গাড়িতে গুলির চিহ্ন, দেখাচ্ছেন পরিবহণ ব্যবসায়ী মমতাজ খান। রবিবার কুলটিতে। নিজস্ব চিত্র
ফের গুলি চলল কুলটিতে। এ বার এক পরিবহণ ব্যবসায়ীর গাড়িতে দুষ্কৃতীরা গুলি ছুড়েছে বলে অভিযোগ। শনিবার রাতে কুলটি স্টেশন রোড লাগোয়া বাবুপাড়া কালীমন্দিরের কাছে এই ঘটনায় গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, পুরনো বিবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও ধৃতদের পরিবারের দাবি, তাদের ফাঁসানো হয়েছে। বারবার গুলি চলার ঘটনায় আতঙ্কিত স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে এলাকায় কড়া নজরদারির দাবি তুলেছেন।
কুলটির শিয়ালডাঙা লাগোয়া লালবাজার রোড এলাকার বাসিন্দা ওই ব্যবসায়ী মমতাজ খান পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন, শনিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি নিজের গাড়িতে কয়েকজন সঙ্গীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। কুলটি স্টেশন রোডের লেভেল ক্রসিংয়ের গেট বন্ধ থাকায় তিনি বাবুপাড়ার রাস্তা ধরে যাচ্ছিলেন। কালীমন্দিরের কাছে একটি হাম্প পেরোনোর সময়ে গাড়ির চালক গতি কমাতেই বাঁ দিক থেকে গাড়ির দিকে পরপর গুলি ছোড়া হতে থাকে। বিপদ বুঝে চালক গাড়ির গতি বাড়িয়ে ইন্দিরা গাঁধী কলোনির দিকে চলে যান।
ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, জনা পাঁচেকের দুষ্কৃতী দলটি আগে থেকে ওই জায়গায় দাঁড়িয়েছিল। তবে বিষয়টি নিয়ে ধন্দে পড়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, ওই রাস্তা ধরে তিনি নিয়মিত যাতায়াত করেন না। এমনকি সে রাতেও ওই দিকে যাওয়ার কথা ছিল না। লেভেল ক্রসিং বন্ধ থাকায় ওই বিকল্প রাস্তা ধরেছিলেন। দুষ্কৃতীরা তা কী ভাবে জানল, সে নিয়েই তিনি চিন্তায়। তদন্তকারীদের দাবি, পুরনো শরিকি বিবাদের জেরে এই হামলা হয়েছে। মমতাজ খানের অভিযোগ, ‘‘আমার ব্যবসার কিছু পুরনো শরিক আমাকে খুন করতে দুষ্কৃতী ভাড়া করেছে। দিন দশেক আগে বন্ধুদের সঙ্গে একটি হোটেলে খেতে গিয়েছিলাম। হঠাৎই সেখানে ওই শরিকেরা হানা দিয়ে আমাকে গুলি করার হুমকি দিয়েছিল।’’
কুলটি থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরেই পুলিশ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে আটক করে। রবিবার এই ঘটনা নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছিল। কালীমন্দিরের আশপাশের বাসিন্দারা জানান, নানা কাজে রাতবিরেতে তাঁদের অনেককে বাইরে যাতায়াত করতে হয়। দুষ্কৃতীদের এমন দৌরাত্ম্য চললে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। ব্যবসায়ীর প্রতিবেশীরাও এমন ঘটনায় আতঙ্কিত বলে জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত চার মাসে কুলটি থানা এলাকায় চারটি গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। ২৪ অগস্ট রাতে বরাকরের মানবেড়িয়ায় নিজের বাড়ির সামনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর খালেদ খান। এই ঘটনায় পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। এর পরে ২ অক্টোবর রাতে চিনাকুড়ির ৯-১০ নম্বর কোলিয়ারি লাগোয়া এলাকায় এক খনিকর্মীর বাড়িতে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। ২ নভেম্বর চিনাকুড়ির বামনধাওড়া মাজিপাড়ায় এক যুবকের দিকে গুলি চালানো হয়। শনিবারের ঘটনার পরে বেআইনি অস্ত্রের রমরমা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শহরবাসীর অনেকে। পুলিশের আশ্বাস, এলাকায় টহল দেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy