Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
flood

Flood: ডোবা খেতে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন চাষি

জল নামার পরে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

 রায়নায় খেত-রাস্তা একাকার, ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত।

রায়নায় খেত-রাস্তা একাকার, ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বর্ধমান ও কালনা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২১ ০৬:২১
Share: Save:

জলে ডুবেছে জেলার বহু চাষ-জমি। এতে লাভ, ক্ষতি দুই-ই রয়েছে, দাবি কৃষি কর্তাদের একাংশের।

আমন ধান চাষ, পাট পচানোর কাজে প্রচুর বৃষ্টি দরকার হয়। কৃষি দফতরের দাবি, জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত বৃষ্টির কিছুটা ঘাটতি ছিল। নদী, নালায় পাট পচানোর জলও মিলছিল না, দাবি চাষিদের। জলের অভাবে পাটের রং কালচে হয়ে যাচ্ছিল। দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে সেই সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। ধানের জমিতেও এক-দু’দিনের মধ্যে জল নেমে গেলে চিন্তার কিছু নেই। কিন্তু তার বেশি জল থাকলে গোড়া পচা, বীজতলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন চাষিরা। শুক্রবার জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়-সহ সব কৃষি আধিকারিকেরা সরেজমিনে খেত পরিদর্শন করেন। তাঁদের দাবি, ৬৭ শতাংশ জমির ধান জলের তলায় চলে গিয়েছে। বিকেলে নবান্নের কাছে পাঠানো রিপোর্টে জগন্নাথবাবু জানিয়েছেন, জেলায় ৭৩ হাজার হেক্টরের মতো ধান চাষের জমি জলের তলায় রয়েছে। জল নামার পরে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, জেলায় শুক্রবার পর্যন্ত দু’লক্ষ ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধান রোপণ করা হয়েছে। তার মধ্যে জলমগ্ন ১০২টি পঞ্চায়েতের ৯৩৩টি মৌজার ১,০৯,৫৭৪ হেক্টর জমি। তার মধ্যে আমন ধানের জমির পরিমাণ ৭২,০১১ হেক্টর। আউশ ধানের কিছু জমিও জলমগ্ন। গ্রীষ্মকালীন আনাজের পুরো ৩৫০ হেক্টর জমিই জলের তলায় রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে রয়েছে রায়না ১ (১৩,৫৮০ হেক্টর), মেমারি ১ (৮০০০ হেক্টর) ও বর্ধমান ২ (৭২২৩ হেক্টর)। কৃষি দফতরের আধিকারিকদের মতো, জল না নামলে নিচু এলাকায় ধানের গোড়া পচে যাবে। নতুন করে চাষ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়বেন চাষিরা। আবার গোড়া আলগা হয়ে ধান গাছ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষেরও দাবি, ‘‘দিন দু’য়েক ধানের চারা জলের তলায় থাকলেও খুব বেশি ক্ষতি হয় না। তবে তার বেশি দিন জমিতে জল জমে থাকলে ধানের চারা পচে যেতে পারে।’’

গলসির তেঁতুলমুড়ি গ্রামের শেখ আলমগীর, আদড়াহাটি গ্রামের হেমন্ত বাগদের দাবি, ‘‘তিন দিন ধরে সদ্য ধান রোয়া জমি জলের তলায়। ডুবে থাকলে ধানের গোড়া নষ্ট হয়ে যাবে।’’ ইড়কোনার কালীপ্রসন্ন কোনারের দাবি, ‘‘আমার ৯০ ভাগ জমি রোয়ার কাজ শেষ। গাছ পচে গেলে চরম সমস্যায় পড়ব। কারণ, নতুন করে ধানের বীজ পাওয়া যাবে না।’’ একই দাবি করেন খণ্ডঘোষের মেটেডাঙা গ্রামের প্রসেনজিৎ দালাল, রায়নার মানিক হাজরারাও। রায়নার গোপীনাথপুর ও মোগলমারিতে আবার বেহাল নিকাশির জন্য জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। এ দিন ওই এলাকায় কালভার্ট তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন বিধায়ক (রায়না) শম্পা ধাড়া। বর্ধমান ১ ব্লকের বেলকাশ পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় চাষের জমি ঘুরে দেখেন জেলা পরিষদের সদস্য নূরুল হাসান। তিনি বলেন, ‘‘বাঁকার জল উপচে ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের জন্যই খেত-জমিতে জল জমেছে। দ্রুত নিকাশি না হলে চাষে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।’’

পূর্বস্থলীর দুই ব্লকের আনাজ চাষিদের দাবি, পটল, বেগুন, বরবটির জমিতে জল জমে গিয়েছে। পরিমল ক্ষেত্রপাল নামে এক আনাজ চাষির দাবি, ‘‘বৃষ্টির জেরে উৎপাদন অনেকটাই কমে গিয়েছে। গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। মেঘ কেটে রোদ উঠছে গোড়াপচা রোগ ছড়িয়ে যেতে পারে।’’ পার্থবাবুর পরামর্শ, জমি থেকে জমা জল দ্রুত নালা তৈরি করে বাইরে বার করে দিতে হবে। ধাপে ধাপে ছত্রাকনাশক দিতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

flood crops
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy