বাঁ দিকে, জামালপুরে ও ডান দিকে, গলসির এই রাস্তা নিয়েই ক্ষোভ এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।
‘পথশ্রী’তে নাম উঠেছিল রাস্তার। কাজও শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেই কাজ এতটাই ‘নিম্ন মানের’ যে পুজোর মধ্যেই গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে রাস্তা তৈরি বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ। জামালপুরের বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম মাঠনশীপুরের বাসিন্দাদের দাবি, হাত দিয়ে টানলেই উঠে আসছে পিচ-পাথরের আস্তরণ। কে বলবে নতুন রাস্তা!
গলসির ১ ব্লকের শিল্ল্যা রোডের রাইপুর সেতু থেকে লোয়াপুর পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তাও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে পাকা করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন একাংশ গ্রামবাসী।
রায়নার দেরিয়াপুর থেকে জামালপুরের বেরুগ্রাম পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তাটির জন্য জেলা পরিষদ প্রায় আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। কিন্তু অষ্টমীর দিনই রাস্তার হাল নিয়ে প্রশ্ন তুলে কাজ আটকে দেন এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, সাইকেল গেলেও পিচ উঠে যাচ্ছে। জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ উত্তম সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘খবর পেয়ে জেলা পরিষদের সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। আপাতত কাজ বন্ধ রয়েছে। জেলা ইঞ্জিনিয়ারকে (ডিই) রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।’’
মাঠনশীপুরের বাসিন্দা হারুণ মল্লিক, শেখ সামসুল হুদাদের দাবি, ‘‘কয়েকদিন ধরেই পিচ-পাথর ঢালা হচ্ছে। কিন্তু গাড়ি গেলেই সব উঠে যাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর পথশ্রী প্রকল্পের আওতায় থেকেও রাস্তার এই হাল!’’ জেলা পরিষদের মেন্টর তথা জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর উজ্জ্বল প্রামাণিক বলেন, ‘‘গ্রামবাসীর দাবি ঠিক।’’ সভাধিপতি শম্পা ধাড়ার দাবি, ‘‘রিপোর্ট পাওয়ার পরে, প্রকৃত ঘটনা বোঝা যাবে। বেনিয়ম হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
সম্প্রতি জেলার গ্রামীণ রাস্তা নিয়ে ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠকে অসন্তোষ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাজ দেখতে তড়িঘড়ি মাঠে নামেন কর্তারা। ‘পথশ্রী’ প্রকল্পে জেলায় সাতশো রাস্তার উদ্বোধন হয়। কিন্তু নজরদারির অভাব রয়েছে, অভিযোগ অনেকেরই। মঙ্গলবার গলসির বামুনাড়া, রাইপুরের বাসিন্দাদের একাংশও অভিযোগ করেন, লোয়াপুর থেকে বামুনাড়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ। বামুনাড়া থেকে রাইপুর সেতু পর্যন্ত বাকি দেড় কিলোমিটার অংশে চলছে পিচ দেওয়ার কাজ। কিন্তু ঠিকাদারকে বারবার বলার পরেও ঠিক ভাবে কাজ হচ্ছে না। ওই রাস্তা দিয়ে আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ ও বালি বোঝাই ট্রাকও চলাচল করে, দাবি তাঁদের। এ দিন প্রশাসনের কর্তারা কাজ যাচাই না করলে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।
রাইপুরের বাসিন্দা শেখ সালামউদ্দিন, চন্দন চৌধুরীদের দাবি, ‘‘ঠিকাদার খুব নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরি করছেন। হাঁটা চলাতেই পিচ উঠে যাচ্ছে।’’ গলসি ১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ফজিলা বেগমও বলেন, “ওখানে অত্যন্ত নিম্ন মানের পিচ দিয়ে রাস্তা হচ্ছে। ঠিকাদারকে বিষয়টি জানিয়েছি। তবুও ঠিকাদার একই ভাবে কাজ করছেন।’’ যদিও ঠিকাদার রফিকুল ইসলামের দাবি, ‘‘সরকারি নিয়ম নেমেই কাজ হচ্ছে।’’ বিডিও (গলসি ১) বিনয়কুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে রাস্তা তৈরির অভিযোগ পাইনি। কাজ বন্ধ করার কথাও জানি না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy