জগদানন্দপুর মন্দিরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে পূর্ব বর্ধমান জেলায় পৌঁছেই একশো দিনের কাজ ও আবাস যোজনায় টাকা না দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে গত বিধানসভা ভোটে পূর্ব বর্ধমান জেলায় সব আসনে তৃণমূলকে জেতানোয় মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। বছর দুয়েক আগে বিজেপি নেতা জেপি নড্ডা কাটোয়ায় এসে যে মন্দিরে পুজো দিয়েছিলেন, এ দিন সেখানে পুজো দেন অভিষেকও।
শুক্রবার বিকেল ৪টে নাগাদ বীরভূম থেকে ফুটিসাঁকো হয়ে কেতুগ্রামে ঢোকেন অভিষেক। সেখানে ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যের দুই মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী ও স্বপন দেবনাথ, স্থানীয় বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ-সহ দলের নেতারা। ফুটিসাঁকো থেকে এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে বলতে এগোন অভিষেক। রাস্তায় অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন।
বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ অভিষেক পৌঁছন পাচুন্দির জনসভায়। সেখানে আধ ঘণ্টা বক্তব্য রাখেন তিনি। মাঠে উপচে পড়া ভিড় হয়েছিল। সভার আগে তৃণমূল কর্মীদের টুপি বিতরণে খানিক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।
সভায় অভিষেক বলেন, ‘‘তৃতীয় বার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন, তার মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা যদি কোনও জেলা পালন করে থাকে, তা হল পূর্ব বর্ধমান। ১৬-০ করে আপনারা বহিরাগতদের বিতাড়িত করেছেন। কোনও জেলা পারেনি।’’ একশো দিনের বকেয়া মজুরি ও আবাস যোজনার বরাদ্দ আদায়ে দিল্লি গিয়ে আন্দোলনের ডাকও দেন তিনি।
সভার পরে কাটোয়া শহরে পৌঁছন অভিষেক। বাসস্ট্যান্ডের কাছে নেতাজির মূর্তিতে মাল্যদান করেন তিনি। বিভিন্ন মোড়ে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হয়েছিলেন। সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ তিনি কাটোয়ার জগদানন্দপুরে রাধাগোবিন্দ জিউ মন্দিরে গিয়ে পুজো দেন। ২০২১ সালে এই মন্দিরে এসে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা দাবি করেছিলেন, এই মন্দির শ্রীচৈতন্যদেবের দীক্ষাস্থল। সে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। এ দিন সেখানে পুজো দিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘বিজেপির নেতারা বাংলার ঐতিহ্য-সংস্কৃতি জানেন না। তাই হয়তো ওই কথা বলেছিলেন। মন্দিরে দাঁড়িয়ে কোনও রাজনৈতিক কথা বলব না।’’
সেখান থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ সিঙ্গি গ্রামে পৌঁছন অভিষেক। সেখানে কাশীরাম দাসের মূর্তিতে মাল্যদান করার কথা ছিল। অনেক মানুষ জড়োও হয়েছিলেন। অভিষেক সেখানে গাড়ি থেকে নামলেও মাল্যদান করেননি। অল্প কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়ে গাড়িতে উঠে পূর্বস্থলীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
রাত ৮টা নাগাদ পারুলিয়ায় পৌঁছন অভিষেক। সেখানে অনেক তৃণমূল কর্মী-সমর্থক জড়ো হন। পূর্বস্থলী উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় অভিষেককে স্বাগত জানান। পারুলিয়া বাজারে রোড-শো করেন। ভাল ভিড় জমে। রোড-শোয়ের পরে সাড়ে ৮টা নাগাদ সেখান থেকে পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুরে ইউনাইটেড হাইস্কুলের মাঠে পৌঁছন। সেখানে দফায়-দফায় তাঁর সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা।
পরে জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভোটাভুটিতে যাতে কোনও অশান্তি না হয়, তা দেখতে বলেছেন অভিষেক। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের মতকে প্রাধান্য দিতে বলেছেন।’’
বিজেপির জেলা (কাটোয়া সাংগঠনিক) সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এই কর্মসূচিতে কোনও জোয়ার নেই, ভাটা। তৃণমূলের সরকার টাকার হিসাব দিতে না পারায় কেন্দ্র টাকা পাঠাতে পারছে না। চুরি ঢাকতে এখন এ সব কথাবলছেন ওঁরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy