ডেয়ারিতে বিশ্বকর্মা পুজো।
প্রায় বারো বছর পরে আবার নবাবহাটি এলাকার বর্ধমান ডেয়ারিতে হওয়া বিশ্বকর্মা পুজোকে কেন্দ্র করে উৎসবে মাতলেন এলাকার মানুষ। ২০০২ সালে আর্থিক লোকসানের জেরে বন্ধ হয়ে যায় ওই কারখানাটি। পরে এ বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি মাদার ডেয়ারি তার একটি শাখা তৈরি করে ওই কারখানায়।
জেলা জুড়ে এক সময় বিশ্বকর্মা পুজোর ধুম দেখে মনে হত দুর্গা পুজোর মহড়া চলছে। কিন্তু বিগত কয়েক দশকের মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে দুর্গাপুর ইস্পাত, মিশ্র ইস্পাত কারখানা, এমএএমসি, ফিলিপ্স কার্বন ব্ল্যাক, আসানসোলের কাঁচ কারখানার মতো কারখানা। ইসিএলের বিভিন্ন খনিতেও উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশ্বকর্মা পুজোর জৌলুসও অনেকটাই ফিকে।
এই পরিস্থিতিতে মাদার ডেয়ারির উদ্যোগে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন এলাকাবাসী। মাদার ডেয়ারি সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানের ওই কারখানায় হাজার পাঁচেক দুধের প্যাকেট তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আপাতত উৎপাদন হচ্ছে ৩ হাজার প্যাকেট। প্যাকেটগুলি বিক্রি করার জন্য শহর জুড়ে নতুন দোকান তৈরির কাজও শুরু হয়েছে বলে সংস্থার দাবি।
১৯৮৩ সালে বর্ধমান ডেয়ারি কারখানা শুরু হওয়ার সময় ১৪৩ জন কর্মী কাজ করতেন। আপাতত ২৮ জন কর্মীকে পুনর্নিয়োগ করা হয়েছে বলে কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে। মাদার ডেয়ারির বর্ধমান শাখার স্পেশ্যাল ডিউটি আধিকারিক মলয়কুমার রায় জানান, নতুন শাখা তৈরিতে রাজ্যের প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও বিশেষ উদ্যোগ করেন। আগামী দিনে ওই শাখাটিকে কেন্দ্র করে মাদার ডেয়ারির বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। তাঁর দাবি, শহর জুড়ে মাদার ডেয়ারির বিক্রিও ভাল হচ্ছে। নতুন দোকানগুলির কাজ শেষ হলে বিক্রি আরও বাড়বে বলে তাঁর আশা। নতুন শাখা তৈরির সঙ্গে সঙ্গে পুরনো বিশ্বকর্মা পুজোর জৌলুসকেও ফিরিয়ে আনতে চেয়েছেন কারখানার আধিকারিকেরা। কারণ, মলয়বাবুর কথায়, “আমাদের যন্ত্র নিয়েই কারবার। তাই কর্মীরা বিশ্বকর্মা পুজো করতে অনুরোধ করেন। সেই অনুরোধের জন্যই পুজোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়।” কারখানার শ্রমিকদের সূত্রে জানা গেল, মূলত তাঁরাই চাঁদা তুলে পুজোর আয়োজন করেছিলেন।
বুধবার বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ওই কারখানায় গিয়ে দেখা গেল, মণ্ডপ সাজানোয় শ্রমিকদের সঙ্গে হাত লাগিয়েছেন পুজোয় নিমন্ত্রিত বর্ধমান ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ফাল্গুনী রজকও। কারখানার এই পুজোর সঙ্গে তাঁর অনেক পুরনো স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে বলে জানান ফাল্গুনীবাবু। মণ্ড সাজাতে সাজাতেই কারখানার আধিকারিক গৌতম মুখোপাধ্যায় বলেন, “নতুন করে পুজো শুরু হওয়ায় এলাকার মানুষ খুুশি। তাঁদের আনন্দের শরিক হতে পেরে ভাল লাগছে।”
যদিও দীর্ঘদিন পর পুজো শুরু হওয়ায় জৌলুস খানিকটা কম। কিন্তু ইউনিট কর্তৃপক্ষ কথা দিচ্ছেন, পরের বার আরও বড় করে পুজো করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy