কাটোয়া ফেরিঘাট এলাকায় গোলমাল। নিজস্ব চিত্র।
‘ঘুষ’ নিয়ে বৈধ কাগজ না থাকা লরি যেতে দিলেও আইন মেনে নির্দিষ্ট পরিমাণ বালিবোঝাই ট্রাক আটকে দিচ্ছে পুলিশ— এমনই অভিযোগ জানালেন কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোট ও নদিয়ার কিছু ট্রাক মালিক। মঙ্গলবার কাটোয়ার মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন তাঁরা। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার কথা জানিয়েছে পুলিশ, প্রশাসন।
ওই ট্রাক মালিকদের দাবি, বছর দুয়েক ধরে পুলিশের জুলুম বেড়েছে। ট্রাক পিছু একাধিক বার টাকাও নেওয়া হচ্ছে। নওশাদ আলি শেখ, খুদু শেখ, আলারউদ্দিন শেখদের অভিযোগ, ভিন জেলা থেকে আসা অতিরিক্ত বালিবোঝাই ট্রাক পিছু চারশো টাকা ও চাইছে পুলিশ। টাকা দিলে মিলছে ছবি দেওয়া কার্ড। তাতে গাড়ির নম্বর ও তারিখ লেখা থাকছে। রাস্তায় পরপর পুলিশ ভ্যানে সেই কার্ড দেখাতে হয় বলেও তাঁদের অভিযোগ। হান্নান শেখ, মিঠু শেখরা বলেন, ‘‘আমরা সামান্য ব্যবসা করে খাই। পুলিশের এই কাজের জন্য আমাদের লাভ কম হচ্ছে।’’ টাকা না দিতে চাইলে অতিরিক্ত বালিবোঝাইয়ের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ রুবেল শেখ, সাদ্দাম শেখ, মিলন শেখদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে কাটোয়ার বারোয়ারিতলা এলাকায় পুলিশের বিরুদ্ধে ‘ঘুষ’ নিয়ে ট্রাক নদী পার করানোর অভিযোগ তুলে গোলমালও বাধে। ট্রাক মালিকদের একাংশের অভিযোগ, প্রায় ১৫টা বেআইনি বালির ট্রাক দাঁড়িয়েছিল কাটোয়া ফেরিঘাট এলাকায়। পুলিশ টাকা নিয়ে নদিয়ার বল্লভপুর পাঠাচ্ছিল তাদের। কয়েকটা ট্রাক কিছুক্ষণ আটকেও রাখেন স্থানীয়রা। যদিও পুলিশ রাতের ওই ঘটনার কথা মানতে চায়নি।
পশ্চিমবঙ্গ খনিজ, অবৈধ খনন, পরিবহণ ও সংরক্ষণ প্রতিরোধ নীতি ২০০২ অনুযায়ী, একটি চার চাকার গাড়ি সর্বাধিক ২২০ সিএফটি বালি বহন করতে পারে। তার জন্য ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর থেকে লরির নাম্বার ও অন্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে একটা ছাড়পত্র নিতে হয়। যার মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত। যদিও বাস্তবে ওই ছাড়পত্র ছাড়াই নির্দিষ্ট পরিমাণের থেকে অনেক বেশি বালি বওয়া হয় বলে অভিযোগ।
মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরির আশ্বাস, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের ছাড়পত্র যাদের থাকবে তাদের লরি পুলিশ আটকালে প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের দাবি, এই অভিযোগ মিথ্যা। তবে ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy