অনুপম সিংহ (ডান দিকে) হত্যাকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত মুনয়া ও অজিত। —ফাইল চিত্র
প্রেমিককে দিয়ে স্বামীকে নৃশংস খুন। শুধু তাই নয়, খুনের সময় প্রেমিকের ফোনে স্বামীর মৃত্যুকালীন আর্তনাদ শুনেছিল মনুয়া মজুমদার (সিংহ)। বছর দুয়েক আগে তোলপাড় ফেলে দেওয়া অনুপম সিংহ হত্যাকাণ্ডে রায় দিল বারাসত আদালত। অনুপমের স্ত্রী মনুয়া সিংহ এবং তার প্রেমিক অজিত রায় ওরফে বুবাইকে দোষী সাব্যস্ত করল বারাসত আদালতের ৪ নম্বর ফাস্ট ট্র্যাক আদালত। সাজা ঘোষণা আগামিকাল শুক্রবার।
গত ১৫ জুলাই রায়দানের কথা থাকলেও পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়ায় তা পিছিয়ে যায়। বারাসত আদালতের ৪ নম্বর ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক বৈষ্ণব সরকার ওই দিন জানিয়েছিলেন, ২৫ জুলাই রায়দান হতে পারে। সেই মতো এ দিন মনুয়া ও অজিতকে এই খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। আইনজীবীদের একাংশের মতে, ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করার অর্থ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে। ফাঁসির সাজার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে আইনজীবীদের একটি অংশের মত।
২০১৭ সালের ২ মে রাতে বারাসতের হৃদয়পুরে নিজের বাড়িতেই খুন হন একটি বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় সংস্থায় কর্মরত অুপম সিংহ। পরের দিন দেহ উদ্ধার করে তদন্তে নামে পুলিশ। খুনের ১৩ দিনের মাথায় প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে বারাসত থেকে মনুয়া মজুমদার (সিংহ) এবং তার প্রেমিক অজিতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, অজিতের সঙ্গে মনুয়ার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই অনুপমকে নৃশংস ভাবে খুন করে অজিত।
তদন্তে উঠে আসে, অনুপমের মাথায় ভারী অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছিল। খুনের দিন তাঁর স্ত্রী মনুয়া বাপেরবাড়িতে থাকলেও ঘটনার সময় প্রেমিক অজিতের মোবাইলে ফোন করে অনুপমের আর্তনাদ শুনেছিল। তদন্তকারীরা এ-ও জানতে পারেন, খুনের ঘটনার দিন অর্থাৎ ২ মে দুপুরে ওই বাড়িতে গিয়েছিল মনুয়া ও তার প্রেমিক অজিত। পরে মনুয়া বাপেরবাড়ি ফিরে গেলেও অজিত ওই বাড়িতেই লুকিয়ে ছিল। অনুপম আসতেই তাকে আক্রমণ করে অজিত। লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা থেঁতলে খুন করা হয় অনুপমকে।
স্বামী অনুপমের সিংহর সঙ্গে মনুয়া মজুমদার (সিংহ)। —ফাইল চিত্র
আরও পড়ুন: বাসে জানলার বাইরে যাত্রীর হাত, পিলারে ধাক্কা লেগে কেটে পড়ল কলকাতার রাস্তায়
আরও পডু়ন: রাতের কলকাতায় ফের হেনস্থার শিকার টলি অভিনেতা, নিগ্রহ করা হল তাঁর বান্ধবীকেও
তদন্তের জাল গুটিয়ে হত্যা-কাণ্ডের ৮৬ দিন পরে চার্জশিট জমা দেয় বারাসাত থানার পুলিশ।ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ফরেনসিক রিপোর্ট, ফোনের কল ডিটেলস-সহ যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ চার্জশিটের সঙ্গে দেওয়া হয়। আনা হয় ৩০২ ধারায় খুন, ১২০বি ধারায় ষড়যন্ত্র, ২০১ ধারায় প্রমাণ লোপাটের মতো ধারা। পুরো মামলায় মোট ৩১ জন সাক্ষী দেন। ৪৭৮ পাতার চার্জশিটের সঙ্গে যুক্ত হয় অতিরিক্ত চার্জশিটও। সব মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার থেকে দু’হাজার পাতার নথিপত্র পরীক্ষা, সাক্ষীদের বয়ান, সরকারি ও অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীদের দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার মনুয়া ও অজিতকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক বৈষ্ণব সরকার।
অনুপমের পরিবার ও বন্ধুরা বারবারই দু’জনের ফাঁসির শাস্তি দাবি করেছেন। এ দিনও বারাসত আদালতে ছিলেন তাঁরা। বিচারক দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ফের মৃত্যুদণ্ডের সাজাই চেয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy