Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Water Crisis at Asansol ESI

ইএসআই হাসপাতালে জলের সঙ্কট, ডায়ালিসিস বন্ধের আশঙ্কা

সেন র‌্যালে রোডে অবস্থিত রাজ্য শ্রম দফতরের অধীন ওই ইএসআই হাসপাতাল। বছর চল্লিশের পুরনো ওই হাসপাতালে ২০০টি শয্যা রয়েছে।

আসানসোল ইএসআই হাসপাতালে জলের সঙ্কট।

আসানসোল ইএসআই হাসপাতালে জলের সঙ্কট। ছবি: পাপন চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:২৫
Share: Save:

জল সরবরাহের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব কার? আসানসোল পুরসভা না কি, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (পিএইচই)। অভিযোগ, পুরসভা ও পিএইচই-র মধ্যে টানাপড়েনে চরম জলসঙ্কটে পড়েছে আসানসোলের ইএসআই হাসপাতাল। অবস্থা এমনই যে, ডায়ালিসিস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে দাবি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, এই পরিস্থিতিতে নতুন একটি জলপ্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা। কিন্তু গ্রীষ্মের আগে ওই প্রকল্প চালু হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।

হাসপাতাল সুপার অতনু ভদ্র বলেন, “কার্যত নাজেহাল অবস্থা। গত ছ’মাসে প্রায় ছ’লক্ষ টাকার জল কিনে কাজ চালাচ্ছি। পিএইচই ও পুর কর্তৃপক্ষকে সমস্যার কথা জানিয়েও লাভ হয়নি।”

সেন র‌্যালে রোডে অবস্থিত রাজ্য শ্রম দফতরের অধীন ওই ইএসআই হাসপাতাল। বছর চল্লিশের পুরনো ওই হাসপাতালে ২০০টি শয্যা রয়েছে। হাসপাতাল চত্বরে রয়েছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন কলোনি, একটি নার্সিং কলেজ ও হস্টেল। গত প্রায় ছ’মাস ধরে গোটা চত্বর জুড়েই জলসঙ্কট চলছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপার অতনু ভদ্র। অতনুর দাবি, জলসঙ্কটে ডায়ালিসিস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কারণ, ডায়ালিসিসের জন্য প্রচুর জল লাগে।

জানা গিয়েছে, হাসপাতাল তৈরির পরে শুরু থেকে জল সরবরাহ করছে পিএইচই। কিন্তু গত প্রায় ছ’মাস ধরে পর্যাপ্ত জল পাওয়া যাচ্ছে না। পাইপলাইনে সপ্তাহে তিন দিনের বেশি জল পড়ছে না। এই পরিস্থিতিতে বিকল্প ব্যবস্থা হিসাবে পুরসভার জলপ্রকল্প থেকে হাসপাতালে পাইপলাইন পাতা হয়েছে। হাসপাতাল সুপার অতনুর দাবি, নিজেদের তরফে টাকা খরচ করে পুরসভা থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জলের ব্যবস্থা করা হয়। তাতেও জল মিলছে না। সমস্যার সমাধানের জন্য পুরো বিষয়টি পিএইচই ও পুর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এর পরেও সমাধানসূত্র বেরোয়নি বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

হাসপাতালের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে পিএইচই-র এগ্‌জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রূপম ঘোষ বলেন, “সূর্যনগর জলাধার থেকে হাসপাতালে জল সরবরাহ করা হয়। পর্যবেক্ষণ করে দেখা গিয়েছে, জলাধার থেকে নিয়ম মেনে জল ছাড়া হচ্ছে। কিন্তু জলাধার থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার পাইপলাইনের বহু জায়গায় অবৈধ ভাবে জল নেওয়া হচ্ছে। যার ফলে, হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পড়ছে না।” রূপমের দাবি, নতুন প্রকল্প তৈরি করা ছাড়া হাসপাতালের জলসঙ্কটের স্থায়ী সমাধান হবে না। কিন্তু পিএইচই নতুন প্রকল্প তৈরির খরচ বহন করবে না। কারণ, শহরাঞ্চলে জল সরবরাহের দায়িত্ব পিএইচই-র নয়। পুর কর্তৃপক্ষকেই সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পিএইচই শুধু গ্রামাঞ্চলে জল সরবরাহ করবে। পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, “পুরসভার প্রকল্প থেকে হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল যাচ্ছে না কেন, তা খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”পাশাপাশি, বিধান এ-ও বলেন, “শুরু থেকে পিএইচই হাসপাতালে জল সরবরাহ করছে। তাই এই সঙ্কটের মুহূর্তে ওই দফতরের ব্যবস্থানেওয়া উচিত।”

এই টানাপড়েনে বিপাকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সুপার অতনু জানিয়েছেন, নতুন একটি জলপ্রকল্প তৈরির জন্য হাসপাতালে বোরহোল করা হবে। একটি জল পরিশোধনাগার তৈরি করা হবে। ভূগর্ভের জল তুলে তা পরিশোধন করে হাসপাতালের কাজে ব্যবহার করা হবে। এ জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৭৬ লক্ষ টাকা। অতনুর দাবি, “পিএইচই প্রকল্প রিপোর্টটি বানিয়ে দিয়েছে। সেটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা করেছি। অর্থ অনুমোদন হলে কাজে হাত পড়বে।” তবে তাঁর সংশয়, দ্রুত অনুমোদন না মিললে বিপদ আরও বাড়বে। কারণ, মার্চ থেকে গরম পড়ে যাবে। তখন শহরে আরও জলসঙ্কট বাড়বে। তার আগে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়া জরুরি।

পিএইচই-র এগ্‌জ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রূপম ঘোষ জানান, অর্থের সংস্থান হলেই তাঁরা প্রকল্পটি দ্রুত বানিয়ে দেবেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy