Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Endangered

Endangered Insects: অবলুপ্ত হওয়ার পথে পতঙ্গ-প্রাণীর দেহ, সংরক্ষণে স্বীকৃতি কৃষিজীবীর ছেলেকে

দার্জিলিং হিল ইউনিভার্সিটি থেকে গণিতে স্নাতকোত্তর পাঠরত তরুণের বাবা নিত্যানন্দ পাল পেশায় ভাগচাষি।

তরুণ পাল।

তরুণ পাল। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খণ্ডঘোষ শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২২ ০৩:৩৫
Share: Save:

অবলুপ্ত হওয়ার পথে বহু পতঙ্গ ও প্রাণীর দেহ সংরক্ষণ করে স্বীকৃতি পেয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের এক কৃষিজীবী ছেলে। জাতীয়স্তরের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মহল থেকেও তরুণ পালের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে।

উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনার সময় থেকেই বিভিন্ন প্রাণী ও কীটপতঙ্গের দেহ সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগী হন খণ্ডঘোষের বোঁয়াইচণ্ডী গ্রামের বাসিন্দা তরুণ। এই কাজেরই স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পেয়েছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকস্তরের নানা পুরস্কার ও মানপত্র। তরুণের দাবি, ‘‘বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার পরেও সংরক্ষিত প্রাণী ও পতঙ্গের দেহগুলি দেখে তাদের বিষয়ে জানতে পারবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।’’

দার্জিলিং হিল ইউনিভার্সিটি থেকে গণিতে স্নাতকোত্তর পাঠরত তরুণের বাবা নিত্যানন্দ পাল পেশায় ভাগচাষি। সংসারের কাজে ব্যস্ত থাকে মা ঝর্ণা পাল। বোন মনীষা পাল স্নাতকস্তরে ছাত্রী। তাঁরা জানান, গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়ই বিভিন্ন পতঙ্গ, প্রাণী ও উদ্ভিদের বিষয়ে জানার আগ্রহ ছিল তরুণের। সে সময় থেকেই সেগুলির সম্পর্কে খোঁজখবর চলত তাঁর। হাইস্কুলে বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনার সময় তরুণ জানতে পারেন, নগরায়ন, বনাঞ্চল ধ্বংস বিনাশ, প্লাস্টিকের ব্যবহার-সহ নানা কারণেই ধীরে ধীরে বহু প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। সে সময় থেকেই পতঙ্গ-প্রাণীর দেহ সংরক্ষণের কাজ শুরু হয় তাঁর। তরুণ বলেন, ‘‘একটি মৃত খরগোশের দেহ প্রথম সংরক্ষণ করেছিলাম। স্কুলের পড়ার সময় ল্যাবরেটরিতে ছুরি-কাঁচির ব্যবহার শেখাটা কাজে এসেছিল। ছুরি-কাঁচি দিয়ে মৃত খরগোশের দেহ থেকে নাড়িভুঁড়ি ও অন্যান্য অংশ কেটে বার করি। এর পর নিজস্ব পদ্ধতিতে তৈরি ‘ফরমালিন’ মেশানো নুনজলে ওই খরগোশের দেহ ৭-৮ ঘণ্টা চুবিয়ে রাখার পর সেটিকে শুকিয়ে নিই। এর পর সেটি অক্সিজেনবিহীন কাচের জারে ভরে বন্ধ করে রেখে দিয়েছি। পাঁচ-ছ’বছর হয়ে গেল ওই কাচের জারে মৃত খরগোশটি অক্ষত রয়েছে। পচনও ধরেনি। একই পদ্ধতিতে ফিতাকৃমি, ব্যাঙাচি, সাপের বাচ্চা, বেজি, গিরগিটি, তেঁতুল বিছে, মথ, রাতপাখি, ইঁদুরের ভ্রুণ এবং শিবলিঙ্গ ফুল সংরক্ষণ করে বাড়িতে রেখেছি।’’

তরুণের এই কাজের স্বীকৃতি পেয়েছেন হোপ ইন্টারন্যাশানাল, ইন্ডিয়ান, স্টেট ও স্টার বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এর থেকে। ইতিমধ্যেই ওয়ার্ল্ডওয়াইড রেকর্ডস, ডিসকভার ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস, ওয়ার্ল্ড’স গ্রেটেস্ট রেকর্ডস, ইন্ডিয়া’স ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-সহ ১৭টি সংস্থার স্বীকৃতি ও পুরস্কার লাভ করেছেন তরুণ।

ছেলের কাজে গর্বিত নিত্যানন্দ এবং ঝর্ণা। নিত্যানন্দ বলেন, ‘‘প্রথমে কিছুই বুঝতাম না, কেন ছেলে বাড়িতে মরা প্রাণী ও পতঙ্গ নিয়ে আসত। ধীরে ধীরে বুঝতে পারি, ছেলের ভাবনার গভীরতা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Endangered Khandaghosh insects
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy