এই পোস্টকার্ড পাঠানো হবে বলে দাবি সিটুর। নিজস্ব চিত্র
অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের (এএসপি) কৌশলগত বিলগ্নিকরণের বিষয় নিয়ে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। শনিবার সেই বৈঠকে সিটুকে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে সাংসদের বাড়িতে ‘বিশ্বাসঘাতক’ লেখা পোস্টকার্ড পাঠানো হবে বলে দাবি করল সিটু-সহ বাম গণ সংগঠনগুলি।
ক্যাবিনেট কমিটি অন ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স (সিসিএফএ) ২০১৬ সালে এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে। প্রতিবাদে ২০১৭ সালের শুরু থেকে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। ২০১৮ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সেলের পক্ষ থেকে গ্লোবাল টেন্ডার ডাকা হয়। কিন্তু শ্রমিকদের আন্দোলনের চাপে তিন বার সময়সীমা বাড়িয়েও কোনও সংস্থা এগিয়ে আসেনি। ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী চৌধুরী বীরেন্দ্র সিংহ দুর্গাপুরে এসে এএসপি-কে ঘুরে দাঁড় করানোর ব্যাপারে আশার কথা শুনিয়ে যান। লোকসভা ভোট এসে পড়ায় বিষয়টি প্রায় ধামাচাপা পড়ে যায়।
ভোটের প্রচারে এসে দুর্গাপুরে বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা খোলা বা এএসপি নিয়ে কোনও স্পষ্ট দিশা দেখাতে পারেননি সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া, এই অভিযোগে সরব হয়েছিল সিটু-সহ নানা শ্রমিক সংগঠন। বৃহস্পতিবার সেল নতুন করে টেন্ডার ডাকার পরে শনিবার তিনি দুর্গাপুরে এএসপি নিয়ে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন। শ্রমিক সংগঠন এবং অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনকে কারখানা বাঁচানোর রূপরেখা তৈরি করার পরামর্শও দেন। তবে ওই বৈঠকে সিটু এবং আইএনটিটিইউসি-র তরফে কেউ ছিলেন না। সিটুর দাবি, বৈঠকে তাদের ডাকাই হয়নি। আইএনটিটিইউসি-র দাবি, বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া দলের সাংসদের সঙ্গে কথা বলতে চায় না তারা। আগামী শনিবার ফের বৈঠকের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সাংসদ।
এমন পরিস্থিতিতে সাংসদের বাড়ির ঠিকানায় ২৫ হাজার পোস্টকার্ড পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিটু-সহ অন্য বাম গণ সংগঠনগুলি। পোস্টকার্ডে লেখা থাকছে ‘বিশ্বাসঘাতক সুরেন্দ্র’। সেই সঙ্গে এএসপি বাঁচানোর আর্জিও থাকছে। শহর জুড়ে কর্মসূচির কথা ছড়িয়ে দিতে ইতিমধ্যে পোস্টার-ব্যানার ছাপানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে সিটু সূত্রে জানা গিয়েছে। বাম গণ সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায়সরকার দাবি করেন, ‘‘এএসপি-র জন্য নতুন করে টেন্ডার ডেকে বিজ্ঞপ্তি জারি আসলে ভোটে জেতার পরে শহরবাসীর জন্য সাংসদের ‘প্রথম উপহার’। এএসপি-র বিলগ্নিকরণ আটকাতে না পারলে ডিএসপি-র ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠে যাবে। শিল্পনগরীর অর্থনীতি ধসে পড়বে। আমরা তা কিছুতেই হতে দেব না।’’
তিনি আরও জানান, শহরে অন্তত ১০টি শিবির করে পোস্টকার্ড বিলি করে তা পোস্টবক্সে জমা করা হবে। ৯ জুলাই এসবিএসটিসি গ্যারাজ লাগোয়া ডাকঘর থেকে কর্মসূচি শুরু করা হবে। চলবে টেন্ডার জমা দেওয়ার শেষ দিন, ১ অগস্ট পর্যন্ত। এ ছাড়াও শহরের অন্তত ৫০ হাজার ভোটারের কাছে কর্মসূচির বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাংসদ সুরেন্দ্রবাবুকে রবিবার বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তবে দুর্গাপুরের বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শনিবারই সাংসদ বৈঠক করেছেন এএসপি নিয়ে। আগামী শনিবার ফের বৈঠক করবেন। কারখানা বাঁচানোর সদিচ্ছা যে রয়েছে, এর থেকেই তা প্রমাণ। তা সত্ত্বেও যা হচ্ছে তা ঘৃণ্য রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy