একটি হাত ভাঙা। ভিজে গেঞ্জি আর গামছা জড়িয়ে একাকী বছর এগারোর এক বালক কেঁদেই চলেছে ট্রেনের কামরায়। তাকে এই অবস্থায় দেখে নিজেকে সামলাতে পারেননি গুসকরার বাসিন্দা দিনমজুর অশোক সাহানি। তার সঙ্গে কথা বলে অশোক জানতে পারেন, মারধর করে তাকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন তার সৎ মা। তাঁরই উদ্যোগে ওই নাবালক এখন জেলা চাইল্ড লাইনের হেফাজতে।
গুসকরা পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অশোক জানান, বুধবার তিনি বীরভূমের রামপুরহাট থেকে কাজ সেরে ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলেন। গদাধরপুরের কাছে ট্রেনের কামরায় জটলা দেখে এগিয়ে যান তিনি। তাঁর কথায়, “গিয়ে দেখি কান্নাকাটি করছে একটি ছেলে। গায়ে ভিজে গেঞ্জির উপরে গামছা জড়ানো। ছেলেটি কাঁপছিল। কথা বলে জানতে পারি, ওর বাড়ি ঝাড়খণ্ডে।’’ অশোকের দাবি, ‘‘ছেলেটি জানিয়েছে, বাড়িতে সৎ মা ওকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্র দিনে স্কুলের খাবার খেত। রাতে কিছু খেতে দিতেন না সৎ মা। মেরে ওর একটি হাতও ভেঙে দেন তিনি। কয়েকদিন আগে ছেলেটির বাবা পঞ্জাবে কাজ করতে যান। তার পরেই মায়ের অত্যাচার বাড়ে। একদিন ব্যাগে দু’তিনটি প্যান্ট আর জামা দিয়ে ওকে বাড়ি থেকে বার করে দেন সৎ মা।”
অশোক ছেলেটিকে নিয়ে গুসকরা স্টেশনে নামেন। বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাকে স্নান করান। ভাল পোশাক দেন তাকে। অশোক বলেন, “এ দিন পরিবারের সকলের খাওয়ার নিমন্ত্রণ ছিল একটি বাড়িতে। ছেলেটিকে সেখানে খাওয়াতে নিয়ে যাই। ফেরার পরে পুরো ঘটনা জানাই স্থানীয় কাউন্সিলর সুমন্ত ঘোষকে।” সুমন্ত বলেন, “পুরপ্রধানের পরামর্শে ঘটনাটি গুসকরা ফাঁড়িতে জানানো হয়।” গুসকরার পুরপ্রধান কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, “অশোক মানবিকতার নজির তৈরি করেছেন। ওঁকে ধন্যবাদ জানাই।’’ গুসকরা ফাঁড়ির ওসি নীতু সিংহ বলেন, ‘‘ছেলেটিকে চাইল্ড লাইনের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।’’ চাইল্ড লাইনের পূর্ব বর্ধমানের জেলা কো-অর্ডিনেটর অভিজিৎ চৌবে বলেন, “ছেলেটির পরিবারের খোঁজ করা হবে। শিশু সুরক্ষা কমিটির নির্দেশে ওকে বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy