Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Katwa

Lost and found: নিখোঁজ পরিচিতের হঠাৎ সন্ধান ভিন্‌ রাজ্যের ট্রেনে

গত ২৭ জুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভা থেকে কাটোয়া ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন ৪৯ বছরের ফিরোজ।

বাবার সঙ্গে ফিরোজ। নিজস্ব চিত্র

বাবার সঙ্গে ফিরোজ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২২ ০৭:৩৫
Share: Save:

মুম্বই থেকে ট্রেনে করে হাওড়া ফিরছিলেন কাটোয়া শহরের কেশিয়ার কালো শেখ। ট্রেনেই এক ব্যক্তিকে শৌচাগারের দরজার সামনে ঘুমন্ত অবস্থায় বসে থাকতে দেখে তাঁর মনে খটকা লাগে। চেহারাটা চেনাও মনে হয়। মোবাইল বার করে সামাজিক মাধ্যমে তিনি খোঁজ পান, ওই ব্যক্তি কাটোয়া শহর লাগোয়া হরিপুর গ্রামের ফিরোজ শেখ। বেশ কিছু দিন ধরেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। নাগপুর থেকে ফিরোজকে আগলে প্রথমে হাওড়া, তারপরে কাটোয়া স্টেশনে নিয়ে আসেন কালো। প্রায় দেড় মাস বাদে বৃস্পতিবার রাতে বাড়ি পৌঁছন ফিরোজ।

শুক্রবার ফিরোজের বাবা ফজলে বারি বলেন, ‘‘গত দেড় মাসের বেশি ছেলের খোঁজে নানা জায়গায় ছুটেছি। খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আল্লার দূত হয়ে কেশিয়ার কালো আমাদের বোবা-কালা ছেলেকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে গিয়েছেন।’’

গত ২৭ জুন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভা থেকে কাটোয়া ফেরার পথে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন ৪৯ বছরের ফিরোজ। তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী ও বধির। তারপর থেকেই ফিরোজের বাবা প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় ছেলেকে খুঁজে দেওয়ার দরবার করেছেন। সংবাদমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যমে ছবি, নিখোঁজের পোস্টার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ছেলের কোনও খোঁজই পাচ্ছিলেন না তাঁরা। তার মধ্যেই আচমকা ফিরোজকে ফিরিয়ে দিলেন কেশিয়ার ওই যুবক।

কেশিয়ার নূরপাড়ার কালো শেখ মাঝেমধ্যেই পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে মুম্বই কাজে যান। মঙ্গলবার মুম্বই থেকে ট্রেনে হাওড়া আসছিলেন তিনি। বুধবার নাগপুর স্টেশনে নামার আগে তাঁর চোখে পড়েন ফিরোজ। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘ফিরোজকে চোখে পড়তেই চেনা লাগে। মোবাইল বার করে সমাজমাধ্যম থেকে ছবি দেখে নিশ্চিত হই। ফিরোজও আমাকে চিনতে পারে। আমাকে জড়িয়ে কাঁদতে শুরু করে।’’ বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কের এক দিকে কেশিয়া, আর এক দিকে হরিপুর। এলাকার সবাই ফিরোজকে চেনেন। কালোর দাবি, ‘‘হাতের ইশারায় ফিরোজ জানান, তাঁর খিদে পেয়েছে, তেষ্টা পেয়েছে। আমি খাবার-জল দিয়ে, সারা রাস্তা আগলে নিয়ে এসেছি। একেবারে কাটোয়া স্টেশনে পৌঁছে পাড়ার ছেলেদেরকে ডাকি। তাঁদের মোটরবাইকে চেপে ফিরোজকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়।’’

কিন্তু কী ভাবে ওই ট্রেনে পৌঁছলেন ফিরোজ? ফজলে বারির দাবি, ‘‘ইশারায় ছেলে বুঝিয়েছে, বর্ধমান থেকে বিভিন্ন ট্রেনে ঘুরতে ঘুরতে মুম্বই চলে গিয়েছিল। সেখান থেকেই আবার ট্রেনে চাপে। ওর সঙ্গে থাকা জামা, ৫০০ টাকা, মোবাইল চুরি হয়ে গিয়েছে বলেও জানিয়েছে। কালোর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’’ বছর বত্রিশের কালো বলেন, ‘‘ত্রিপলে ঘেরা বাড়িতে আমি আর মা থাকি। কাজের খোঁজে দেশের সব জায়গায় বাবার কাছে ছেলেকে ফিরিয়ে দিতে পেরে খুব আনন্দ পেয়েছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Katwa migrant labour mumbai Lost and found
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy