Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪
Jamalpur kangaroo court

জামালপুরের সালিশিকাণ্ডে জামিন পেয়ে গেলেন ১২ অভিযুক্তই! খুশি নয় পরিবার

পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে সালিশি সভায় হাজির না হওয়ায় বৃদ্ধ এক দম্পতি ও তাঁর ছেলেকে মারধরের অভিযোগে ১২ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করেছিল পুলিশ।

—ফাইল চিত্র

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৪ ১৮:৫০
Share: Save:

সালিশিকাণ্ডে বাড়িতে নোটিস পাঠানোর পর দিনই আদালত থেকে জামিন পেয়ে গেলেন অভিযুক্তেরা। জামিনের বিরোধিতাও করলেন না সরকারি আইনজীবী! এতেই অভিযোগকারী পরিবারের প্রশ্ন, এর পর মূল অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা আজাদ রহমানের বিরুদ্ধে আর পদক্ষেপ করবে পুলিশ? শাসকদলের লোক বলেই কি রেহাই, উঠছে সেই প্রশ্ন।

পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে সালিশি সভায় হাজির না হওয়ায় বৃদ্ধ এক দম্পতি ও তাঁর ছেলেকে মারধরের অভিযোগে ১২ জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু করেছিল পুলিশ। তাঁদের সমনও পাঠানও হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, সমন পাওয়ার পরেই অভিযুক্তেরা থানায় যান। পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। এর পর রবিবার বর্ধমান আদালতে গিয়ে তাঁরা জামিন নিয়েছেন। জামালপুর থানার এক অফিসার বলেন, ‘‘আমরা মামলা রজু করে অভিযুক্তদের বাড়িতে সমন পাঠাই। কারণ মামলায় অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ সাজার মেয়াদ সাত বছর। সেই জন্য আইন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বাড়িতে সমন পাঠানো হয় থানার পক্ষ থেকে। তার পর শনিবার অভিযুক্তেরা আদালত থেকে জামিন নিয়েছে।’’

আদালত সূত্রেও খবর, অভিযুক্তদের আইনজীবী বিচারককে জানিয়েছিলেন, তাঁদের মক্কেলরা তদন্তে সহযোগিতা করছেন। তাই তাঁদের জামিন দেওয়া হোক। সরকারি আইনজীবীও অবশ্য জামিনের বিরোধিতা করেননি। পরে সরকারি আইনজীবী নারদকুমার ভুঁইঞার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এই মামলা বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।’’

বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর, খুনের হুমকি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিয়ে গত ২৫ জুন পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন জামালপুর থানার চকদিঘি অঞ্চলের কুবাজপুর গ্রামের সাহানারা বিবি। সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে ছিলেন ওই বৃদ্ধা। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ১২ জনের নামে এফআইআর রুজু করে তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। আদালতের বিচারাধীন বিষয় নিয়ে সালিশি সভার ডাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল জামালপুরের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি আজাদ রহমানের বিরুদ্ধে। তাঁর নামে এফআইআর না-হওয়াতেও প্রশ্নের মুখে পড়েছিল পুলিশের ভূমিকা। পুলিশেরও ব্যাখ্যা, সাহানারা ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তাই শুধু তাঁদের বিরুদ্ধেই এফআইআর হয়েছে। তদন্তে যদি দেখা যায়, ঘটনায় সঙ্গে আজাদের যোগ ছিল, তা হলে নিশ্চয়ই তাঁর নামও এফআইআরে যুক্ত হবে। এখন প্রশ্ন উঠছে, যাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হল, তাঁরাই ছাড়া পেয়ে যাওয়ায় আজাদের বিরুদ্ধে কি আর কোনও পদক্ষেপ করবে পুলিশ? অভিযোগকারী পরিবার মনে করছে, এর পর পুলিশ আজাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করলেও সেই একই ঘটনা ঘটবে। আজাদও তদন্তে সহযোগিতার নামে আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসবেন।

আজাদ অবশ্য শুক্রবারই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আদালতে যে মামলা চলছে, তার জন্য কেউ সালিশি ডাকে না। আমাদের এলাকায় এ সব হয় না। পারিবারিক বিবাদের ঘটনায় মিথ্যা আমার নাম জড়ানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE