পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। কালনা থানার সামনে। ছবি: জাভেদ আরফিন মণ্ডল
গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে থানার সামনে লোক জমায়েত করে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি। মঙ্গলবার কালনায় বিজেপির সেই জমায়েতে দূরত্ব-বিধির কোনও বালাই ছিল না। বিক্ষোভে হাজির অনেকের মুখে ‘মাস্ক’ও ছিল না বলে অভিযোগ। সমাবেশ থেকে পুলিশ এবং তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশ্যে কড়া বক্তব্য রাখেন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দলের নেতারা।
কালনা ২ ব্লকের পিন্ডিরা পঞ্চায়েতের পাথরঘাটা গ্রামে ৫ সেপ্টেম্বর একশো দিনের কাজ চলাকালীন বচসা বাধে। অভিযোগ, স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাকে হাঁসুয়ার কোপ দেন রবিন পাল নামে এলাকার এক মৃৎশিল্পী। এর পরে গণপিটুনিতে নিহত হন ওই মৃৎশিল্পী। তাঁর ভাই দানু পাল পিন্ডিরা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুকুমার বাগ-সহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। এর পরেই তৃণমূলের উপপ্রধানের নেতৃত্বে তাদের কর্মীকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করে আন্দোলনে নামে বিজেপি। কয়েকদিন আগে পাথরঘাটা গ্রামে যান বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। মঙ্গলবার থানার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দেন রাজ্য নেতা রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিজেপির জেলা নেতারা।
বিজেপির এই থানা ঘেরাও কর্মসূচির জন্য পুলিশি তৎপরতা ছিল সকাল থেকেই। জেলা থেকে আনা হয় অতিরিক্ত বাহিনী। থানা থেকে কিছুটা দূরে পাঁচটি ধাপে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়। এর মধ্যে তিনটি ছিল কালনা পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। সেখানে প্রথম ব্যারিকেডে সিভিক ভলান্টিয়ারেরা, দ্বিতীয়তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, কালনার এসডিপিও, সিআই, ওসি-সহ বাহিনীর কর্তারা। তৃতীয় ব্যারিকেডে র্যাফ।
দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ বিজেপি নেতা রাজুবাবু, জেলা সভাপতি (কাটোয়া) কৃষ্ণ ঘোষ, অন্যতম রাজ্য সম্পাদক রাজীব ভৌমিক, জেলা সহ-সভাপতি ধনঞ্জয় হালদারেরা বহু কর্মী-সমর্থককে নিয়ে তেঁতুলতলা থেকে মিছিল করে পৌঁছন। প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন তাঁরা। দ্বিতীয় ব্যারিকেড ভাঙার আগে অবশ্য নেতারা কর্মী-সমর্থকদের নিরস্ত করেন। ভিড়ের মধ্যেই একটি টোটোয় মাইক বেঁধে বক্তব্য রাখা শুরু হয়। জেলা সভাপতির নেতৃত্বে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল থানায় স্মারকলিপি জমা দেয়। তাতে তিন দফা দাবি জানানো হয়। পিন্ডিরা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান-সহ ছয় অভিযুক্তকে কেন এখনও ধরা হল না, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
থানার সামনে বিজেপি নেতা রাজীব ভৌমিক দাবি করেন, চার দিনের মধ্যে উপপ্রধান-সহ বাকি ছ’জনকে গ্রেফতার করতে হবে পুলিশকে। এর পরেই রাজুবাবুর মন্তব্য, ‘‘রাজীবদা চার দিন সময় দিয়েছেন। আমি হলে দু’দিন সময় দিতাম। তার মধ্যে গ্রেফতার না হলে লোকজন নিয়ে নেমে পড়তাম।’’ করোনা-পরিস্থিতিতে এত লোক জমায়েত করে বিক্ষোভের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন।’’
কালনা থানার পুলিশ জানায়, গণপিটুনির ঘটনার তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। জেলার এক পুলিশ-কর্তা বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন সমাবেশ উচিত নয়। ভিড় সামাল দিতে গিয়ে পুলিশকর্মীদেরও করোনা-আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy