Advertisement
E-Paper

চিত্তরঞ্জনে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ, ব্যবস্থা

গত বছরের গোড়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে পাঠানো ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চিত্তরঞ্জন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর।

বন্ধ করা হবে এ সব গেট।

বন্ধ করা হবে এ সব গেট। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৪ ০৮:৫৪
Share
Save

দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে চিত্তরঞ্জনের রেল কারখানা ও আবাসন এলাকা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য সম্প্রতি কারখানা কর্তৃপক্ষকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক চিঠি পাঠিয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। চিঠি পাওয়ার পরে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানান সংস্থার সিনিয়র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রমোদ ক্ষেত্রী এবং আরপিএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট সিকিওরিটি কমিশনার সোমনাথ চক্রবর্তী।

গত বছরের গোড়ায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে পাঠানো ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, চিত্তরঞ্জন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের সীমানা অঞ্চলে এর অবস্থান। এই এলাকায় দুষ্কৃতী কার্যকলাপ বেড়েছে বলে খবর। সক্রিয় হয়েছে অপরাধমূলক কার্যকলাপ। বিশেষত জামতাড়া, মিহিজাম-সহ আশপাশের এলাকা দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে। তাতে কারখানা ও রেল শহরের বিপদ হতে পারে। উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পরিস্থিতিও হতে পারে। সংস্থার সিনিয়র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রমোদ ক্ষেত্রী বলেন, ‘‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে আমরা এই উদ্বেগের চিঠি পাওয়ার পরে শহর ও কারখানার নিরাপত্তার জন্য বিশেষ কিছু পদক্ষেপ করেছি। বিষয়টি আবাসিকদের বোঝানোও হচ্ছে।’’

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শহর লাগোয়া অঞ্চলের বাসিন্দারা নিজেদের সুবিধা মতো একাধিক জায়গায় পাঁচিল ভেঙে যাতায়াতের জন্য ছোট ছোট গেট ও রাস্তা তৈরি করে নিয়েছেন। স্থানীয় ভাষায় সেগুলিকে ‘পকেট গেট’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। এই গেটগুলি অবৈধ। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ডের এই গ্রামগুলির বাসিন্দাদের সঙ্গে রেল শহরের তেমন সম্পর্ক নেই। তবু তাঁরা এই পকেট গেট ব্যবহার করে অনায়াসে যাতায়াত করেন। আন্তঃরাজ্য দুষ্কৃতীরাও এই জায়গা দিয়ে ঢুকে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে বলে অভিযোগ। প্রমোদের কথায়, ‘‘এই পকেট গেটগুলি প্রথম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বহিরাগতেরা তাঁদের প্রয়োজনে ১, ২ ও ৩ নম্বর গেট দিয়ে যাতায়াত করবেন।’’

রেল শহরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আরপিএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট সিকিউরিটি কমিশনার সোমনাথ চক্রবর্তী জানান, বৈধ তিনটি গেটে সব সময় আরপিএফ মোতায়েন থাকে। প্রয়োজনে তাঁরা নাকা তল্লাশিও করেন। শহরে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় সাড়ে তিনশো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। একটি বিশেষ কন্ট্রোল রুম তৈরি করে ২৪ ঘণ্টা ক্যামেরায় নজরদারি চলছে। এ ছাড়া, আরপিএফের কার্যালয়ে মোবাইল ফোনের ‘কল ডিটেলস রিপোর্ট’ (সিডিআর) যন্ত্র বসানো হয়েছে। এর ফলে সন্দেহজনক ফোনের কথোপকথন রেকর্ড করা হবে। সোমনাথ বলেন, ‘‘রেল শহরের নিরাপত্তায় দু’টি আধুনিক গাড়ি দিনরাত শহরে নজর রাখছে।’’ তবে আরপিএফ সূত্রে জানা যায়, কারখানা ও শহরের নিরাপত্তা দেখভালে প্রায় পাঁচশো জনের বাহিনী দরকার। বর্তমানে রয়েছে মাত্র দেড়শো।

কারখানা কর্তৃপক্ষ চিত্তরঞ্জনের ‘পকেট গেট’ বন্ধে উদ্যোগী হতেই বেঁকে বসেছে সংস্থার শ্রমিক সংগঠনগুলি। সিটু অনুমোদিত লেবার ইউনিয়নের সম্পাদক রাজীব গুপ্ত, আইএনটিইউসি-র সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ সিংহেরা দাবি করেন, কারখানা তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের সময়ে পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের কথা ভেবে তৎকালীন কর্তৃপক্ষ কয়েকটি পকেট গেটের দাবি মেনে নিয়েছিলেন। এখন সেগুলি বন্ধ করা হবে কেন? গেটগুলি বন্ধ করা হলে তাঁদের প্রায় ৮-১০ কিলোমিটার পথ বেশি ঘুরে যাতায়াত করতে হবে। শ্রমিক নেতাদের দাবি, নিরাপত্তার জন্য পকেট গেটে আরপিএফ মোতায়েন করা হোক। শ্রমিক নেতাদের এই দাবি বিবেচনার মধ্যে রয়েছে বলে জানান সংস্থার সিনিয়র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Chittaranjan Indian Railways

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}