নজরদার: আসানসোলে টহল। বুধবার, বিজেপি-র ডাকা বন্ধের দিনে। ছবি: পাপন চৌধুরী
কোথাও অবরোধ বা দোকান বন্ধের চেষ্টা, কোথাও বা লাঠি চালানো। এমনই নানা অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ বিজেপি ও পুলিশের বিরুদ্ধে। বুধবার বিজেপি-র ডাকা ১২ ঘণ্টার বন্ধকে কেন্দ্র করে এমনই নানা অশান্তির টুকরো ছবি দেখা গিয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের নানা প্রান্তে।
এ দিন সকালে আসানসোল মহকুমায় প্রথম অশান্তির খবর মেলে কুলটির নিয়ামতপুর থেকে। প্রায় ৫০ জন বিজেপি কর্মী, সমর্থক মিছিল বার করেন। ব্যবসায়ীদের কাছে দোকান বন্ধ করার আর্জি জানানো হয়। এর পরে আচমকা টায়ার জ্বালিয়ে তা মাঝরাস্তায় ফেলে শুরু হয় পথ অবরোধ। উপস্থিত পুলিশকর্মীরা রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার আর্জি জানালেও লাভ হয়নি। অভিযোগ, এর পরে পুলিশ বেধড়ক লাঠি চালায় এবং কয়েক জন বিজেপি সমর্থককে আটক করে।
ইসমাইল মোড়ের ব্যবসায়ীদের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের দোকান বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন কয়েক জন বিজেপি সমর্থক। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে বিজেপি কর্মী, সমর্থকদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে। আসানসোল দক্ষিণ থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
সকাল গড়়াতেই পথ অবরোধের খবর মেলে বার্নপুরের ত্রিবেণী মোড় থেকে। সেখানে পিচের ড্রাম ফেলে পথ অবরোধ করেন বিজেপি কর্মী, সমর্থকেরা। এখানেও পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানায়, এখান থেকে চার জন বিজেপি কর্মীকে আটক করা হয়।
দুর্গাপুর বাজারেও জোর করে দোকান বন্ধের অভিযোগ ওঠে বিজেপি-র বিরুদ্ধে। তবে পুলিশ এসে দোকান খোলানোর ব্যবস্থা করে। যদিও সকাল ১০টা পর্যন্ত ওই বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ ছিল। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বিজেপি কর্মীরা মুচিপাড়া থেকে বাঁকুড়াগামী রাজ্য সড়কের এসবি মোড়ে রাস্তা অবরোধ শুরু করেন। এসিপি (পূর্ব) বিমল মণ্ডলের নেতৃত্বে পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে বিজেপি-র জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই-সহ মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। বেনাচিতির প্রান্তিকাতেও বিজেপি-র মোটরবাইক মিছিল আটকায় পুলিশ। সেখানে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বাধে পুলিশের। গ্রেফতার করা হয় আট বিজেপি কর্মীকে।
মেন গেট এলাকায় বিজেপি কর্মীরা জোর করে বন্ধ করার চেষ্টা করতে পারেন বলে খবর ছিল পুলিশের কাছে। সেই মতো সকাল থেকেই বিমলবাবু ও দুর্গাপুর থানার ওসি গৌতম তালুকদারের নেতৃত্বে পুলিশের বিশাল বাহিনী এলাকায় ছিল। তবে দেখা মেলেনি বন্ধ সমর্থকদের।
তবে জোর করে বন্ধ করানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের রাজ্য নেতা পবন সিংহ যদিও বলেন, ‘‘কোথাও কোনও জবরদস্তি নয়। মানুষ নিজের থেকেই পথে বার হননি। দোকান খোলেননি ব্যবসায়ীরা। তৃণমূলের সঙ্গে পুলিশও আমাদের প্রতিপক্ষের ভূমিকা নিয়েছে।’’ আসানসোল-দুর্গাপুরের কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, ‘‘পুলিশ নিয়ম মেনে কাজ করেছে। কয়েকটি জায়গায় পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া হয়। দুর্গাপুরে ৩৫ জন ও আসানসোলে ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy