অর্ধসমাপ্ত স্ট্যান্ড ও প্রতীক্ষালয়। নিজস্ব চিত্র।
স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিম বর্ধমানে এসে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের পাণ্ডবেশ্বরের ফুলবাগান মোড়ের কাছে বাস স্ট্যান্ড ও যাত্রী প্রতীক্ষালয়ের শিলান্যাস করেছিলেন। কিন্তু সে কাজ মাঝ পথে থমকে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮-র শেষে কাঁকসা থেকে মুখ্যমন্ত্রী নির্মাণ কাজের শিলান্যাস করেন। কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকা সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাস স্ট্যান্ডের মূল ভবনের পরিকাঠামো বেশ কিছুটা তৈরি হওয়ার পরে ‘লকডাউন’-এর জন্য কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তার পরে নির্মীয়মাণ বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে একটি রাজনৈতিক দলের দলীয় কার্যালয় ও রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন নিগম দফতরের ‘ওভার হেড’ তার সরাতে কিছুটা সময় লাগে। এর পরে ২০২১-এ ফের কাজ শুরু হয়। কিন্তু টাকা না পাওয়ায় ২০২২-এর অগস্ট থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠিকা সংস্থার এক প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, বাস স্ট্যান্ডের জন্য মাটি সমতল করা, রাস্তা, নর্দমা তৈরি, মূল ভবনের একাংশ তৈরি করা হয়। তারা ৩২ লক্ষ টাকার কাজ করে ১৫ লক্ষ টাকা পেয়েছে বলে দাবি। বাকি টাকা না পাওয়ায় তারা কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
কিন্তু টাকা নেই কেন? জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ এই কাজের জন্য জেলা পরিষদকে ৯৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল। তার পরে কাজও শুরু হয়। কিন্তু, ২০১৯-এর মার্চের মধ্যে টাকা খরচ না হওয়ায় তা ফেরত চলে যায় বলে একটি সূত্রের দাবি। তবে, জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার রামচরণ চৌধুরীর বক্তব্য, “ওই টাকা আমরা আবার পেয়েছি। তার পরেও আর্থিক কিছু কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে।” বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলা পরিষদের সভাধিপতি সুভদ্রা বাউড়ি। তবে তাঁর বক্তব্য, “বাস স্ট্যান্ডে এক সঙ্গে ২৫টি বাস দাঁড়াতে পারবে। শৌচাগার-সহ প্রয়োজনীয় সবরকম ব্যবস্থা থাকবে প্রতীক্ষালয়ে। তৈরি করা হবে মার্কেট কমপ্লেক্স। দ্রুত কাজ শুরু হবে।”
এ দিকে, স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাণ্ডবেশ্বরে পরিকাঠামোগত বাস স্ট্যান্ড, প্রতীক্ষালয় নেই। পাণ্ডবেশ্বরের নামোপাড়ার বাসিন্দা অভিজিৎ ঘোষ, কেন্দ্রা গ্রামের বাসিন্দা অর্ধেন্দু পালদের বক্তব্য, “রোদ, বৃষ্টিতে আমাদের লাগোয়া দোকানগুলিতে দাঁড়াতে হয়। সেখানেও অনেক সময় দাঁড়ানোর জায়গা থাকে না।” অথচ, আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় জানান, আসানসোল, রানিগঞ্জ, দুর্গাপুর থেকে এই এলাকায় দৈনিক ৪৪টি মিনিবাস যাতায়াত করে। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী ৭০টি দূরপাল্লার বাস এই এলাকা দিয়েই যাতায়াত করে। প্রতীক্ষালয় না থাকায় সমস্যায় পড়ছেন পরিবহণকর্মীরাও।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরাও। সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়, বিজেপি নেতা দিলীপ দে’-র অভিযোগ, “টাকা খরচ নিয়ে কোনও পরিকল্পনা নেই জেলা পরিষদের। তাই এই হাল।” যদিও, এই অভিযোগে আমল দেননি তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন। তাঁর বক্তব্য, “নানা সময়ে প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হতেই পারে। তা কেটেও যায়। এ নিয়ে বিরোধীদের অপপ্রচারে কান দেওয়ারদরকার নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy