Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
SSC recruitment scam

Recruitment Scam: ‘আপত্তি তুললেও রাজ্য গা করেনি’, প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ

পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় (‌টেট) উত্তীর্ণদের চাকরি দেওয়া নিয়ে ২০১৪ থেকেই বিতর্ক।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২২ ০৮:১৮
Share: Save:

১৬ বছরের নাবালকও প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে মনোনীত হয়! তেমনই আরও কিছু চাকরিপ্রার্থীর নাম নিয়ে আপত্তি তোলা হলেও, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ রা কাড়েননি বলে অভিযোগ তুলেছেন সাবেক বর্ধমান জেলা স্কুল দফতরের (প্রাথমিক) কর্তাদের একাংশ। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী (বর্তমান শিল্পমন্ত্রী) পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হওয়ার পরে, জেলার বিরোধী রাজনৈতিক দলের শিক্ষক সংগঠনগুলি দাবি তুলেছে, তৃণমূলের আমলে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে আরও ‘দুর্নীতি’ হয়েছে। জেলা জুড়ে তেমন নাম খুঁজে তালিকা তৈরি করা চলছে বলে দাবি করেছেন বিজেপির টিচার্স সেলের প্রাক্তন আহ্বায়ক রাধাকান্ত রায়। যদিও তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডুর দাবি, ‘‘এখন এ নিয়ে অনেক গুজব রটবে। যা বলার, রাজ্যনেতৃত্বই বলেছেন।’’

পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় (‌টেট) উত্তীর্ণদের চাকরি দেওয়া নিয়ে ২০১৪ থেকেই বিতর্ক। বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন করে তা নিয়ে জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিক-কর্মীদের মধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে চাকরি নিয়োগের তালিকা বেরোলেও ২০১৭ সালে দু’দফায় নিয়োগপত্র পান ১,২৭২ জন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। যাঁদের মধ্যে কেউ কেউ প্রাক্তন সেনাকর্মী, শারীরিক প্রতিবন্ধী, জাতিগত সংরক্ষণের জন্য সুবিধা নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসাবেও কাজে যোগ দিলেও সে সংক্রান্ত নথিপত্র জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা দফতরে জমা দেননি বলে অভিযোগ।

তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির প্রাক্তন এক নেতার দাবি, “একাদশ শ্রেণির পডুয়া ১৬ বছরের এক নাবালকের নামও মনোনয়ন তালিকায় ছিল। সাবালক হওয়ার পরে, তাঁকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়।’’ মাসখানেক আগে হাই কোর্টেও এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের একটি সূত্রের দাবি, সে সময় সন্দেহজনক নামগুলি নিয়ে দু’-তিন বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এক প্রাক্তন কর্তার দাবি, ‘‘এ নিয়ে উপরমহল সাড়া না দেওয়ায় জেলা থেকেও আর উচ্চবাচ্য করা হয়নি।’’ মাস দেড়েক আগেই, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় হাই কোর্টের নির্দেশে পূর্ব বর্ধমান জেলায় চাকরি খুইয়েছেন ১৬ জন। তবে ওই ক’জনের নাম এই ‘সন্দেহজনক’ তালিকায় ছিল না।

নিখিলবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সম্পাদক নীরব খাঁয়ের দাবি, ‘‘শুধু ওই ক’জনই নয়, অন্তত ৩০ শতাংশের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলেছে। আমার ধারণা, তদন্তে এই দুর্নীতিতে নীচ থেকে উপরের অনেকেই জড়িত বলে উঠে আসবে।’’ তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবু বক্কর ‘আইনের বিষয়’ বলে মন্তব্য এড়িয়েছেন। জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের কর্তারাও মন্তব্য করতে চাননি।

ঘটনা হল, কালনার তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক তথা বর্তমানে বিজেপি নেতা বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর আত্মীয়দের প্রাথমিকে নিয়োগেও বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। গত বছর ডিসেম্বরে প্রাথমিকে দুর্নীতি নিয়ে মামলা হওয়ার সময়ে বিশ্বজিৎ দাবি করেছিলেন, তাঁর স্ত্রী, বৌদির সঙ্গে আরও ৬২ জন তৃণমূল কর্মী তাঁর হাত ধরেই চাকরি পেয়েছেন। তিনি দাবি করেছিলেন, “আগেও বলেছি, এখনও বলছি, দুর্নীতি হয়েছে।’’ মঙ্গলবার তিনি নতুন করে মন্তব্য করতে চাননি। তবে আগের যে বক্তব্যেই অনড় রয়েছেন, তা-ও জানিয়েছেন। তবে তৃণমূল নেতা দেবু টুডুর দাবি, ‘‘উনি যা করেছেন, তার দায় ওঁরই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

SSC recruitment scam Teacher
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy