্রশ্ন উঠতে পারে না।”
বামের অভিযোগ প্রসঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) এস অরুণ প্রসাদের সঙ্গে। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। সোমবার রাত পর্যন্ত জবাব মেলেনি মেসেজেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy