Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Shiv

দামোদরে মিলেছে কষ্টি পাথরের শিব-পার্বতী

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালাটি প্রায় ৬০ বছরের পুরনো। প্রচুর প্রাচীন মূর্তি, রাজাদের অভিষেকের ছবি রয়েছে সেখানে।

উদ্ধার হয়েছে এই মূর্তি। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হয়েছে এই মূর্তি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়না শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২০ ০৬:৪৯
Share: Save:

দামোদরে স্নান করতে গিয়ে পাথরের মতো কিছু গায়ে ঠেকেছিল পূর্ব বর্ধমানের রায়নার বামুনিয়া গ্রামের মেটে পরিবারের এক সদস্যের। জল থেকে তুলে তাঁরা দেখেন, সেটি কালো পাথরের উপর খোদাই করা প্রাচীন মূর্তি। বাড়ি এনে ওই মূর্তির পুজোও শুরু করে দেন তাঁরা। মঙ্গলবার ওই মূর্তির খোঁজ পান বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কিউরেটর রঙ্গনকান্তি জানা। তাঁর দাবি, মেটে পরিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নশালায় মূর্তিটি দিতে রাজি হয়েছেন। পুলিশের সাহায্য নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে মূর্তিটি সংগ্রহশালায় আনা হবে। জেলা পুলিশেরও দাবি, রঙ্গনবাবুরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা যথাযথ সাহায্য করবে।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালাটি প্রায় ৬০ বছরের পুরনো। প্রচুর প্রাচীন মূর্তি, রাজাদের অভিষেকের ছবি রয়েছে সেখানে। কিউরেটর রঙ্গনকান্তিবাবু বলেন, ‘‘যত দূর জানতে পেরেছি, মূর্তিটি সাড়ে তিন ফুট লম্বা ও আড়াই ফুট চওড়া। কষ্টি পাথরের তৈরি উমা-মহেশ্বর মূর্তি।’’ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মূর্তিটি নবম-দশম শতকের সময়ের। তাঁদের অনুমান, দামোদরের যেখান থেকে মূর্তিটি মিলেছে, সেখানে নিশ্চিত ভাবে কোনও বসতি ছিল। কোনও কারণে তা নষ্ট হয়ে গেলেও মূর্তিটি থেকে যায়। অথবা মূর্তিটি তৈরি করে দামোদরের পাড় ধরে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার পথেও পড়ে যেতে পারে বলে তাঁদের ধারণা।

বিশেষজ্ঞেরা জানান, কালো পাথরের উপর খোদাই করা মূর্তিটির এক দিকে রয়েছেন উমা, তাঁর পাশে মহেশ্বর। নীচে সিংহ। উমার পাশে ষাঁড়। মূর্তি-বিশেষজ্ঞরা জানান, ওই মূর্তির শৈলী আদি মধ্যযুগের অর্থাৎ, পাল-সেন আমলের। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের (এএসআই) প্রাক্তন অধিকর্তা গৌতম সেনগুপ্ত ওই মূর্তির ছবি দেখে বলেন, ‘‘বাংলার বিশিষ্ট শিল্পরীতির বিশেষ নিদর্শন ওই মূর্তিটি। আদি মধ্যযুগের মূর্তি বলে মনে হচ্ছে।’’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্ধমান শহর ও সংলগ্ন এলাকায় অনেক প্রাচীন মূর্তি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। সেই সব মূর্তি উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশ ও পুরাতাত্ত্বিকদের স্থানীয় মানুষজনের ‘বাধা’র মুখেও পড়তে হয়েছে। বেশির ভাগ জায়গাতে সেগুলি পুজোও করা হয়। ফলে, উদ্ধারও করা যায়নি। আবার বছর দু’য়েক আগে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তারাবাগ ক্যাম্পাসে একটি গণেশ মূর্তি পাওয়া গিয়েছিল। আট হাতের গণেশ মূর্তি রাঢ় অঞ্চলে আগে দেখা যায়নি, দাবি করলেও প্রত্নশালায় মূর্তিটি আনতে পারেননি রঞ্জনবাবুরা। বর্তমানে মূর্তিটি বেহালায় রাজ্য পুরাতত্ব সংগ্রহশালায় রয়েছে।

রায়নার ওই পরিবারের সদস্য মনি মেটে বলেন, ‘‘আমরা সবাই দামোদরে স্নান করতে গিয়ে মূর্তিটি পেয়েছি। পুজোও শুরু করেছিলাম। কিন্তু সেটি সরকারি সম্পত্তি বলে আমাদের জানানো হয়েছে। আমরা ওই মূর্তি দিয়ে দেব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Shiv Parvati Damodar River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy