Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kanksa

বিক্ষোভে অবরুদ্ধ দুই সড়ক

বিক্ষোভকারীরা অ্যাম্বুল্যান্স-সহ জরুরি পরিষেবার কাজে যুক্ত যানবাহনকে ছাড় দেন, বলে পুলিশ জানিয়েছে।

২ নম্বর জাতীয় সড়কের পানাগড় বাইপাসে তখনও চলছে আদিবাসীদের অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

২ নম্বর জাতীয় সড়কের পানাগড় বাইপাসে তখনও চলছে আদিবাসীদের অবরোধ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২০ ০২:৫৮
Share: Save:

দাবি একটাই। কাঁকসার গোপালপুর পঞ্চায়েতে আদিবাসী যুবকদের মারধরের ঘটনায় সকল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে হবে। এই দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় বিক্ষোভ, অবরোধ চলছেই। ফের একই দাবিতে শুক্রবারও ২ নম্বর জাতীয় সড়ক ও পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন। এর জেরে এ দিন প্রায় তিন ঘণ্টা এই দুই সড়ক অবরুদ্ধ থাকে। অবেশেষে পুলিশের আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তবে বিক্ষোভকারীরা অ্যাম্বুল্যান্স-সহ জরুরি পরিষেবার কাজে যুক্ত যানবাহনকে ছাড় দেন, বলে পুলিশ জানিয়েছে।

আদিবাসী গাঁওতার কাঁকসার আহ্বায়ক সুনীল সোরেনের দাবি, পুলিশ তাঁদের কাছে এক সপ্তাহ সময় নিয়েছে। তার মধ্যে সকল অভিযুক্ত গ্রেফতার না হলে ফের বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এসিপি (কাঁকসা) শাশ্বতী শ্বেতা সামন্ত বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টির তদন্ত চলছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার এলাকার একটি রাস্তা সংস্কারের দাবিতে তৃণমূল পরিচালিত গোপালপুর পঞ্চায়েতে স্মারকলিপি দিতে যান জনা বারো যুবক। অভিযোগ, স্মারকলিপি দিতে গেলে গেট বন্ধ করে দিয়ে ওই যুবকদের ব্যাপক মারধর করা হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ওই দিন এলাকার কয়েকটি আদিবাসী গ্রামের কয়েকশো বাসিন্দা পঞ্চায়েত কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। রাতে মারধরে অভিযুক্ত এক পঞ্চায়েত কর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করলে বিক্ষোভ ওঠে। কিন্তু বাকি অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে কাঁকসা থানার সামনে ফের বিক্ষোভ শুরু হয়। তা গভীর রাত পর্যন্ত চলে। বিক্ষোভকারীদের তরফে পুলিশকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয় অভিযুক্তদের ধরার জন্য।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত কর্মী ছাড়াও, ওই ঘটনায় অভিযোগ হয়েছে প্রধান জয়জিৎ মণ্ডল, কাঁকসা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, তৃণমূলের রমেন মণ্ডল-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে। পরে রমেনবাবু-সহ তিন জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। অন্য দিকে, গোপালপুর পঞ্চায়েতের তরফে কার্যালয়ে ভাঙচুর ও কর্মীদের মারধরের পাল্টা অভিযোগে পাঁচ আদিবাসী যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে। সকলেই এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন।

বিক্ষোভকারী অনিল সোরেন, সুনীল মাড্ডি, লক্ষ্মীরাম বেসরা বলেন, ‘‘পুলিশকে দেওয়া নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু মূল অভিযুক্ত পঞ্চায়েত প্রধানকে এখনও ধরা হয়নি।’’ তাই এ দিন কাঁকসার ডাকবাংলো এলাকা থেকে প্রায় তিন হাজার আদিবাসী মানুষজন মিছিল করে পানাগড় বাজার হয়ে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের পানাগড় বাইপাসে যান। সেখানে কাঁকসা মোড়ে দুপুর দেড়টা থেকে অবরোধ শুরু করেন। প্রত্যেকের হাতেই তির, ধনুক, লাঠি, টাঙি-সহ নানা অস্ত্র ছিল। অবরোধ হয় পাশের হাসপাতাল মোড়ে পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কেও।

এর জেরে সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে দুই রাস্তায়। এ দিন ফের বিক্ষোভের আঁচ করে সকাল থেকেই পুলিশও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করলেও, তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বাকি অভিযুক্তেরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ তুলবেন না। বিকেল সাড়ে ৪টে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। ফোন বন্ধ থাকায় এ দিন চেষ্টা করেও প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এ প্রসঙ্গে কাঁকসার তৃণমূল নেতা দেবদাস বক্সী বলেন, ‘‘অভিযোগ যখন হয়েছে পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kanksa Road Block
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy