Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৪
Birupakkha Biswas

বদলির পরেও বিরূপাক্ষের বছর পার বর্ধমানেই

আর জি কর কাণ্ডের পরে অভীক দে-র সঙ্গে বিরুপাক্ষের নাম উঠে আসায় স্বাস্থ্য ভবন থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বর্ধমান মেডিক্যালের উপর ‘চাপ’ দেওয়া হয়।

বিরূপাক্ষ বিশ্বাস।

বিরূপাক্ষ বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৩
Share: Save:

এক বছর আগেই স্বাস্থ্য ভবন ‘বর্ধমান শাখা’র অন্যতম বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে বদলির নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তাঁর মাথায় স্বাস্থ্য প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র অভীক দে-র হাত থাকায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ বিরূপাক্ষকে ছাড়ার নির্দেশ (রিলিজ় অর্ডার) দেয়নি। আর জি কর কাণ্ডের পরে দুই লবি ‘নিষ্ক্রিয়’ হতেই মঙ্গলবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে প্যাথলজিস্ট হিসাবে কর্মরত বিরূপাক্ষকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার কাকদ্বীপে যাওয়ার নির্দেশ জারি করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা যায়, গত বছর ১১ অগস্ট সিনিয়র স্পেশাল সেক্রেটারি অ্যানাস্থলজি, প্যাথলজি, রেডিও-থেরাপি, মাইক্রোবায়োলজি-সহ একাধিক বিভাগের ৫৮৭ জনকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সময় অভীক দে-র ‘ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে রাজ্যের মেডিক্যাল-মানচিত্রে পরিচিত বিরূপাক্ষ সেই নির্দেশ মানেননি বা তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল থেকে ছাড়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল থেকে স্বাস্থ্য ভবনে ‘জলঘোলা’ কম হয়নি। এ বার আর জি কর কাণ্ডের পরে অভীক দে-র সঙ্গে বিরুপাক্ষের নাম উঠে আসায় স্বাস্থ্য ভবন থেকে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বর্ধমান মেডিক্যালের উপর ‘চাপ’ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার বিরূপাক্ষকে রিলিজ় করা হয়। বুধবার সকালে বিরূপাক্ষ বলেন, ‘‘স্নাতকোত্তর করার পরে বদলি হতে হয়। আমার কাছে অনেকগুলি জায়গায় যাওয়ার প্রস্তাব এসেছিল। আমি কাকদ্বীপ বেছে নিয়েছি। এটা আর জি করের পরবর্তী-সিদ্ধান্ত বলা অনুচিত হবে।”

কিন্তু এক বছর ধরে বদলি না হওয়ার কারণ কী?

কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, “আমাদের মতো বড় মেডিক্যালে বিকল্প কাউকে পাওয়া না গেলে প্যাথলজিস্ট বা অন্য কাউকে ছাড়া কঠিন। সেই সব নানা কারণেই বিরূপাক্ষের মতো কয়েক জনকে ছাড়া হয়নি। স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশে বিরূপাক্ষকে ছাড়া হয়েছে। বাকিদের বললেও ছেড়ে দেব। তবে এটা নিছকই রুটিন বদলি।”

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা যায়, স্নাতকোত্তর করার পরে বিরূপাক্ষের সঙ্গে ‘চুক্তি’ হয়েছিল দফতরের। সেখানে প্রথম এক বছর বর্ধমান মেডিক্যালে, পরের দু’বছর অন্য হাসপাতালে পরিষেবা দেওয়ার কথা ছিল। বর্ধমান মেডিক্যালে ‘শাসানি-সংস্কৃতি’র বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের দাবি, এতটাই প্রভাবশালী যে কর্মক্ষেত্রের চুক্তিও মানেন না বিরূপাক্ষ। একজন প্যাথলজিস্ট কতটা প্রভাবশালী হলে এক বছর ধরে স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশ অমান্য করা যায়! আর জি কর কাণ্ডের পরে বিরূপাক্ষের হুমকির অডিয়ো ও কাজকর্মের কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁরা মনে করছেন, অভীকের অস্তিত্ব সঙ্কট দেখেই মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ বিরূপাক্ষের ‘ভার’ বইতে চাইছেন না।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের অভিযোগ, বিরূপাক্ষকে নিয়মিত কলেজের প্যাথলজিস্ট বিভাগে দেখা যেত না। এতটাই ঔদ্ধত্য ছিল, নিজের পরিচয় দিয়েই বিরূপাক্ষ ইন্টার্ন, হাউস স্টাফদের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ। শনিবার বর্ধমান মেডিক্যালের অধ্যক্ষর কাছে বিরূপাক্ষর নামে অভিযোগ করেছিলেন চিকিৎসক-পড়ুয়ারা। যদিও বিরূপাক্ষের দাবি, “কোভিডের সমেয় কর্মক্ষেত্রে ছিলাম, আর এখন থাকব না! আসলে এ সব চক্রান্ত।”

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy