কাটোয়ায় ভাগীরথীর ফেরিঘাটে ১৪৪ ধারা জারির আগে কড়া নজরদারিতে চলছে পারাপার। শুক্রবার ছবিটি তুলেছেন অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী হবে আজ?
শান্তিপূর্ণ ভোট, মারধর-হাঙ্গামা-অবাধ সন্ত্রাস, না কি বহিরাগতের নিস্তব্ধ চোখরাঙানিতে আপাত শান্ত ভোট— বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রচার শেষ হওয়ার পর থেকেই প্রশ্নটা ঘুরপাক খাচ্ছে চার পুর এলাকার অলিগলিতে। ভোট ঘোষণার দিন থেকেই যদিও সবরকম নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়ে গিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু তাতে ভরসা রাখতে পারেননি সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধীরা কেউই। বারবার মারধর, পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকী বৃহস্পতিবার রাতভর ভোটার ও প্রার্থীদের ফোন করে ভোট দিতে না যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও কালনায় অভিযোগ করেছে সিপিএম। কাটোয়া, মেমারিতেও সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। তবে জেলার পুলিশ-প্রশাসনের কতার্দের দাবি, ‘‘সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে আমরা তৎপর।’’
ভোটের সরঞ্জাম হাতে বুথের দিকে চলেছে ভোটকর্মীরা।
শুক্রবার ছবিটি তুলেছেন অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার কাটোয়া ও দাঁইহাটের অতি স্পর্শকাতর বুথগুলি ঘুরে জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘ভোটের আগে সামান্য কিছু র্যাফ হাতে পেয়েছি আমরা। চারটি পুরসভা এলাকায় তাদের মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া বুথে দু’জন করে সশস্ত্র পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে শুক্রবার থেকেই।’’ যদিও পুলিশের বহু আধিকারিকই কাটোয়া ও মেমারিতে সন্ত্রাসের আশঙ্কা করছেন। কলকাতার পুরভোটের পুনরাবৃত্তি জেলাতেও হবে কি না সে প্রশ্ন উঠছে আমজনতার মধ্যেও। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন অবশ্য ভোটারদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘সবাই যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন, সে জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চারটি পুরসভার সবক’টি বুথই স্পর্শকাতর। তার মধ্যে কাটোয়ার ৭৬টি বুথের ২৪টি বুথ অতি স্পর্শকাতর, দাঁইহাটে ২০টি বুথের মধ্যে ৬টি বুথ অতি স্পর্শকাতর, কালনায় ৫২টির মধ্য ১০টি ও মেমারিতে ৩৭টির মধ্যে ৭টি বুথ অতি স্পর্শকাতর। এ ছাড়া কাটোয়ার ১০টি, দাঁইহাটে ৭টি, কালনায় ১১টি ও মেমারির ২৫টি বুথে প্রশাসনের তরফে ভিডিওগ্রাফির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। জেলা পুলিশের তরফে কালনা ও মেমারিতে মহিলা র্যাফ, স্ট্রাকো ফোর্স-সহ ৩৫০ পুলিশ কর্মীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। দাঁইহাটে স্ট্রাকো ফোর্স-সহ ১১০ জন পুলিশ থাকবে। তবে সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা রয়েছে কাটোয়াতে। এখানে ২ জন মহিলা অফিসার-সহ ৪০ জনের মহিলা বাহিনী, ৮ জন অফিসার-সহ ১৬০ জনের র্যাফ বাহিনী রয়েছে। এ ছাড়াও কাটোয়ার জন্য বিশেষ ভাবে থাকছে ৮ প্ল্যাটুন কমব্যাট ফোর্স। এর সঙ্গে অতিরিক্ত ২৫০ জন সশস্ত্র পুলিশ সহ ৪৭৫ জন পুলিশ মজুত থাকছে কাটোয়াতে।
আজ ভোট জেলার চার পুরসভায়।
জেলা প্রশাসনের নির্দেশে এ দিন বিকেল তিনটে থেকে কাটোয়া, দাঁইহাট ও কালনার ভাগীরথী লাগোয়া ফেরিঘাট এলাকাগুলিতে ২৪ ঘন্টার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। যাতে আশপাশের জেলা বা অন্য কোথাও থেকে নদীপথে কেউ যাতায়াত করতে না পারেন। এর পাশাপাশি গণনা কেন্দ্রে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শিবির আলাদা করা, জেলা সীমান্তে চেকিংয়ের ব্যবস্থা করা, একসঙ্গে দুটির বেশি মোটরবাইক নিয়ে চলাফেরা করাতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন জানিয়েছেন, আগামী ৩০ তারিখ পর্যন্ত কোনও বিজয় মিছিল করা যাবে না। তাঁর দাবি, ‘‘পুরসভা নির্বাচনের পর হানাহানি বন্ধ করার জন্যই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলিকে ওই নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy