আসানসোল জেলা হাসপাতালে যাওয়ার রাস্তায়। নিজস্ব চিত্র
যাতায়াতের রাস্তা দখল করে অটো, টোটো ও ভাড়া গাড়ির ‘অবৈধ’ স্ট্যান্ড। রাস্তার অন্য দিকে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে ফুচকা, তেলেভাজা, চা-পান-বিড়ির অস্থায়ী ঠেলা। পাশাপাশি, যত্রতত্র স্কুটার, মোটরবাইক পার্কিং রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আসানসোল জেলা হাসপাতালে মাঝ রাস্তায় প্রায়ই থমকে যাচ্ছে অ্যাম্বুল্যান্স। হাসপাতালের কর্মী, চিকিৎসকদেরও গাড়িও আটকে যাচ্ছে প্রায়ই। এর প্রতিবাদ করেও লাভ হয় না বলে অভিযোগ রোগীর পরিজন, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের।
এসবি গড়াই রোড ধরে জিটি রোডের দিকে যাওয়ার পথে ডান হাতে হাসপাতালে ঢোকার প্রথম গেট। সেখান দিয়ে কিছু দূর এগোলেই ‘অবৈধ’ স্ট্যান্ড, অস্থায়ী ঠেলা-দোকান নজরে পড়বে। হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাসের আক্ষেপ, ‘‘অবৈধ পার্কিংয়ের দৌরাত্ম্যে রোগীদের নিয়ে যাওয়া-আসা করা অ্যাম্বুল্যান্সও আটকে যাচ্ছে। বহু আবেদনেও অবৈধ স্ট্যান্ডের চালকদের নড়ানো যায় না।’’ সহকারী সুপার কঙ্কন রায়ের অভিযোগ, অনেক সময় এমনও হয়েছে, স্ট্যান্ডের গাড়িগুলি সরিয়ে জরুরি বিভাবে নিয়ে যাওয়ার আগেই সন্তান প্রসব করেছেন অন্তঃসত্ত্বা। কঙ্কনবাবুর কথায়, ‘‘এই পরিস্থিতি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও বিপজ্জনক।’’ জামুড়িয়ার ভারত বিশ্বকর্মা, বারাবনির শাঁওলি পাত্রদের মতো রোগীর আত্মীয়দের বক্তব্য, গাড়ি ঢুকতে সময় নষ্ট হয়েছে। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ করা উচিত।
কিন্তু কেন এই পরিস্থিতি? অটোচালক গুরফান আনসারি, চিত্ত মণ্ডলদের বক্তব্য, ‘‘প্রায় তিন দশক ধরে এই স্ট্যান্ড চলছে। এখান থেকেই আমাদের রুটি-রুজি। সরব কেন?’’ হাসপাতালের দ্বিতীয় গেট দিয়ে ঢুকে ডান দিকে হাসপাতালেরই কিছুটা জমি ‘দখল’ করে চা, তেলেভাজা, বিড়ি-সিগারেটের দোকান তন্ময় দে-র। তাঁর বক্তব্য, ‘‘জানি এটা বেআইনি। কিন্তু এ ছাড়া রোজগারের পথ নেই।’’
তবে রোগীর পরিজনদের একাংশের মত, হাসপাতালের আগের তুলনায় পরিকাঠামোগত উন্নতি হয়েছে অনেক। কিন্তু এ পর্যন্ত কোনও ক্যান্টিন বা ‘পার্কিং জ়োন’ তৈরি হয়নি। সেই ‘সুযোগেই’ চলছে ব্যবসা। বিষয়টি নিয়ে সহকারী সুপার কঙ্কনবাবু অবশ্য জানান, ক্যান্টিন ও পার্কিং জ়োন তৈরির জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে। এই দু’টি নির্মাণ রূপায়িত হলে হাসপাতালের আয়ও হবে।
কিন্তু হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তায় জেলা প্রশাসনও। প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে বৈঠক করেছেন জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) শশাঙ্ক শেঠি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। হাসপাতাল চত্বরে অবৈধ স্ট্যান্ড ও অস্থায়ী দোকান থাকবে না। দ্রুত পদক্ষেপ করা হচ্ছে। বৈধ পার্কিং ও ক্যান্টিন তৈরির পরে সমস্ত অনিয়ম রোখা হবে।’’
যদিও সুভাষ সাউ নামে এক ঠেলা বিক্রেতার পর্যবেক্ষণ, মাঝে-মধ্যেই প্রশাসন তাঁদের তুলে দেয়। কিন্তু অবস্থা ‘ঠান্ডা’ হলে ফের চলে আসেন ‘স্ব-স্থানে’। এই আসা-যাওয়ার মাঝেই সমস্যা বাড়ছে হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতে আসা লোকজনের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy