প্রতীকী ছবি।
চিকিৎসায় ‘গাফিলতিতে’ মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কসের (সিএলডব্লিউ) কস্তুরবা গাঁধী হাসপাতালে। ওই ঘটনায় হাসপাতালের তদন্ত রিপোর্টে তিন চিকিৎসক, এক নার্স এবং এক স্বাস্থ্যকর্মীকে (‘ব্রাদার’) দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তদন্ত শেষের পরে, শনিবার কর্তৃপক্ষ জানান, কেন তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ওই পাঁচ জনকে নোটিস (‘চার্জশিট’) দেওয়া হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর গাফিলতির অভিযোগ ওঠার পরেই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়। শনিবার বিকেলে ওই কমিটি তদন্ত রিপোর্ট জমা করে। সেখানেই ওই পাঁচ জনের কর্তব্যে গাফিলতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্ত চলাকালীন ১১ জন চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীর পাশাপাশি, ঘটনার সময়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দু’জন রোগী এবং মৃতের পরিবারের সদস্যদের বয়ান রেকর্ড করা হয়।
এ দিকে, তদন্ত-রিপোর্টে দোষী সাব্যস্ত চিকিৎসকদের মধ্যে রয়েছেন অস্থি বিশেষজ্ঞ শ্রবণ কুমার। রবিবার সকালে তিনি ফোনে বলেন, “তদন্ত রিপোর্টের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। গত ৭ অক্টোবর চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।” বাকিদের প্রতিক্রিয়া মেলেনি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তদন্ত রিপোর্টে দোষী সাব্যস্তদের মধ্যে শ্রবণ এবং এক চিকিৎসক চুক্তির ভিত্তিতে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। বাকিরা স্থায়ী কর্মী। গত ১২ সেপ্টেম্বর কয়েকজন চিকিৎসক, এক নার্স ও এক স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে গাফিলতির কারণে তাঁর মেয়ে, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্রী স্নেহা সাহাচৌধুরী (২৩) মৃত্যু হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন কারখানারই সেকশন ইঞ্জিনিয়ার তপন সাহাচৌধুরী। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পেটে অসহ্য যন্ত্রণা হওয়ায় গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে স্নেহাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ১০ সেপ্টেম্বর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় স্নেহার মা স্বপ্না কর্তব্যরত নার্সকে চিকিৎসককে ডাকার জন্য অনুরোধ করেন বলে দাবি। অভিযোগ, বার বার অনুরোধ জানিয়েও লাভ হয়নি। ১১ সেপ্টেম্বর রোগীর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক স্নেহাকে দ্রুত অন্যত্র স্থানান্তরের জন্য বলেন। এর পরে, দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্নেহাকে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা।
তবে, বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত চিফ মেডিক্যাল অফিসার (সিএমও) অভিজিৎ সাঁতরা। রবিবার মৃতার বাবা তপন বলেন, “ওই পাঁচ জনের চরম শাস্তি হওয়া দরকার। ওঁরা যেন, ভবিষ্যতে আর কখনও কোনও ক্ষেত্রে কর্তব্যে গাফিলতি না করতে পারেন।” তদন্ত-রিপোর্টকে স্বাগত জানিয়েছেন কারখানার লেবার ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজীব গুপ্ত। তিনি বলেন, “তদন্ত শেষে পাঁচ জনকে দোষী সাব্যস্ত করার বিষয়টি অভিনন্দনযোগ্য। আমাদের দাবি, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে ওঁদের। ওই চিকিৎসকদের লাইসেন্স বাতিলের জন্য সুপারিশ করতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy